ব্যাঙ্ক-ডাকঘরে স্বল্প সঞ্চয় – ভারতসেরা বাংলা

দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে উত্তরপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্র।

July 6, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

স্বল্প সঞ্চয়ে ফের দেশের সেরা পশ্চিমবঙ্গ। এই নিয়ে টানা পাঁচবার। গত ২০১৯-’২০ আর্থিক বছরে দেশজুড়ে সরকারি প্রকল্পে সাধারণ মানুষের সঞ্চয়ের যে ছবি সামনে এসেছে, তাতে সেরার শিরোপা পেয়েছে বাংলা। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে উত্তরপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্র।

সরকারি ক্ষেত্রে সরাসরি টাকা রাখার জন্য আগে সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসা ছিল পোস্ট অফিস। সেখানে রেকারিং ডিপোজিট, মান্থলি ইনকাম স্কিম, এক থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত ফিক্সড ডিপোজিট, পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড, সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা, সিনিয়র সিটিজেন স্কিম প্রভৃতি প্রকল্পে টাকা রাখতে পারতেন সাধারণ মানুষ। পরে অর্থমন্ত্রক ঠিক করে, ব্যাঙ্কের মাধ্যমেও সরকারিভাবে এই সঞ্চয় প্রকল্পগুলিতে টাকা রাখা যাবে। সরকারি স্কিমে টাকা রাখলে ডাকঘর এবং ব্যাঙ্ক, দুই প্রতিষ্ঠানেই একই সুদ মিলবে। এর সঙ্গে অবশ্য ব্যাঙ্কের নিজস্ব স্কিমের কোনও সম্পর্ক নেই। মন্ত্রকের অধীনস্থ ন্যাশনাল সেভিংস ইনস্টিটিউটের একটি সূত্র কিন্তু বলছে, ব্যাঙ্কের তুলনায় পোস্ট অফিসের সেভিংস স্কিম এখনও অনেক বেশি জনপ্রিয়। দেশের স্বল্প সঞ্চয় সংক্রান্ত হিসেব রাখা ও নির্দেশিকা জারির অধিকাংশ দায়িত্ব পালন করে এই সংস্থা।

মন্ত্রকের রিপোর্ট বলছে, গত আর্থিক বছরে সারা দেশে স্বল্প সঞ্চয় বাবদ আদায় হয়েছে প্রায় ৮ লক্ষ ৩১ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু পশ্চিমবঙ্গ থেকেই এসেছে প্রায় ১লক্ষ ১৭ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা। ১ লক্ষ ৩ হাজার ২৩৩ কোটি টাকা ডাকঘরে বিনিয়োগ হয়েছে। বাকি ১৪ হাজার ২২৩ কোটি টাকা জমা পড়েছে ব্যাঙ্কে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা উত্তরপ্রদেশে মোট আদায় হয়েছে ৯২ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। বিভিন্ন প্রকল্পে জমা আমানতের মধ্যে যেগুলির মেয়াদ গত আর্থিক বছরে উত্তীর্ণ হয়েছে, সেই টাকা গ্রাহককে ফিরিয়ে দিয়েছে সরকার। তারপরও কেন্দ্রের ঘরে নিট জমা পড়েছে প্রায় ২ লক্ষ ৬৮ হাজার ২২৫ কোটি টাকা। এই অঙ্কেও দেশে একনম্বরে পশ্চিমবঙ্গ। এরাজ্যে নিট জমার পরিমাণ ৩৩ হাজার ৪২২ কোটি টাকা। উত্তরপ্রদেশে এর পরিমাণ ২৫ হাজার ৫৩৭ কোটি টাকা।

পশ্চিমবঙ্গ শীর্ষে থাকার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরাজ্যের সাধারণ মানুষ নিজের রোজগারের টাকা জমানোর ক্ষেত্রে ঝুঁকি এড়িয়ে চলতে পছন্দ করছেন। চলতি আর্থিক বছরে করোনার কারণে দেশজুড়ে অর্থনীতির দফারফা শুরু হয়েছে। কিন্তু গত অর্থবর্ষেও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোটেই ভালো যায়নি। ফলে সাধারণ মানুষ ভরসা রেখেছিলেন সরকারি স্কিমগুলিতেই। এদিকে, শিল্পের গতি বাড়াতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বারবার ঋণের উপর সুদের হার কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে। দফায়-দফায় কমানো হয়েছে রেপো রেট। কিন্তু ব্যাঙ্কগুলির যুক্তি ছিল, যদি আমানতের সুদের হার বেড়ে থাকে, তাহলে ঋণের উপর সুদের হার কমানো কঠিন। কেন্দ্র যদি স্বল্প সঞ্চয়ের উপর সুদের হার না কমায়, তাহলে প্রতিযোগিতার বাজারে ব্যাঙ্কগুলিও আমানতের সুদের হার কমাতে পারবে না। এরপরে স্বল্প সঞ্চয়ে দফায়-দফায় সুদের হার কমায় কেন্দ্র। কিন্তু মানুষের ভরসা কমেনি। অর্থমন্ত্রকের হিসেব বলছে, অন্যান্য রাজ্যও ভালো ফলাফল করেছে স্বল্প সঞ্চয়ে। ওয়েস্ট বেঙ্গল স্মল সেভিংস এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাস বলেন, কমিশন কমানো থেকে শুরু করে সরকার নানাভাবে এজেন্টদের বিপাকে ফেলছে। তা না হলে পরিস্থিতি আরও উজ্জ্বল হতে পারত। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen