মমতা মডেলে সস্তায় সর্বজনীন খাদ্য হতে পারে ২০২৪-এ বিজেপির ভোটের অস্ত্র? জল্পনা
ক্যাবিনেট নোটে মন্ত্রক থেকে জানানো হয়েছে নীতি আয়োগের সুপারিশে প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবার মন্ত্রিসভার সিলমোহর পড়লেই সস্তায় সর্বজনীন খাদ্যই কী হতে পারে ভোটারের মন জয়ে বিজেপির অস্ত্র?

পশ্চিমবঙ্গে খাদ্য সুরক্ষা যোজনা (এনএফএস) -১ এবং ২ চালু হয়েছিল জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতার বাইরে থাকা নাগরিকদের জন্য। এনএফএসএ’র অধীনে পশ্চিমবঙ্গে ৫ কোটি ৯৮ লক্ষ ৫ হাজার ৯৭৬ জন চাল-গম পেয়ে থাকেন, বলছে সরকারি হিসেব। এছাড়াও, রাজ্য সরকার নন-এনএফএসএ ২ কোটি ৯৪ লক্ষ ৭১ হাজার ২৬৭ জনকে সস্তায় খাদ্যশস্য দেয়। কোভিড পর্বে ২০২০ সালে রাজ্যের এই প্রকল্পের মধ্যে দিয়ে রাজ্যের সব বাসিন্দাকে বিনামূল্যে রেশন দিচ্ছে সরকার। সেপ্টেম্বর মাসের পর কেন্দ্র বিনামূল্যে রেশন প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা করলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যে এই প্রকল্প চলবে আগের মতোই, নাগরিকরা বিনামূল্যেই চাল-গম পাবেন।
২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Election 2024) ভোটারদের মন জয়ে মমতার এই মডেলই ভরসা রাখতে পারে গেরুয়া শিবির। সেরকম ইঙ্গিতই দিচ্ছে খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রকের তৈরি ‘গোপন’ ক্যাবিনেট নোট শুধু জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় থাকা নাগরিকই নন, সবাইকে সস্তায় রেশন দেওয়া হোক, নীতি আয়োগ এমনই সুপারিশ করেছে মোদী সরকারকে। লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আরও ভোট টানতে মোদী-শাহের সরকার নীতি আয়োগের এই সুপারিশ হয়তো মেনেও নিতে পারে, এই নিয়ে তুমুল জল্পনা শুরু হয়েছে।
জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের (এনএফএসএ) আওতায় থাকা দেশের প্রায় ৮০ কোটি নাগরিকরা যারা প্রায়োরিটি হাউসহোল্ড এবং অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনার অন্তর্গত, তাদের এখন সস্তায় চাল, গম এবং দানাশস্য দেয় কেন্দ্র। রেশন দোকানের মাধ্যমে চাল মেলে ৩ টাকা কেজি দরে। গম ২’টাকায়। জোয়ার, বাজরা, রাগি, ভুট্টার মতো দানাশস্য এক টাকা কেজিতে। বাকিদের খাদ্যশস্য কিনতে হয় বাজার থেকেই। অর্থাৎ, দেশের নাগরিক হয়েও গণবণ্টন ব্যবস্থার কোনও সুবিধা পান না কোটি কোটি নাগরিক।
নীতি আয়োগ মোদী সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে মমতার রেশনের মডেলকে অনুসরণ করার। গণবণ্টন ব্যবস্থাকে সর্বজনীন করা যেতেই পারে, এমনটাই খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রককে তারা জানিয়েছে। যাঁদের রেশন কার্ড নেই, তাঁদেরও নির্দিষ্ট দরে চাল, গম এবং দানাশস্য দেওয়া যেতে পারে। এজন্য দামও নির্ধারণ করে দিয়েছে নীতি আয়োগ। তবে ভোট-ব্যাঙ্ককে তুষ্ট করার জন্য যে নীতি আয়োগের এই সুপারিশ ‘গোপন’ ক্যাবিনেট নোটে যুক্ত করেছে মন্ত্রক সেটা বলাই বাহুল্য। ক্যাবিনেট নোটে মন্ত্রক থেকে জানানো হয়েছে নীতি আয়োগের সুপারিশে প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবার মন্ত্রিসভার সিলমোহর পড়লেই সস্তায় সর্বজনীন খাদ্যই কী হতে পারে ভোটারের মন জয়ে বিজেপির অস্ত্র?