১১ই আগস্ট ফাঁসির মঞ্চে ওঠার আগে কী ছিল ক্ষুদিরামের শেষ কথা? 

ফাঁসির আগে ক্ষুদিরামের শেষ ইচ্ছা ছিল – তিনি বোমা বানাতে পারেন, অনুমতি পেলে ওটা সবাইকে শিখিয়ে যেতে চান!

August 11, 2024 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: খুদের বিনিময়ে কেনা শিশুটির নাম রাখা হয় ক্ষুদিরাম। ১৬ বছর বয়সে ক্ষুদিরাম পুলিশ স্টেশনের কাছে বোমা পুঁতে রাখেন ইংরেজ কর্তাদের উদ্দেশ্যে। একের পর এক বোমা হামলার দায়ে ৩ বছর পর তাঁকে আটক করা হয়। ৩০ এপ্রিল ১৯০৮-এ মুজাফফরপুর, বিহারে রাতে সাড়ে আটটায় ইওরোপিয়ান ক্লাবের সামনে বোমা ছুড়ে তিনজনকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত ক্ষুদিরামকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

বিচার শুরু হয় ২১ মে ১৯০৮ তারিখে যা  আলিপুর বোমা মামলা নামে পরিচিত হয়। বিচারক ছিলেন  ব্রিটিশ মি. কর্নডফ এবং দুইজন ভারতীয়, লাথুনিপ্রসাদ ও জানকিপ্রসাদ। রায় শোনার পরে ক্ষুদিরামের মুখে হাসি দেখে বিচারক কর্নডফ তাকে প্রশ্ন করেন, তাকে যে ফাঁসিতে মরতে হবে সেটা সে বুঝেছে কি না?     

ফাঁসির মঞ্চে যথারীতি এক কথায় জল্লাদকেও অবাক করে দিয়েছিলেন সতেরো বছরের বালক। তাঁর মৃত্যুবরণ দেখে হয়তো ভয় পেয়েছিলেন স্বয়ং যমরাজও।

জল্লাদকে কি এমন কথা বলেছিলেন ক্ষুদিরাম বসু? তার ফাঁসির আগের মুহূর্তগুলোও অবাক করে দেওয়া। কথোপকথন এবং আচার ব্যবহারে একবারও মনে হয়নি ওর কোন মৃত্যু ভয় রয়েছে। সতীশ চন্দ্র চক্রবর্তী ছিলেন ক্ষুদিরামের পক্ষে সওয়ালকারী তিন আইনজীবীর একজন। এ দিক সে দিক বহু কথার পর তিনি ক্ষুদিরামকে জিজ্ঞাসা করেন “তুমি কি জানো রংপুর হইতে আমরা কয়েকজন উকিল তোমাকে বাঁচাইতে আসিয়াছি? তুমি তো নিজেই আপন কৃতকর্ম স্বীকার করিয়াছ।” ক্ষুদিরামের উত্তর ছিল “কেন স্বীকার করব না ?” এমনই ছিল তার শেষ প্রশ্নটিও।   

১১ আগস্ট, জেলের ভিতরে ডানদিকে একটু দূরে প্রায় ১৫ ফুট উঁচুতে ফাঁসির মঞ্চ। ক্ষুদিরামকে নিয়ে আসে চারজন পুলিশ। তথ্য বলছে, ক্ষুদিরামই হাঁটছিলেন আগে। যেন তিনিই পুলিশদের টেনে আনছেন। এরপর সে উপস্থিত  আইনজীবীদের দিকে তাকিয়ে হাসে। জল্লাদ তখন শেষ মুহূর্তের কাজ করছিল। গলায় ফাঁসির দড়ি পরানো মাত্রই দামাল ছেলের প্রশ্ন “ফাঁসির দড়িতে মোম দেওয়া হয় কেন?” – এটাই তার শেষ কথা। চমকে দিয়েছিল জল্লাদকে।

পরের ঘটনা ইতিহাস। অন্তিম সময়ে ক্ষুদিরাম ম্যাৎসিনী, গ্যারিবল্ডি ও রবীন্দ্ররচনাবলী পড়তে চেয়েছিলেন। অন্তিম দিনে আইনজীবী কালিদাসবাবুকে ক্ষুদিরাম বলেছিলেন , “রাজপুত নারীরা যেমন নির্ভয়ে আগুনে ঝাঁপ দিয়া জওহরব্রত উদযাপন করত , আমিও তেমন নির্ভয়ে প্রাণ দিব।”

১০ আগস্ট ক্ষুদিরাম বলেছিল, “আগামীকাল আমি ফাঁসির আগে চতুর্ভুজার প্রসাদ খাইয়া বধ্যভূমিতে যাইতে চাই”। ফাঁসির আগে ক্ষুদিরামের শেষ ইচ্ছা ছিল – তিনি বোমা বানাতে পারেন, অনুমতি পেলে ওটা সবাইকে শিখিয়ে যেতে চান!

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen