একুশে জুলাই কী খেল দেখাবেন দিলীপ? জল্পনা উসকে ‘জল-পোনার’ তত্ত্ব আওড়ালেন তিনিই

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি,১৩:০৮: পদ্ম থেকে কি ক্রমশ দিলীপের দূরত্ব বাড়ছে? সদ্য বঙ্গ বিজেপির সভাপতি বদল হয়েছে। নয়া প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানাতে সায়েন্স সিটিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ডাক পাননি তিনি। মোদী, শাহের সভাতেও ডাকা হচ্ছে না, দলের বৈঠকেও জুটছে না আমন্ত্রণ! দিলীপ কি এখন গেরুয়া শিবিরের কুপুত্র?
শনিবার খড়গপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘২১ জুলাই নতুন চমক থাকবে, গোটা পশ্চিমবঙ্গ দেখবে!’ এই কথায় রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। ক্ষুব্ধ বিজেপি নেতৃত্ব। দিলীপ ঘনিষ্ঠ নেতারা কার্যত গর্তে পড়েছেন। বিজেপির একাংশের মতে, দলের কাছে গুরুত্ব হারিয়ে ফেলেছেন দিলীপ।
দিলীপ নিজে বলছেন, রাজনীতিতে দিলীপ ঘোষ সবসময় ফুল ফোটায়। ২১ জুলাই নতুন চমক থাকবে, গোটা পশ্চিমবঙ্গ দেখবে। অনেকে অনেক কিছু বলছেন। ২১ তারিখ বোঝা যাবে। তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের বক্তব্য, এটা বিজেপির অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। মিডিয়ায় আসার জন্য এমন কথা বলেছেন দিলীপ। গোটা বিষয়টাই সাজানো। দলকে পাশে পাচ্ছেন না। তাছাড়া মানুষও পাশে নেই। তাই মিডিয়ার সামনে চমক দেখাচ্ছেন। উল্লেখ্য, দিলীপই বঙ্গ বিজেপির সফলতম সভাপতি। তিনি সরে যেতেই একের পর এক নির্বাচনে হারতে থাকে বিজেপি। রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরে যাওয়ার পর দিল দলের অন্দরে ক্রমশ কোণঠাসা হচ্ছিলেন দিলীপ। লোকসভা ভোটেও হারেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর থেকে দলের সঙ্গে দূরত্ব আরও বাড়তে শুরু করে।
২১ জুলাই ধর্মতলার প্রকাশ্য মঞ্চে তৃণমূলের শহিদ দিবস পালিত হবে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, শহিদ দিবসের মঞ্চে দিলীপ ঘোষ থাকতে পারেন। আর একাংশের অনুমান, তিনি নতুন দল গড়ে তুলতে পারেন। কেউ কেউ বলছেন একুশে জুলাই দলের অন্দরে থেকেই বিদ্রোহ ঘোষণা করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে বঙ্গ বিজেপিতে ধস নামতে পারে। দিলীপ ঘোষ মানেই বঙ্গ রাজনীতির বর্ণময় চরিত্র, তার পক্ষে কিছুই অসম্ভব নয়।
দলবদলের জল্পনার মাঝে সোমবার নিউটাউনে প্রাতঃভ্রমণরত দিলীপের মুখে শোনা গেল অন্য এক কথা। বঙ্গ রাজনীতিতে জল্পনা শব্দের নতুন এক সংজ্ঞা দিলেন দিলীপ। বললেন, “আমার জলও নেই, পোনাও নেই। আমার রাজনীতি আছে।”
ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণরত দিলীপ, সাংবাদিকদের জানান, “কোনও না কোনও মঞ্চে তো আমাকে দেখা যাবেই। আসুক না ২১ তারিখ। রাজনীতি জল্পনায় চলে। দেখা যাক না কী হয়। মানুষ কী জানতে চায় সেটাই আসল। জল্পনা দিয়েই অনেকের রাজনীতি হয়। আমার জলও নেই, পোনাও নেই। আমার রাজনীতি আছে। ২১ জুলাইয়ের পর আর কোনও প্রশ্ন থাকবে না। সব প্রশ্নের সমাধান হয়ে যাবে।”
আবার কি পদ্ম পার্টিতে সক্রিয় হতে চলেছে তিনি, রয়েছে এই ইঙ্গিতও। শমীক ভট্টাচার্যও দিলীপকে নিয়ে সাফ জানিয়েছেন, “যখন যে কাজে লাগানোর কথা, দল সেই কাজেই লাগাবে দিলীপ ঘোষকে। উনি ছিলেন, আছেন, থাকবেন। উনি কোথাও যাচ্ছেন না।” তাহলে কি একুশে জুলাই Comeback নাকি ফুলবদল? অপেক্ষায় সম্ভাবনাময় বঙ্গ রাজনীতির।