মোদী আমলে JPC কেন বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারছে না? কারণ ব্যাখ্যা করলেন তৃণমূল সাংসদ

August 29, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১২:০০: জেলবন্দি প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীদের নির্দিষ্ট মেয়াদ পেরোনোর পর অপসারণের জন্য নয়া সংবিধান সংশোধনী বিল এনেছে বিজেপি সরকার। আপাতত বিলটি যৌথ সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। সরকার পক্ষ ও বিরোধী পক্ষের সাংসদদের নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠিত হয়েছে। যদিও তাতে যোগ দেয়নি তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি, আপ, শিবসেনা (উদ্ধব)। তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের মতে, যৌথ সংসদীয় কমিটি বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারছে না। তিনি উদাহরণ দিয়ে দেখিয়েছেন, জেপিসির নিয়ন্ত্রণ থাকে কেন্দ্রীয় শাসক দলের জনপ্রতিনিধিদের হাতে।

‘জেপিসি কেন বিশ্বাস যোগ্যতা অর্জন করতে পারছে না? ছয় কারণ’ শীর্ষক এক লেখায় বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন ডেরেক। অতীতের উদাহরণ দিয়েছেন।
১৯৮৭ সালে বোফোর্স দুর্নীতির (Bofors contract scam) তদন্তের জন্য জেপিসি তৈরি করা হয়েছিল। সেই কমিটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য ছিলেন কংগ্রেসের সাংসদ। এই অভিযোগে ছ’টি বিরোধী দল কমিটিতে যোগ দেয়নি। যোগ না-দেওয়া দুটি রাজনৈতিক দল তেলুগু দেশম পার্টি (TDP) ও অসম গণ পরিষদ (AGP) আজও বিজেপির জোট সঙ্গী। জেপিসি ১৯৮৮ সালে রিপোর্ট দেয়। পক্ষপাতের অভিযোগ সেই রিপোর্টের বিরুদ্ধে সরব হয় কংগ্রেস।

অগাস্টা ওয়েস্টল্যান্ড ভিভিআইপি হেলিকপ্টার (Augusta Westland VVIP choppers) মামলার তদন্তে ২০১৩ সালে জেপিসি তৈরি হয়। রাজ্যসভায় যখন যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের প্রস্তাব পাশ হয় তখন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা অরুন জেটলি (Arun Jaitley) বলেছিলেন, জেপিসি গঠন ‘অনর্থক উদ্যোগ’ এবং সরকারের ‘নজর ঘোরানোর কৌশল’।

ডেরেক লিখছেন, ২০১৪ সালের পর থেকে ১১ টি জেপিসি তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে সাতটির ক্ষেত্রে
অধিবেশনের শেষ দিনে জেপিসি গঠনের প্রস্তাব পেশ হয়েছে। ২০০৪-২০১৪ সালের মধ্যে তিনটি জেপিসি গঠিত হয়েছে। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই অধিবেশনের শেষ দিনে যৌথ কমিটি গঠনের প্রস্তাব পেশ হয়নি।
সম্প্রতি ওয়াকফ বিল (Waqf Amendment Bill) সংক্রান্ত পর্যালোচনার জন্য জেপিসি গঠিত হলে, সেখানে বিরোধীদের মতকে গুরুত্ব না-দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সে কথাও উল্লেখ করেছেন ডেরেক।
বিজেপি সাংসদ মেধা কুলকার্নি সকালে রাজ্যসভায় ওয়াকফ বিল বিষয়ক জেপিসির রিপোর্ট পেশ করেছিলেন, বিরোধীদের তীব্র প্রতিবাদের পর তাঁকে বাধ্য হয়ে মধ্যাহ্নভোজের পর বিরোধীদের প্রস্তাব সহ সংশোধনী পেশ করতে হয়েছিল।

১৯৮৭ সালে বোফর্স কেলেঙ্কারির তদন্তের জন্য কংগ্রেস জেপিসি গঠন করে এবং ১৯৮৯ সালে অনুষ্ঠিত পরবর্তী নির্বাচনে কংগ্রেস সরকার গঠন করতে ব্যর্থ হয়। ১৯৯২ সালে, কংগ্রেস হর্ষদ মেহতা কেলেঙ্কারির তদন্তে একটি জেপিসি গঠন করে এবং ১৯৯৬ সালের লোকসভা নির্বাচনে সরকার গঠন করতে ব্যর্থ হয়।

২০০২ এবং ২০০৩ সালে বিজেপি কেতন পারেখ কেলেঙ্কারির (Ketan Parekh scam) অনুসন্ধানের জন্য জেপিসি এবং ২০১১ এবং ২০১৩ সালে কংগ্রেস টুজি কেলেঙ্কারি এবং ভিভিআইপি চপার কেলেঙ্কারির তদন্তে জেপিসি গঠন করে, এবং পরবর্তী লোকসভা নির্বাচন গুলিতে হেরে যায়। ডেরেকের প্রশ্ন, ‘এটা কাকতালীয় নাকি এটাই প্রবণতা?’

তিনটি নতুন বিল, যথাক্রমে The Government of Union Territories (Amendment) Bill 2025, The Constitution (One Hundred And Thirtieth Amendment) Bill 2025 এবং The Jammu and Kashmir Reorganisation (Amendment) Bill 2025 সদ্যসমাপ্ত বাদল অধিবেশনের শেষ পর্যায়ে সংসদে পেশ করা হয়। বিরোধীরা বিলগুলোর বিরোধিতায় সরব হন। সরকার পক্ষ ও বিরোধীরা মুখোমুখি হন। হইহট্টগোল হয়। বিলের কপি ছিঁড়ে ফেলা হয়। বিল পাঠানো হয় জেপিসিতে। লোকসভার (Lok Sabha) একুশজন এবং রাজ্যসভার (Rajya Sabha) দশজন সদস্য নিয়ে জেপিসি গঠিত হয়। জেপিসির রিপোর্ট শীতকালীন অধিবেশনে সংসদে পেশ করা হবে। নভেম্বরে তৃতীয় সপ্তাহে রিপোর্ট পেশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি, আপ, শিবসেনা (উদ্ধব)
জেপিসিতে তাদের প্রতিনিধি পাঠায়নি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen