বাঁ হাতের কড়ে আঙুলেই কেন ভাইফোঁটা? জানুন নেপথ্যের শাস্ত্রসম্মত কারণ

October 17, 2025 | 2 min read
Published by: Saikat

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১৫:৪৫:  দীপাবলী শেষ হতে না হতেই বাঙালি ঘরে ঘরে ফিরে আসে ভাইফোঁটা। আরেক এই আলোর উৎসবের দিনটি ভাই-বোনের পবিত্র ভালবাসা, যত্ন ও মমতার প্রতীক। আলাদা ঘর, ভিন্ন শহর বা দূর দেশ যেখানেই থাকুন না কেন, ভাইফোঁটার দিনে বোনেরা ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় কপালে ফোঁটা দেন, আর ভাই প্রতিশ্রুতি দেয় বোনের রক্ষা করার।

বাংলার সংস্কৃতিতে ভাইফোঁটার (Bhai Phota) প্রচলন বহু পুরনো। কোথাও প্রতিপদে, আবার কোথাও দ্বিতীয়াতে পালন করা হয় এই শুভ দিনটি। পূর্ববঙ্গে প্রতিপদ ও দ্বিতীয়া, এই দু’দিনই পালিত হত ভাইফোঁটা। ফলে ছড়াতেও বদল এসেছে সময়ের সঙ্গে।

প্রতিপদে ফোঁটা হলে বলা হয়,

“প্রতিপদে ফোঁটা দ্বিতীয়াতে নীতা, আজ হতে ভাই আমার যম দুয়ারে তিতা।”

আর দ্বিতীয়াতে ফোঁটা দেওয়ার সময় উচ্চারিত হয় সেই চিরচেনা ছড়া

“ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা।
যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা।”

এই ছড়াটি তিন বার বলা হয়। বোন বা দিদিরা বাঁ হাতের কড়ে আঙুল দিয়ে ভাইয়ের কপালে টিকা দেন। অনেকেই জানেন না, কেন এই নির্দিষ্ট আঙুল ব্যবহারের প্রথা। আসলে, কড়ে আঙুল ‘ব্যোম’ বা মহাশূন্যের প্রতীক। হাতের পাঁচটি আঙুলে পঞ্চমহাভূতের প্রতিফলন- ক্ষিতি (মাটি), অপ (জল), তেজ (অগ্নি), মরুৎ (বায়ু) এবং ব্যোম (আকাশ)। ভাইয়ের কপালে ব্যোমের ফোঁটা মানে, তাদের ভালবাসা যেন হয় অসীম, অনন্ত এবং অক্ষয়।

আবার প্রতিপদে ফোঁটার প্রচলনেরও রয়েছে এক বাস্তব কারণ। অতীতে পূর্ববঙ্গে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌকা। ফোঁটার দিন সন্ধেয় ভাইয়েরা আর বাড়ি ফিরতে পারতেন না, তাই একদিন আগেই প্রতিপদে ফোঁটা দেওয়া হত, আর দ্বিতীয়াতে চলত খাওয়া-দাওয়া ও আনন্দ।

কেউ হোমের টিকা, কেউ চন্দনের ফোঁটা, কেউ আবার গাঁদা ফুলের রং ব্যবহার করেন এই শুভ দিনে। সব ফোঁটাই একই বার্তা দেয়- ভাইয়ের দীর্ঘায়ু, সুখ ও মঙ্গল কামনা।

এই বছর ভাইফোঁটা বা ভাইদুজ পালিত হবে ২৩ অক্টোবর, শুভ সময় দুপুর ১টা ১৩ মিনিট থেকে ৩টা ২৮ মিনিট পর্যন্ত।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen