মহিষাসুরমর্দিনী দিয়েই কেন মহালয়ার সূচনা? জেনে নিন নেপথ্যের কাহিনি

পুরাণে উল্লেখ আছে, অসুররাজ মহিষাসুর কঠোর তপস্যা করে ব্রহ্মার কাছ থেকে অমরত্বের বর চেয়েছিলেন। দেবতা, দানব বা মানুষ কেউই যেন তাঁকে হত্যা করতে না পারে, এই আশীর্বাদে তিনি পেলেন অপ্রতিরোধ্য শক্তি। এর ফলে স্বর্গলোক থেকে দেবতাদের তাড়িয়ে দিলেন মহিষাসুর। চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল অশান্তি, অন্যায় ও অত্যাচার।
তখন দেবতারা শক্তির আরাধনা করে এক নারীমূর্তি সৃষ্টি করলেন। তাঁদের শক্তি মিলেই জন্ম নিলেন দেবী দুর্গা। সিংহবাহিনী সেই দেবী দশ দিন ধরে যুদ্ধ করে অবশেষে অসুররাজ মহিষাসুরকে বধ করেন। সেই থেকে তিনি হলেন “মহিষাসুরমর্দিনী”, অর্থাৎ মহিষাসুরকে মর্দনকারী।
১৯৩১ সালে আকাশবাণীতে প্রথম সম্প্রচারিত হয়েছিল “মহিষাসুরমর্দিনী”। পটভূমিতে দেবী দুর্গার আগমনের কাহিনি, চণ্ডীপাঠ, সংস্কৃত স্তোত্র ও সংগীতের মেলবন্ধন হয়ে উঠল অনন্য ঐতিহ্য। ধীরে ধীরে মহালয়ার ভোর মানেই হয়ে গেল বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে মহিষাসুরমর্দিনীর ধ্বনি।
দুর্গাপুজোর সূচনা হয় মহালয়া দিয়ে। দেবীর আগমন বার্তা বহন করে এই দিন। মহিষাসুরমর্দিনী রূপকেই দেবীর সর্বশক্তিমান প্রতীক হিসাবে ধরা হয় – ন্যায় অন্যায়ের লড়াইয়ে জয়ের প্রতীক। তাই বাঙালি মনে মহালয়া আর মহিষাসুরমর্দিনী নাম দুটি একে অপরের সমার্থক হয়ে গিয়েছে।
অর্থাৎ, মহিষাসুর বধকে কেন্দ্র করেই দেবী দুর্গার সর্বশক্তিময়ী রূপকে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ বলা হয়।