আগামী দিনে শিক্ষকের ভূমিকা নেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

বিল গেটস বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত চ্যাটবটগুলো ব্যবহারে খরচ লাগতে পারে। তবে শিক্ষকের পেছনে প্রচলিত ব্যয়ের তুলনায় কৃত্রিম বুদ্ধিমান শিক্ষকের খরচ কম হবে

April 29, 2023 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শিশুদের পড়তে ও লিখতে শেখাবে, প্রতীকী ছবি সৌজন্যে-analyticsinsight.net

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সভ্যতার অগ্রগ্রতির সঙ্গে প্রযুক্তিগত উন্নতি ঘটেছে। আর সেই প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে যে বিষয়গুলির চাহিদা বাজারে রীতিমতো বেড়ে গেছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স (এআই) তার মধ্যে অন্যতম। নানা ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার আমাদের জীবনকেও আগের চেয়ে অনেক সহজ করে তুলেছে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দ্রুত উন্নয়ন ও মানুষের জীবন গঠনে এর ভূমিকা নিয়ে নানা বিতর্ক হচ্ছে। সম্প্রতি মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎ নিয়ে তাঁর ধারণার কথা তুলে ধরেছেন। একই সঙ্গে পূর্বাভাস দিয়ে বলেছেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যেকোনো মানুষের মতোই একজন ভালো শিক্ষক হয়ে উঠবে।

বিল গেটস বলেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শিশুদের পড়তে ও লিখতে শেখাবে। আগামী দেড় বছরের মধ্যেই এ পর্যায়ে চলে আসবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার স্তর। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের সান দিয়াগো শহরে ডিজিটাল শিক্ষাবিষয়ক এক সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিল গেটস। সেখানে তিনি বলেন, ‘প্রথম দিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পড়া, গবেষণা পাঠে সহযোগী ভূমিকা ও লেখায় মতামত দেওয়ার মতো বিষয়ে কীভাবে সহায়তা করে, তা দেখে আমরা সবচেয়ে অবাক হয়ে যাব।’ বিল গেটসের ওই বক্তৃতার একটি প্রতিলিপি তাঁর ওয়েবসাইট ‘গেটস নোটসে’ প্রকাশিত হয়েছে।
বিল গেটস বলেন, আগামী ১৮ মাসের মধ্যেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শিক্ষকের সহকারী হিসেবে ও লেখার ক্ষেত্রে মতামত দেওয়ার কাজে ব্যবহার হতে দেখা যাবে। এরপর গণিতের ক্ষেত্রেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বাড়তে দেখা যাবে। গণিতের বাধা দূর করতে সামগ্রিক ব্যবস্থায় কীভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানানসই হতে পারে এবং শিক্ষকেরা কীভাবে এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেন, সে বিষয়টি দেখা হবে।

মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই চ্যাটজিপিটি ও গুগল বার্ড তৈরি করেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমান এসব প্রোগ্রাম এখন মানুষের বুদ্ধির সঙ্গে কিছু ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা করছে। বিল গেটস বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত চ্যাটবটগুলো ব্যবহারে খরচ লাগতে পারে। তবে শিক্ষকের পেছনে প্রচলিত ব্যয়ের তুলনায় কৃত্রিম বুদ্ধিমান শিক্ষকের খরচ কম হবে।

বিল গেটস আরও বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের কাছে অনেক ভালো সফটওয়্যার রয়েছে। এগুলো যদি পুরোপুরি গ্রহণ করা যায়, তবে গণিতের ক্ষেত্রে ফলাফল আরও ভালো করা যাবে। গত দুই দশকে গণিতের ক্ষেত্রে যে উন্নতি হয়েছে, তার চেয়ে ভালো ফল আসবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ছাড়াও শিক্ষাপ্রযুক্তির উন্নতি নিয়ে আমি আশাবাদী।’

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়টি কী? সহজ ভাবে বললে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আসলে এমন একটি বিষয় যেখানে মানুষের বৃদ্ধি দিয়ে যে কাজ গুলি সম্পন্ন করা সম্ভব, সেগুলিই কম্পিউটার বা কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত রোবটের মাধ্যমে করা যায়। মূলত নানা সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন তথ্যভান্ডার ও কম্পিউটার সায়েন্সের সাহায্য নেওয়া হয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে আজকাল অনেক সময়ই এর বিভিন্ন উপশাখা মেশিন লার্নিং ও ডিপ লার্নিংয়ের পরিপূরক ভাবা হয়। আদতে এই বিষয়গুলি সম্পর্কিত হলেও সম্পূর্ণ ভাবে এক নয়।

ভারতবর্ষে এই বিষয়টি সদ্য আবির্ভূত হলেও, এর যে এক উজ্বল ভবিষ্যত রয়েছে, তা অস্বীকার করা যায় না। বিল গেটসের মত অনুযায়ী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যদি আগামী দিনে শিশুদের পড়তে ও লিখতে শেখায়, তাহলে নতুন একটি যুগের সূচনা হবে নিঃসন্দেহে তা বলা যায়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen