অবসরের ৩ বছর পর মিলবে পেনশন? EPFO-র নতুন নিয়মে দেশজুড়ে ক্ষোভ

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ২০:১৮: নতুন ইপিএফও (Employees’ Provident Fund Organisation) নিয়ম ঘিরে দেশজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। মাঝপথে প্রবল সমালোচনার মুখে এবার মুখ খুলেছে সরকারের তরফেও প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (PIB)। ব্যুরোর দাবি, ইপিএফও-র নতুন নিয়ম নিয়ে অনলাইনে ভুয়ো তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। তবে সরকারের ব্যাখ্যা অনেকের সন্দেহ আরও বাড়িয়েছে।
You got to be kidding 😂
👉 I said your 25% EPF will be locked in for your entire career
Their “fact check”?
👉 It will be locked in till 55 years of service”
Instead of listening to the people, Modi Govt is busy spinning propaganda
240 seats & BJP is still shameless 🤷🏻♂️ https://t.co/dXE7ffKtvA
— Saket Gokhale MP (@SaketGokhale) October 15, 2025
ভারতের মধ্যবিত্ত কর্মজীবী মানুষের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ইপিএফ (EPF) বা ভবিষ্যনিধি। এই শ্রেণির মানুষ রাজনৈতিকভাবেও সচেতন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয়। তাই তাঁদের ক্ষোভ সরকারের কাছে সংবেদনশীল বিষয়। গত কয়েক বছরে মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্বের চাপে সঞ্চয় কমেছে, ফলে পেনশন বা ভবিষ্যনিধি সংক্রান্ত যেকোনও পরিবর্তনই এখন স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছে- বিশেষ করে বিহার ভোটের আগে।
কী পরিবর্তন এল নতুন নিয়মে
১৩ অক্টোবর শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী মনসুখ মান্ডভিয়ার সভাপতিত্বে ইপিএফও-র সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ট্রাস্টিজ ঘোষণা করে যে ভবিষ্যনিধি স্কিমে আংশিক টাকা তোলার নিয়ম “সহজ” করা হচ্ছে। আগে ১৩টি আলাদা শর্ত ছিল, এখন তা একত্র করে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে
১. জরুরি প্রয়োজন (অসুস্থতা, শিক্ষা, বিবাহ)
২. গৃহনির্মাণ সংক্রান্ত প্রয়োজন
৩. বিশেষ পরিস্থিতি
এছাড়া আংশিক টাকা তোলার সংখ্যা ও পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। শিক্ষার জন্য এখন সর্বোচ্চ ১০ বার ও বিবাহের জন্য ৫ বার পর্যন্ত টাকা তোলা যাবে, যা আগে মোট ৩ বার ছিল।
মূল বিতর্ক কোথায়?
সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এসেছে টাকা তোলার সময়সীমায়। আগে অবসর বা চাকরি ছাড়ার ২ মাস পর সম্পূর্ণ টাকা তোলা যেত। এখন সেই সময়সীমা বেড়ে ১২ মাস করা হয়েছে। আর পেনশন তোলার সময়সীমা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ মাসে। অর্থাৎ কেউ অবসর নেওয়ার পর নিজের সঞ্চিত পেনশন পেতে এখন তিন বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।
The new EPFO rules introduced by the Modi Govt are SHOCKING AND RIDICULOUS. It is open THEFT of salaried people’s own money.
Here’s what the new rules say:
👉 Earlier, on losing your job, you could withdraw your EPF balance after 2 months of employment. That minimum period has…
— Saket Gokhale MP (@SaketGokhale) October 15, 2025
বিরোধীদের দাবি, এই নিয়ম কার্যত অবসরপ্রাপ্তদের হাতে তাৎক্ষণিক অর্থসাহায্যের সুযোগ বন্ধ করবে। অনেকে মাসে মাসে বেতননির্ভর জীবনে অভ্যস্ত, তাঁদের জন্য তিন বছর অপেক্ষা করা কঠিন।
২৫% ন্যূনতম ব্যালান্সের নতুন শর্ত
নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, অবসরের আগে প্রত্যেক কর্মীর অ্যাকাউন্টে কমপক্ষে ২৫% টাকা বাধ্যতামূলকভাবে রাখতে হবে। সরকারের যুক্তি, এতে ওই টাকায় উচ্চ হারে (৮.২৫%) সুদ জমে অবসরের সময় বড় অঙ্কের সঞ্চয় গড়ে উঠবে।
তবে বাস্তবে এই টাকা তোলা যাবে খুব সীমিত অবস্থায়- যেমন স্থায়ীভাবে বিদেশে চলে গেলে, ৫৫ বছর বয়সে অবসর নিলে, স্থায়ী শারীরিক অক্ষমতা দেখা দিলে বা টানা ১২ মাস বেকার থাকলে। অর্থাৎ চাকরি হারানোর পর প্রথমে ৭৫% টাকা তোলা গেলেও বাকি ২৫% পেতে অপেক্ষা করতে হবে পুরো এক বছর।
কেন বিরোধিতা
সমালোচকদের যুক্তি, ইপিএফের টাকা সম্পূর্ণভাবে ব্যক্তিগত সঞ্চয়, তাই কখন ও কত টাকা তোলা হবে সে সিদ্ধান্তও ব্যক্তিরই হওয়া উচিত। নতুন নিয়ম কর্মীদের আর্থিক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে।
মোদী সরকার যদিও বলছে নিয়মটি “সঞ্চয়ের উদ্দেশ্যে”, কিন্তু কর্মী সংগঠন ও বিরোধীদের দাবি, এই সিদ্ধান্ত মধ্যবিত্ত ও বেতনভুক্ত মানুষের জন্য বাস্তবে বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।
এখন প্রশ্ন একটাই, জনতার চাপে মোদী সরকার কি এই সিদ্ধান্তে কোনও সংশোধন আনবে, নাকি নতুন ইপিএফও নিয়মই কার্যকর থাকবে।