বাংলার বিদ্যুৎ সরবরাহের মানোন্নয়নে ১৩.৫ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক

এই ঋণের প্রধান লক্ষ্য হল বাংলার বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রযুক্তিগত উন্নতি সাধন করা। এই বিপুল পরিমাণ আর্থিক বিনিয়োগ বাংলার বিদ্যুৎ পরিষেবাকে শক্তিশালী করে তুলবে।

December 2, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

এবার থেকে আলোয় আলোয় আলোকিত হবে বাংলার প্রতিটি প্রান্ত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎসরবরাহ পরিষেবার উন্নতিতে ১৩.৫ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিতে চলেছে ইন্টারন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ফর রিকন্সট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইবিআরডি)। ইন্টারন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ফর রিকন্সট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এবং ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনকে একত্রে ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক বলা হয়। বিশ্ব ব্যাঙ্কের এই ঋণের মাধ্যমে পশ্চিমবাংলার বিভিন্ন প্রান্তে নির্ভরযোগ্য এবং নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার ব্যবস্থা করা হবে। পরিকাঠামোগত উন্নয়নও করা হবে। এই ঋণের প্রধান লক্ষ্য হল বাংলার বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রযুক্তিগত উন্নতি সাধন করা। এই বিপুল পরিমাণ আর্থিক বিনিয়োগ বাংলার বিদ্যুৎ পরিষেবাকে শক্তিশালী করে তুলবে। স্মার্ট গ্রিড প্রযুক্তিতেও বিনিয়োগ হতে চলেছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের ভারতীয় শাখার ডিরেক্টার জুনেইদ আহমেদের কথায়, “অতিমারি ভারতের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থাগুলির উপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে, আর্থিক ক্ষতির মুখে ঠেলে দিয়েছে তাদের। বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোও অতিমারির দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। মানুষের কাছে নির্ভরযোগ্য ও নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহকারী কোম্পানিগুলির আর্থিক দৃঢ়তা প্রয়োজন।”

বলাইবাহুল্য সেই কাজ করতেই এই ঋণ প্রদান করতে চলেছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। যা ওয়েস্টবেঙ্গল স্টেট ইলেক্ট্রিসিটি ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির শক্তি ও সরবরাহ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। রাজ্যের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ও গ্রিডের আধুনিকীকরণ ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহের পদ্ধতিজনিত বিদ্যুৎ-এর অপচয় হ্রাস পাবে এবং সেই সঙ্গে সরবরাহের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে রাজ্যের বিদ্যুৎ-এর চাহিদা পূরণ হবে। কার্যত কোনও ঘাটতিই আর থাকবে না। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়তেও নিরবিচ্ছিন্নভাবে পরিষেবা মিলবে। বিগত পাঁচ বছরে বাংলার আর্থিক উন্নয়নের দারুণ রাজ্যের বিদ্যুৎতের চাহিদাও প্রায় সাড়ে চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

উপভোক্তার সংখ্যাও বিগত ছ-বছরে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। রাজ্য বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থার অধীনেই বর্তমানে ২কোটি উপভোক্তা রয়েছে। প্রধানত গ্রামীণ এলাকাতেই এই বৃদ্ধি ঘটেছে। বিদ্যুৎ-এর এই চাহিদা বৃদ্ধিতে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থাগুলি আর্থিক মুনাফা লাভ করেছে। মূলত বাণিজ্যিক ও শিল্পক্ষেত্রে বিদ্যুৎ-এর চাহিদাই বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলিকে সর্বাধিক পরিমাণ আর্থিক উপার্জন দেয়। কিন্তু করোনাকালীন পরিস্থিতিতে গ্রামীণ ক্ষেত্রে সাধারণ বাড়িতেও যে হারে বিদ্যুৎ-এর চাহিদা বেড়ে গিয়েছে, তাতেই বিপুল লাভের মুখ দেখেছে সংস্থাগুলি।

বাংলা জুড়ে ২৪*৭ নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিষেবার বাস্তব রূপায়ণের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাঙ্কের এই আর্থিক সহায়তা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। দেশের অন্যতম শক্তিশালী গণপরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে উঠে আসবে রাজ্য বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা। কাটবে আঁধার, বাংলায় সর্বত্র পৌঁছে যাবে আলো। গ্রাম থেকে মফ:স্বল, নগর থেকে শহর সর্বত্র পৌঁছে যাবে উন্নত মানের ও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen