পর্যটকদের জন্য খুলছে বৈকুণ্ঠপুরের কোর এরিয়া
![](https://drishtibhongi.in/wp-content/uploads/2020/01/Baikunthapur-Forest-1024x576.jpg)
খুব বেশি হলে আর চার-পাঁচ মাসের অপেক্ষা। গরমের মরসুমের আগেই বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গলের কোর এরিয়া পর্যটকদের জন্য খুলে দেবে বন দপ্তর। এর ফলে শিলিগুড়িকে কেন্দ্র করে পর্যটন ব্যবসায় নতুন জোয়ার আসবে বলে মনে করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্রাভেল ম্যানেজমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘বৈকুণ্ঠপুর এবং মহানন্দা শিলিগুড়ি শহরের একেবারে লাগোয়া। মহানন্দা অভয়ারণ্য হওয়ায় সেখানে কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হয় না। বৈকুণ্ঠপুরে পর্যটকদের ঢুকতে দেওয়া হলে শিলিগুড়িকে কেন্দ্র করে পর্যটন ব্যবসা আরও জোরদার হবে।’
উত্তরবঙ্গের কোনও বনাঞ্চলের কোর এরিয়ায় ঢুকতে দেওয়া হয় না পর্যটকদের। জলদাপাড়া এবং গোরুমারায় পর্যটকদের কার সাফারির ব্যবস্থা থাকলেও নিদির্ষ্ট এলাকাতেই ঢোকার অনুমতি রয়েছে। আর বৈকুণ্ঠপুরের যে রাস্তাটি পর্যটকদের জন্য খোলা হচ্ছে সেটি একেবারে কোর এরিয়া। এতদিন বনকর্মী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা যাতায়াত করতে পারতেন ওই রাস্তা দিয়ে। এ বার পর্যটকদেরও ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে ওই কোর এরিয়ায়।
এখন শিলিগুড়ি থেকে গাজলডোবা যেতে হয় আমবাড়ি হয়ে। দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার। সালুগাড়া হয়ে জঙ্গলের পথে দূরত্ব ১৫-১৬ কিলোমিটার। সালুগাড়া বাজার থেকে ডানদিক দিয়ে রাজফাঁফরি, বিএসএফ ক্যাম্প। তার পরেই শুরু হচ্ছে জঙ্গল। জঙ্গলের পথে প্রায় ১২ কিলোমিটার গেলে সরস্বতীপুর চা-বাগান। সেটা পেরোলেই গজলডোবা। জঙ্গলের পথে একে একে সাহু, করতোয়া, করলার মতো নদী। সব মিলিয়ে ২৯টি নদী ও ঝোরার উৎস এই জঙ্গল।
তরাই থেকে ডুয়ার্সে যাতায়াতের পথে বুনো হাতির পাল এই জঙ্গলকেই বিশ্রামের জন্য ব্যবহার করে থাকে। ফলে সারা বছর এই জঙ্গলে বুনো হাতি থাকে। তার বাইরে চিতাবাঘ থেকে নানা জাতের বুনো জন্তু রয়েছে। রয়েছে নানা ধরনের পাখিও। জঙ্গলের রাস্তায় পর্যটকদের যাতে বুনো হাতির সামনে পড়তে না-হয় সেই জন্য ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করা হচ্ছে। সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে অবাঞ্ছিতদের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করার জন্য।
গাজলডোবায় রাজ্য পর্যটন দপ্তরের তৈরি ভোরের আলো পর্যটন হাবের সঙ্গে শিলিগুড়ির সালুগাড়ার বেঙ্গল সাফারির যোগাযোগ তৈরির জন্য কোর এরিয়ার ভিতরের এই রাস্তাটি ইতিমধ্যে সংস্কার করা হয়েছে। বন দপ্তর তার সঙ্গে সালুগাড়া ও সরস্বতীপুরে দুটি গেট এবং জঙ্গলের ভিতরে কয়েকটি ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করবে বলে জানিয়েছেন বৈকুণ্ঠপুর বন দপ্তরের ডিএফও উমা রানি। পাশাপাশি বসানো হবে কয়েকটি সিসি ক্যামেরাও।
চলতি সপ্তাহে পর্যটন দপ্তর এই প্রকল্পের জন্য চার কোটি টাকার বাজেট তৈরি করে বন দপ্তরের কাছে পাঠিয়েছে। এখন বন দপ্তর, অর্থ দপ্তরের অনুমোদন পেলেই টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। ফলে নির্মাণ কাজ শেষ করে গরমের মরসুমের আগেই এটি চালু করা সম্ভব বলে অনুমান বন দপ্তরের কর্তাদের। বৈকুণ্ঠপুরের ডিএফও বলেছেন, ‘সরকারি নিয়ম মেনে কাজ করতে গেলে আরও কয়েক মাস সময় লাগবে। কাজ শেষ হলেই সালুগাড়া থেকে গাজলডোবা পর্যন্ত রাস্তাটি খুলে দেওয়া হবে।’