ভ্রমণ বিভাগে ফিরে যান

ঘুরে আসুন প্রকৃতির কোলে, গাছবাড়ি থেকে

March 19, 2020 | 2 min read

পাশেই ঘন বন আর ঢেউ খেলানো পাহাড়। লাল মাটি, শাল-পলাশের সারি। উচু-নিচু ঢালের রাস্তা। এই আদিম বন্যতার মধ্যেই রাত কাটান পুরুলিয়ার গাছবাড়িতে।

২০১৬ সালে কলকাতার বরুণ ভট্টাচার্য আর গোবিন্দপুরের সুজিত কুমার মিলে পুরুলিয়ার সোনকুপিতে শুরু করেছিলেন বানজারা ক্যাম্প। ৬ বিঘের বিশাল চত্বর জুড়ে ছড়ানো অসংখ্য তাঁবু। সামনেই কোকুবুরু পাহাড়। তার একপাশে মাঠাবুরু। অযোধ্যা পাহাড়-সারির ভাঁজ শুরু হয়ে গেছে এখান থেকেই। ক্যাম্পের ঠিক বাইরেটা থেকেই বন। 

পুরুলিয়ার অকৃত্রিম বন্যতাকে পর্যটকদের কাছে পৌঁছে দিতে এই উদ্যোগ। অবশ্যই প্রকৃতি ধ্বংস করে নয়। বরং যারা আসবেন, তারা যেন এই বন্যতা, গা ছমছমে পরিবেশে অ্যাডভেঞ্চারের আঁচ নিতেই আসেন। সেই থেকেই মাথায় আসে ‘টংবাড়ির” পরিকল্পনা।

টংবাড়ি নামটা শুনে খানিক অবাক লাগতে পারে। স্থানীয় আদিবাসীরা গাছের মাথায় মাচা বেঁধে, সেখানে বসে ফসল পাহারা দেন। এই গাছের ওপরের মাচাকে তাঁরা বলেন টংবাড়ি।

মায়ানমারের গাছবাড়ির মডেলকে আদর্শ করে বানজারা ক্যাম্পের কাছে তৈরি হয়েছে এই টংবাড়ি। গাছের প্রায় কোনো অঙ্গের ক্ষতি না করেই তার ওপরে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে ঘরের ফ্রেম। প্রতিটা ঘরই শীতাতপনিয়ন্ত্রিত। পুরুলিয়ার গা ছমছমে পরিবেশ, দূর থেকে ভেসে আসা ময়ূরের ডাক, অতর্কিতে ডানা ঝাপটে উড়ে যাওয়া কোনো অচেনা পাখি আপনাকে নিয়ে এসে ফেলবেই এক রূপকথার জগতে। সেই ঘোরকে আরো কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবে এই গাছবাড়ি।

তবে, গাছবাড়ি ছাড়াও চাইলে কেউ থাকতে পারেন রাজশাহি অকটাগন তাঁবুতে। এখানেও মিলবে এয়ারকুলারের ব্যবস্থা। কোলম্যানের আধুনিকতম ক্যাম্পিং সামগ্রী দিয়ে সাজানো হয়েছে তাঁবু। থাকছে ফোল্ডিং ক্যাম্প চেয়ার, রেফ্রিজারেটরের বদলি কুলার বক্স। তাঁবুতে থাকা প্রত্যেককেই দেওয়া হবে হেডল্যাম্প। সমস্ত ক্যাম্পিং গেজেটসের সুবিধে ভারতের কোনো ক্যাম্পে এই প্রথম।

কিভাবে যাবেন?

বরাভুম স্টেশন থেকে দূরত্ব ২২ কিমি, পুরুলিয়া স্টেশন থেকে ৫৪ কিমি। আগে থেকে বুকিং থাকলে গাড়ি পাঠানো হবে ক্যাম্প থেকেই। 

সড়কপথেও আসা যায়। কলকাতা থেকে দূরত্ব ৩৪৬ কিমি। নিকটতম বাসস্ট্যান্ড দুয়ারসিনি মোড়, মাঠা। সেখান থেকে অবশ্য পায়ে হেঁটেই আসতে হবে বন্য পথ ধরে।

কি কি দেখবেন?

তারপানিয়া লেক, খয়রাবেরা ড্যাম, পাপরাকোচা ড্যাম, মাঠা পাহাড়, পাখি পাহাড়, মুরুওমা ড্যাম, চাত্ডিল ড্যাম এবং ছৌ মুখোশের গাম চড়িদায়।

কখন যাবেন?

গ্রীষ্মের ৩ মাস বাদে যে-কোনো সময়ে।

কী কী করবেন/ করবেন না?

সঙ্গে রাখবেন প্রয়োজনীয় ওষুধ। ক্যাম্পের পরিবেশ নষ্ট করার মতো কাজ করবেন না। বনের মধ্যে গেলে গাইড সঙ্গে নেওয়া উচিত।

(তথ্যসূত্র: বঙ্গ দর্শন)

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#BengalTourism, #ExperienceBengal, #Purulia, #Gachbari, #tongbari

আরো দেখুন