রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

পুজোয় হ্যান্ড স্যানিটাইজার আনছে বেঙ্গল কেমিক্যালস

June 5, 2020 | 2 min read

করোনা-লকডাউনে ফুলে ফেঁপে উঠছে হেলথ ও হোম হাইজিন পণ্যের বাজার। এ রাজ্যের রাষ্ট্রায়ত্ত বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের কথাই ধরুন। ১৮৯২ সালে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়-প্রতিষ্ঠিত দেশে ওষুধ তৈরির প্রথম সংস্থাটি এ বার হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করবে। বৃহস্পতিবার সংস্থার চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর পি এম চন্দ্রাইয়া ‘এই সময়’কে বলেন, ‘পুজোর আগেই মানিকতলা কারখানায় উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে। তার এক সপ্তাহের মধ্যেই বাজারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার পাওয়া যাবে। হ্যান্ডস্যানিটাইজার তৈরির জন্য আমরা ড্রাগ লাইসেন্সের আবেদন করেছিলাম। সেই লাইসেন্স পাওয়া গিয়েছে।’ এর জন্য প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করবে সংস্থাটি।

বর্তমানে, সাদা এবং কালো রং-এর ফিনাইল, ন্যাপথালিন এবং ব্লিচিং পাউডারের মতো ‘হোম কেয়ার’ পণ্য তৈরি করে বেঙ্গল কেমিক্যালস।

গত দু’মাস লকডাউন পর্বে বেঙ্গল কেমিক্যালসের ‘হোম কেয়ার’ পণ্যের বিক্রি ১০-১৫ শতাংশ বেড়েছে। চন্দ্রাইয়ার কথায়, ‘২০১৯-২০ অর্থবর্ষের এপ্রিল-মে মাসে আমাদের মোট বিক্রির পরিমাণ ছিল ৪.৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম দু’মাসে তা বেড়ে হয়েছে ৫ কোটি টাকা। মূলত ফিনাইল, ব্লিচিং পাউডার এবং ন্যাপথালিনের মতো পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। আমাদের মোট বিক্রির ৭০% এসেছে ফিনাইল থেকে।’

গত কয়েক বছর টানা মুনাফা করছে বেঙ্গল কেমিক্যালস। চন্দ্রাইয়া বলেন, ‘গত অর্থবর্ষে আমাদের মোট ৮৫ কোটি টাকা আয় হয়েছিল। নিট মুনাফার পরিমাণ ছিল ১৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষে আয়ের পরিমাণ ২০-২৫ শতাংশ বেড়ে ১১০-১২০ টাকা এবং মুনাফার পরিমাণ ২০-২৫ কোটি টাকা হবে বলেই আমার বিশ্বাস।’ তিনি জানান, লকডাউনে সমস্যায় না পড়লে বিক্রি আরও বাড়ত।

পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে ইতিমধ্যেই নিম এবং পাতিলেবুর গন্ধের সাদা ফিনাইল বাজারে এনেছে সংস্থাটি। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে জুঁইফুলের গন্ধযুক্ত ফিনাইল আনা হবে বলে চন্দ্রাইয়া জানান। খরচ কমাতে ৪৫০ মিলিলিটারের ফিনাইলের বোতলের বদলে ১ লিটারের ক্যান আনা হয়েছে। চন্দ্রাইয়া বলেন, ‘এর ফলে খরচ ১০-১৫ শতাংশ কমবে। বেঙ্গল কেমিক্যালের মোট বিক্রির ৩৫-৪০ শতাংশ ‘হোম কেয়ার’ পণ্য থেকে আসে।

পুজোয় হ্যান্ড স্যানিটাইজার আনছে বেঙ্গল কেমিক্যালস

অন্য দিকে, ফল ও শাক-সব্জি জীবাণুমুক্ত করার প্রবণতাও বেড়েছে আমজনতার মধ্যে। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে ফল ও সব্জি জীবাণুমুক্ত করার জন্য ‘নিমওয়াশ’ ব্র্যান্ডের উপকরণ আনল আইটিসি লিমিটেড। আগামী দু’-তিন দিনের মধ্যেই দেশের সমস্ত বাজারে এই পণ্য পাওয়া যাবে বলে এ দিন সংস্থার পার্সোনাল কেয়ার ডিভিশনের চিফ এগজিকিউটিভ সমীর শতপতি জানিয়েছেন। তরল এবং স্প্রে দুই ভিন্ন প্রকারে ‘নিমওয়াশ’ বাজারে আনছে সংস্থাটি। গোটা দেশে ছড়িয়ে থাকা সংস্থার এক লক্ষ ডিলার মারফত এই পণ্য বিক্রি শুরু করা হবে। সমীরের দাবি, ‘ফল-সব্জির গায়ে লেগে থাকা কীটনাশক নষ্ট করার পাশাপাশি ৯৯.৯ শতাংশ জীবাণুও নষ্ট করবে নিমওয়াশ।’ নিমওয়াশ পাওয়া যাবে ৪৫০ মিলিলিটার, ৫০০ মিলিলিটার এবং ১ লিটারের প্যাকে। ৫০০ মিলিলিটার এবং ১ লিটার প্যাকের দাম যথাক্রমে ৯৯ টাকা এবং ১৯০ টাকা এবং ৪৫০ মিলিলিটার স্প্রে’র দাম ১৩০ টাকা।

সম্প্রতি ‘ভেজি ক্লিন’ ব্র্যান্ডে একই গোত্রের পণ্য বাজারে এনেছে ম্যারিকো লিমিটেড। ৪০০ মিলিলিটার ‘ভেজি ক্লিন’ প্যাকের দাম ২৮৯ টাকা।

হোম কেয়ার পণ্যের জন্য নিমাইল ব্র্যান্ডেই জোর দিচ্ছে আইটিসি। করোনা বা সমগোত্রীয় ভাইরাস নষ্ট করার ক্ষেত্রে নিমাইল যে কার্যকরী তা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে বলেই দাবি সংস্থাটির। সমীর জানান, ইউনাইটেড কিংডম অ্যাক্রেডিটেশন সার্ভিসের পরীক্ষাগারে নিমাইল পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস বা সমগোত্রীয় ভাইরাস নষ্ট করার ক্ষমতা রয়েছে এই পণ্যের। ‘সারোগেট পদ্ধতিতে দেখা গিয়েছে করোনাভাইরাসের সমান ক্ষমতাযুক্ত ভাইরাসের উপর এর প্রয়োগ করে ওই ফল পাওয়া গিয়েছে।’

সমীরের কথায়, পশ্চিমবঙ্গই নিমাইলের সব থেকে বড় বাজার। এ রাজ্যের ফ্লোর ক্লিনার ক্ষেত্রের ৩৫.৮ শতাংশ বাজার নিমাইলের দখলে রয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Bengal Chemicals, #Hand Sanitizers

আরো দেখুন