বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী আন্দোলনের দাবি, সরানো হোক রবার্ট ক্লাইভের মূর্তি
আট মিনিট ছ’সেকেন্ডের একটি হাড়হিম করা দৃশ্য। একটা মৃত্যু। নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা বিশ্বকে। বদলে গিয়েছে বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী আন্দোলনের ভাষা। এখন আর জর্জ ফ্লয়েড একা নন। তাঁর মৃত্যুতে বিক্ষোভ-আন্দোলন আমেরিকা ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছে দুনিয়ায়। শুরু হয়েছে অতীতকে কাঁটাছেঁড়া। তা নাহলে কেনই বা ফের কাঠগড়ায় দাঁড়াবেন একদা ব্রিটিশ গভর্নর রবার্ট ক্লাইভ? ধুলোজমা ইতিহাস সামনে এনে বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী আন্দোলনের নয়া স্লোগান উঠছে, ‘সরানো হোক রবার্ট ক্লাইভের মূর্তি।’ তিনি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার প্রতীক। অত্যাচারী গভর্নর। ফাঁকা বুলি নয়, খোদ ব্রিটেনের মাটিতে দাঁড়িয়ে রীতিমতো অনলাইন পিটিশন দাখিল করে একদা ‘পলাশীর প্রথম ব্যারন’-এর মূর্তিবিলোপের দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা। চালু করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পিটিশনারদের সংখ্যা ১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে খবর।
ফেরা যাক ইতিহাসের উঠোনে। ২৩ জুন, ১৭৫৭। পলাশীর প্রান্তরে বাংলার ইতিহাসের এক নাটকীয় পালাবদল। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ উদ-দৌল্লার অসহায় আত্মসমর্পণ। দেশজুড়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্তৃত্ব বিস্তার। নবাবের বকলমে স্বেচ্ছাচারী শাসক, পরে গভর্নর, রবার্ট ক্লাইভের উত্থান। দ্বৈত শাসননীতি। রাজস্ব আদায়ে নির্মম অত্যাচার। ইতিহাসের পাতা ভরেছে ক্লাইভকে নিয়ে কিছু মিথ, কিছু সত্যে। কয়েক শতক পেরিয়ে ফের যেন তাঁকে নিয়ে ইতিহাসের সুলুকসন্ধান। কেন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাগর পেরিয়ে মার্কিন মুলুকে কৃষ্ণাঙ্গ ফ্লয়েড হত্যার ঘটনা আসলে জনরোষের সেফটি ভালভ খুলে দিয়েছে। জাতিবিদ্বেষের বিরোধিতায় নিশানা হচ্ছেন দাসত্বের কারবারী থেকে রাষ্ট্রনায়ক সকলেই। তারই প্রতিফলন এই পিটিশন। কী লেখা রয়েছে পিটিশনে? প্রতিবাদীদের দাবি, ক্লাইভ একজন আদ্যন্ত জাতিবিদ্বেষী শাসক। ভারতীয়দের আজীবন ঘৃণার চোখে দেখেছেন। সাদা চামড়ার অহংকার পুষে রেখে লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছেন তিনি।