লাদাখে মুখোমুখি ভারত-চীন – সংঘর্ষের উৎস কোথায়
ভারত ও চীন। বিশ্বের মানচিত্রে প্রবল শক্তিধর দুই রাষ্ট্র, ফের একবার সীমান্তে মুখোমুখি। এবার সমস্যার কেন্দ্রে লাদাখ অঞ্চল। সেখানে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা নিয়ে দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র জড়িয়ে পড়েছে এক বেনজির লড়াইয়ে। সহজ কথায়, হাতাহাতিতে।
সমস্যা কোথায়?
লাদাখের লেহ থেকে দারবুক, শাইয়োক হয়ে দৌলত বেগ ওলডি বায়ুসেনা ঘাঁটি পর্যন্ত ভারতের অল ওয়েদার রোড তৈরীর কাজ প্রায় শেষ। গালওয়ান ভ্যালি হয়ে এই রাস্তা কারাকোরাম পাসের সিয়াচেন পর্যন্ত গিয়েছে। এই রাস্তা নিয়েই আপত্তি চীনের।
আপত্তি কেন?
কারাকোরাম পাস হল এমন একটি দুর্গম এলাকা যেখানে খুব কাছাকাছি চীনের ফৌজ, পাকিস্তানের আর্মি এবং ভারতীয় সেনা টহল দেয়। একবার হেভি ভেহিকেল চালানো শুরু করলে গোটা এলাকার কৌশলগত সুবিধা চলে আসবে ভারতের হাতে। চাপে পড়বে চীন এবং পাকিস্তান। এই সুযোগ ভারত যাতে না নিতে পারে, সেই জন্যই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বা LAC বরাবর রাস্তা তৈরীর বিরোধিতা করছে চীন।
সাম্প্রতিক সময় নেপালের বদলে যাওয়া ভূমিকার নেপথ্যেও অনেকে চীনের প্রভাব দেখতে পাচ্ছেন। চীন-নেপালের ইদানীং সখ্য নিয়ে আপাতদৃষ্টিতে ভারতের কিছু বলার না থাকলেও, নেপাল-ভারত সম্পর্কে সেই সখ্য যে ইতিমধ্যেই প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে তা স্পষ্ট।
এই পরিস্থিতিতে ভারতের নীতি কী হবে?
প্রতিরক্ষা এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এই ঘটনাগুলোকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে না দেখে ভারতের উচিত বৃহত্তর কূটনৈতিক পরিকল্পনা তৈরী করে তার মোকাবিলা করা।
এই প্রেক্ষিতেই আসে কূটনৈতিক ক্ষমতা এবং সামরিক ক্ষমতার প্রশ্ন। এই দু’য়ের ক্ষেত্রেই চীনের চেয়ে পিছিয়ে নেই ভারত। তবে চীনের কাছে বাড়তি যেটা আছে, তা হল নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ। ফলে রাষ্ট্রপুঞ্জে চীনের বাড়তি সুবিধা আছে, যেটা ভারতের নেই।
তবে ভারতেরও একটি সুবিধা আছে। তা হল চীনের উপর খুব এক প্রসন্ন নয় তার প্রতিবেশী দেশগুলো। ভারত-চীন মতবিরোধের সময় বহুবার তাইওয়ান কিংবা ভিয়েতনাম ভারতের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে। এমনকী চীনের একতরফা আধিপত্যবাদ ঠেকাতে সেখানে ভারতীয় সেনার ডেস্ট্রয়ারও ঘুরে বেড়ায় বলে দাবী অনেকের।