সংবাদমাধ্যমের জন্য ‘জরুরী অবস্থা’ এখনও চলছে ভারতে
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম নজরদারি সংস্থা রিপোর্টার্স সঁ ফ্রঁতিয়ে বা আরএসএফ বলছে, নরেন্দ্র মোদীর শাসনকালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা বড়সড় হুমকির মুখে পড়েছে।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিচারের যে আন্তর্জাতিক তালিকা তারা প্রকাশ করেছে ২০১৮ সালে, তাতে ভারতের অবস্থান ১৩৮-এ এসে দাঁড়িয়েছে। ২০১৭তে ভারতের অবস্থান ছিল ১৩৬।
সরকারের সমালোচনামূলক অথবা তথাকথিত জাতীয়তাবাদ বিরোধী যে কোনও সংবাদ প্রকাশ করলেই সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে – যার সিংহভাগই করা হচ্ছে মোদীর ‘ট্রোলিং বাহিনী’র দ্বারা।
রিপোর্টার্স সঁ ফ্রঁতিয়ে তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে লিখেছে, কট্টর জাতীয়তাবাদীরা ক্রমবর্ধমান হারে সাংবাদিকদের টার্গেট করছে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে। প্রতিটি বিতর্কের ক্ষেত্রেই যে কোনও ধরণের কথিত জাতীয়তাবাদ বিরোধী প্রশ্নকেই হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা বলপূর্বক সরিয়ে দিতে চাইছে বলে উল্লেখ করেছে আরএসএফ। এবং এই সব হুমকির বেশীরভাগটাই করা হচ্ছে “মি. মোদীর ট্রোলিং বাহিনীর দ্বারা”।
আরএসএফ আরও বলছে গৌরী লঙ্কেশের মতো সাংবাদিকদের যেমন প্রাণে মেরে ফেলা হয়েছে, তেমনই সরকারের বেশী সমালোচনা করলেই মুখ বন্ধ করার জন্য দেশদ্রোহিতার মামলা করা হচ্ছে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে। যদিও কোনও সাংবাদিকের এখনও পর্যন্ত সাজা হয়নি ওই সব মামলায়।
আরএসএফ বলছে, একদিকে যেমন সাংবাদিকদের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে, অন্যদিকে সংবাদমাধ্যম মালিকরা এখন ‘সেল্ফ সেন্সরশিপ’ বা স্বেচ্ছা-নিয়ন্ত্রণ শুরু করেছে, যাতে সরকারের সমালোচনামূলক খবর না প্রকাশ পায়।
১৯৭৫ সালে ভারতে যে জরুরি অবস্থা জারী করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, সেই সময়ে আইন করেই সংবাদপত্র সেন্সর করা হত। সেন্সরের ছাড়পত্র না পেলে কোনও কোনও সংবাদ কেটে সরিয়ে দেওয়া হত কাগজ থেকে – সেই জায়গাটা ফাঁকাই থাকত। বহু সাংবাদিককে জরুরী অবস্থার সময়ে জেলেও যেতে হয়েছিল।