রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

রাজ্যকে এড়িয়ে রেলকে দিয়ে গরিব কল্যাণ যোজনা রূপায়ণের তোড়জোড় কেন্দ্রের

June 27, 2020 | 2 min read

লকডাউনে কাজ হারানো পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কেন্দ্র প্রধানমন্ত্রী গরিবকল্যাণ রোজগার অভিযান প্রকল্প চালু করলেও তা থেকে বাদ বাংলা। সেই বিতর্কের মাঝেই রাজ্য প্রশাসনকে এড়িয়ে রেলকে দিয়ে এই প্রকল্প রূপায়ণের তোড়জোড় শুরু হয়েছে।

রেল সূত্রের খবর, গরিবকল্যাণ প্রকল্পে কী ভাবে রেলের বিভিন্ন কাজে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিযুক্ত করা যায়, তার পরিকল্পনা তৈরি করতে বলা হয়েছে ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারদের। রেলের প্রতিটি জোনাল অফিসকে এই মর্মে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে রেল। রেলের কোন কাজে কতজনকে নিয়োগ করা যেতে পারে, তার তালিকা বানানো হচ্ছে। এর পর পরিযায়ীদের নামের তালিকা তৈরি করা হবে।

২৪ জুন জোনাল রেলওয়ে ম্যানেজার এবং ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারদের সঙ্গে এ নিয়ে ভিডিয়ো কনফারেন্স করেন রেলবোর্ডের চেয়ারম্যান বিনোদকুমার যাদব। সেই বৈঠকেই প্রতিটি জেলায় রেলের মাধ্যমে গরিবকল্যাণ রোজগার যোজনায় পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়োগের পরিকল্পনা তৈরি করে জমা দিতে বলা হয়েছে ডিআরএমদের। কাজের লক্ষ্যমাত্রাও স্থির করে দেওয়া হয়েছে। রেলবোর্ডের চেয়ারম্যান নির্দেশ দিয়েছেন, চলতি বছরের অক্টোবরের মধ্যে মোট আট লক্ষ শ্রমদিবস সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রা পূরণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে ডিআরএমদের। খরচের পরিমাণ ১,৮০০ কোটি টাকা। মোট ১১৬ ধরনের কাজ বাছা হয়েছে। তবে স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ী কাজ ঠিক করা হবে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, রেলের লেভেল ক্রসিং ও তার সন্নিহিত রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণ, রেল স্টেশনের সঙ্গে সংযোগকারী রাস্তাগুলির সংস্কার, রেললাইনের নিকাশি নালা সাফাই, পলি সরানো, রেলের জলাশয়ের পাড় বাঁধানো ও বৃক্ষরোপণের মতো কাজের সঙ্গে যুক্ত করা হবে এলাকার পরিযায়ী শ্রমিকদের।

গরিব কল্যাণ যোজনা

পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিলকুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ রোজগার প্রকল্প রূপায়ণের বিষয়ে রেলবোর্ডের চেয়ারম্যান ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে ডিআরএমদের অবহিত করেছেন। রেলের অনেক ধরনের কাজকর্ম রয়েছে। তার মধ্যে কোন কোন কাজে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়োগ করা যায় সেটা খতিয়ে দেখা হবে। তবে বিষয়টি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এ নিয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।’

রেলের কর্মীর অভাব মেটাতে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে লোক নিয়োগ করার পরামর্শ দিয়েছে রেল মন্ত্রক। ইতিমধ্যেই মালদহ ডিভিশনে রেলের বিভিন্ন কাজে একশো দিনের কাজের শ্রমিকদের নিয়োগ করা হয়েছে। বিহারের কাটিহার, অন্ধ্রপ্রদেশের ওয়ারাঙ্গল, তামিলনাড়ুর মাদুরাই এবং রাজস্থানের উদয়পুরে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে পরীক্ষামূলক ভাবে রেলে লোক নিয়োগ করা হয়েছে। সেটা সফল হওয়ার পরই পশ্চিমবঙ্গ-সহ সমস্ত রাজ্যে রেলে কর্মীর অভাব মেটাতে আরও বেশি করে একশো দিনের কাজের প্রকল্পকে কাজে লাগাতে বলেছেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। পূর্ব রেলের এক শীর্ষকর্তা জানান, রেল মন্ত্রকের নির্দেশ মেনে একশো দিনের কাজের মাধ্যমে দক্ষ এবং অদক্ষ, দুই ধরনের শ্রমিককে রেলের কাজে নিয়োগ করা হবে। তার জন্য সমস্ত ডিভিশনে শ্রমিকদের তালিকা তৈরি হচ্ছে।

রেলের বিভিন্ন শ্রমিক-কর্মচারী সংগঠনের নেতারা অবশ্য বিষয়টিকে খুব একটা ভালো চোখে দেখছেন না। পূর্ব রেলওয়ে মেনস ইউনিয়নের সম্পাদক অমিতকুমার ঘোষ বলেন, ‘রেল নিজের কর্মচারীদের ছাঁটাই করে লোক কমানোর পরিকল্পনা করছে। লকডাউনের সময় রেলের প্রায় সাড়ে ছ’লক্ষ ঠিকাকর্মীরা তাঁদের পাওনা-গণ্ডা হাতে পাননি। তখন তারাই আবার পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজ দেওয়ার কথা বলছে। এটা রেলের ভাঁওতা ছাড়া কিছু নয়।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#central government, #State Government, #garib kalyan yojna

আরো দেখুন