আন্তর্জাতিক বিভাগে ফিরে যান

এবছর ইলিশ উৎপাদনে রেকর্ডের সম্ভাবনা বাংলাদেশে

July 20, 2020 | 2 min read

ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ রেকর্ড সৃষ্টি করে চলেছে। প্রতি বছর ১০ থেকে ১২ হাজার মেট্রিক টন করে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মা ইলিশ রক্ষা, জাটকা সংরক্ষণ এবং অভয়াশ্রম বাস্তবায়নের ফলে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। এবারে বাংলাদেশে ইলিশ উৎপাদন অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।

এবছর ইলিশের উৎপাদন ধরা হয়েছে সাড়ে ৫ লক্ষ মেট্রিক টন। যা গত বছর ছিল ৫.৩৩ লক্ষ মেট্রিক টন। প্রতিটি মা ইলিশ ১০ থেকে ১২ লক্ষ ডিম ছেড়ে থাকে। তাই মা ইলিশ রক্ষায় ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। যার ফলে প্রতি বছরই বাড়ছে ইলিশের উৎপাদন।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক ডঃ আনিসুর রহমান বলেছেন, ‘বিশ্বে যে পরিমাণ ইলিশ উৎপাদন হয়ে থাকে তার ৮৫ ভাগই হচ্ছে বাংলাদেশের। বাকি ১৫ শতাংশ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, মিয়ানমার সহ অন্যান্য দেশে উৎপন্ন হয়। বাংলাদেশ ইলিশের ভরা মৌসুম অগাস্টে শুরু হলেও বৃষ্টি এবং জলের প্রবাহ বৃদ্ধির কারণে এখন থেকেই বাংলাদেশের বাজারে প্রচুর ইলিশ মিলছে।

ডঃ আনিসুর রহমান জানান, গত অক্টোবরে মা ইলিশের ডিম পাড়া ছিল সন্তোষজনক। প্রায় ৪৯ শতাংশ। ইলিশ রক্ষায় সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ এবং সঠিক পরিকল্পনার বাস্তবায়নের কারণেই প্রতিবছর বাংলাদেশে ইলিশের উৎপাদন বেড়ে চলেছে।

মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট এস এম রেজাউল করিম বলেছেন, ‘জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষিবিষয়ক সংস্থা এফএও-র প্রতিবেদন অনুযায়ী সাধু পানির মাছ উৎপাদনে দ্বিতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ। আর ইলিশ মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশ পৃথিবীর সর্বোচ্চ ইলিশ উৎপাদন করে এবং এর যে রাইট তাও বাংলাদেশের। ইলিশ উৎপাদন করে বাংলাদেশে চাহিদা পূরণ করতে পেরে আমরা গর্ববোধ করছি।’

অপরদিকে, ইলিশ রক্ষায় ৬.৫ সেন্টিমিটারের (২.৬ ইঞ্চি) চেয়ে ছোট ফাঁসের যে কোনও ধরনের জাল নিষিদ্ধ করেছে সরকার। স্থানীয়ভাবে ১৩ নামের ফাঁস জাল নিষিদ্ধ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রকের জারি করা বিজ্ঞপ্তিটি বুধবার গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। দ্য প্রোটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অফ ফিস অ্যাক্ট, ১৯৫০ এর আওতায় সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইলিশ আহরণে ৬.৫ সেন্টিমিটার (২.৬ ইঞ্চি) অপেক্ষা ছোট ফাঁসবিশিষ্ট জাল যে নামেই অবহিত হোক না কেন, তা নিষিদ্ধ। বলা হয়েছে, জিরো সুতার জাল, দুই সুতার জাল, তিন সুতার জাল, নাইলন জাল, সুতার জাল, জাল, ভাসমান জাল, ইলিশ/ইলশে জাল, পকেট/পোকা জাল, চান্দি/ছান্দি জাল, কোনা জাল, গুলতি/খোটা জাল, সাইন জাল ছাড়াও এসব জালের মতো ইলিশ আহরণে ৬.৫ সেন্টিমিটারের ছোট ফাঁসের যে কোনও নামের জাল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার সহ বিশ্বের আরও কিছু দেশে ইলিশ মিললেও বাংলাদেশের ইলিশ আলাদা। বিশেষত পদ্মার ইলিশের কোনও তুলনাই নেই। যে কারণে গত বছর পদ্মার ইলিশের জীবনরহস্য উদঘাটনে গবেষণা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হাসিনা খানের নেতৃত্বে কয়েকজন গবেষক। গত বছরের সেপ্টেম্বরে তাদের উদ্ভাবিত পদ্মার ইলিশের জিন বিন্যাস বা জিনোম সিকোয়েন্স লন্ডনভিত্তিক বিশ্বখ্যাত জার্নাল বায়োমেড সেন্ট্রাল (বিএমসি) প্রকাশ করে। অবশেষে পদ্মার ইলিশের জিন বিন্যাসে বাংলাদেশের গবেষকদের গবেষণার ফলাফল আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও লাভ করে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#hilsa fish, #Bangladesh

আরো দেখুন