দেশ বিভাগে ফিরে যান

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সংখ্যা ১২ থেকে পাঁচে নামাতে চলেছে মোদী সরকার!

July 21, 2020 | 2 min read

কেন্দ্রে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে বল্গাহীন বেসরকারিকরণের কর্মযজ্ঞ শুরু করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। টেলিকম, উড়ান, বিমা, পেট্রোলিয়াম-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের একের পর এক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার অংশীদারিত্ব বিক্রির ব্লু প্রিন্ট প্রায় চূড়ান্ত। এমনকী রেল, খনি, বিদ্যুৎ, প্রতিরক্ষা এবং কৃষি পণ্য বিপননের ক্ষেত্রে প্রবেশের পথ হাট করে খুলে দেওয়া হয়েছে বেসরকারি লগ্নিকারীদের জন্য। এবার সরকারের নজর দেশের ব্যাংকিং শিল্পের উপরে। অর্ধেকের বেশি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক বেসরকারিকরণে বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছে। গোটা প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত সরকারি আধিকারিক এবং ব্যাংকিং কর্তাদের উদৃত করে সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।

প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, বর্তমানে দেশে মোট ১২টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক আছে। এই সংখ্যা কমিয়ে ৪ থেকে ৫টায় নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। ব্যাংকিং শিল্পে ক্ষেত্রে সামগ্রিক বদল আনার যে নীতিগত সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে তার অঙ্গ হিসেবেই এই পদক্ষেপ। প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া, সেন্ট্রাল ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্য়াংক, ইউকো ব্যাংক, ব্যাংক অফ মহারাষ্ট্র এবং পঞ্জাব অ্য়ান্ড সিন্ধ ব্য়াংকের নিজের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশিদারিত্ব বিক্রি করে দেওয়ার ভাবনা আছে সরকারের। এই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন শীর্ষ এক আধিকারিক।

ওই আধিকারিক বলেছেন, ‘সরকার চায় দেশে মাত্র ৪ থেকে ৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থাকুক। কিন্তু আর কোনও ব্যাংক সংযুক্তিকরণ হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে বাকি সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়াই একমাত্র পথ। বিষয়টি নীতিগত স্তরে এক প্রকার চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে।’ জানা গিয়েছে, গোটা বিষয়টি বর্তমানে পরিকল্পনার স্তরে আছে। সেটি চূড়ান্ত রূপ পেলে অনুমোদনের জন্য ক্যাবিনেটে পেশ করা। এই বিষয়ে রয়টার্সের তরফে অর্থ মন্ত্রকে যোগাযোগ করা হলেও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি মন্ত্রকের তরফেও পৃথকভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। সম্প্রতিক সময়ে একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সংযুক্তিকরণের সাক্ষী থেকেছে দেশ।

সাম্প্রতিক বছর গুলিতে এক টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলেছে ভারতীয় অর্থনীতি। তার মধ্যে গত কয়েক মাসের টানা লকডাউনে সরকারের আয়ের পথ ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে। উলটো দিকে খরচ বাড়তে থাকার ঘটনা অর্থমন্ত্রকের আধিকারিকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। আর্থিক ঘাটতির মাত্রা বহু আগেই পার করে গিয়েছে সরকার। চলতি বছর তার পরিমাণ জিডিপি-র ৭ শতাংশে পৌঁছে যেতে পারে বলে অর্থনীতিবিদের একাংশ সমীক্ষায় জানিয়েছেন। এই পূর্বাভাস সত্যি হলে এমন পরিস্থিতি ১৯৯৪ সালে শেষবার দেখা হয়েছিল।

এই পরিস্থিতিতে বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৩.৫ শতাংশের মধ্যে বেঁধে রাখতে সরকারি সম্পত্তি বিক্রি করে ২.১ লক্ষ কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা গত ফেব্রুয়ারি মাসেই নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাষ্ট্রায়ত্ত এয়ার ইন্ডিয়া এবং ভারত পেট্রোলিয়াম বিক্রির ব্যপারে তেড়েফুঁড়ে ময়দানে নেমেছিল সরকার। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি সরকারের সমস্ত ভাবনা সাময়িকভাবে ওলটপালট করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আয়ের পথ অব্য়াহত রাখতে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি করা সরকারের কাছে এক প্রকার বাধ্যবাধকতায় পরিণত হয়েছে বলে মত অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#banks, #Narendra Modi, #Nirmala Sitharaman

আরো দেখুন