শ্রমিক পরিবারের সন্তানদের জন্য স্কলারশিপের ব্যবস্থা রাজ্যসরকারের
স্বাস্থ্যবিমার পর এবার সন্তানদের পড়াশোনার খরচ। রাজ্যের অসংগঠিত ক্ষেত্রে নথিভুক্ত সওয়া কোটি শ্রমিক পরিবারকে এই সুবিধা দিতে চলতি নিয়মে আমূল বদল আনতে চাইছে শ্রমদপ্তর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই শ্রমিক পরিবারের সন্তানদের জন্য খুলে যাচ্ছে রাজ্যের যাবতীয় শিক্ষা সংক্রান্ত বৃত্তি বা স্কলারশিপের সুবিধার দরজা। এতদিন তা কেবল নির্দিষ্ট ও স্বল্প পরিমাণ টাকার অঙ্কে সীমাবদ্ধ ছিল। এবার নিম্ন থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত অন্তত ২৫টি স্কলারশিপের সুবিধা পাবেন আবেদনকারীরা।
দপ্তর সূত্রের খবর, বর্তমানে বিভিন্ন অসংগঠিত ক্ষেত্র, স্বনিযুক্তি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত নথিভুক্ত শ্রমিক ও কর্মীর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ২৮ লক্ষ। এর মধ্যে নির্মাণ শ্রমিকই ৪০ লক্ষের কাছাকাছি। পরিবহণ শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৪ লক্ষ। কমপক্ষে ৮৫ লক্ষ কর্মী বাকি ৪৬টি অসংগঠিত ক্ষেত্র ও ১৫টি স্বনিযুক্তি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। ২০১৭ সালে অসংগঠিত শ্রমিকদের বিভিন্ন আইন এবং সুবিধাগুলিকে এক ছাতার তলায় এনে সামাজিক সুরক্ষা যোজনা চালু করেন মুখ্যমন্ত্রী। শুরু হয় সামাজিক মুক্তি কার্ড দেওয়ার কাজ। গত তিনটি আর্থিক বছরে সেই প্রকল্পে সন্তানদের পড়াশোনার খরচ চালাতে আবেদন করেছেন ৪ লক্ষ ১৭ হাজারের মতো শ্রমিক। এ বাবদ মোট ২৭০ কোটি খরচ হয়েছে। জানা গিয়েছে, দপ্তরের দেওয়া এই পরিসংখ্যানে সন্তুষ্ট হয়নি নবান্ন। আবেদনকারীদের সংখ্যা এত কম হওয়ার কারণ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়। পর্যালোচনা শেষে দপ্তর জানায়, সামাজিক সুরক্ষা যোজনায় শিক্ষা খাতের নির্দিষ্ট অর্থ গ্রহণ করলে সন্তানদের জন্য রাজ্যের অন্য কোনও প্রকল্পের সুবিধা পান না আবেদনকারীরা। সরকারি নির্দেশেই এই বাধা রয়েছে। এরপর মুখ্যমন্ত্রীর সদিচ্ছাকে সম্মান দিতে চলতি নিয়ম তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিবর্তে শিক্ষা, এসসি-এসটি, নারীকল্যাণ সহ বিভিন্ন দপ্তরের অন্তত ২৫টি স্কলারশিপে শ্রমিকদের বাড়তি সুবিধা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। মূলত শিক্ষাদপ্তরের অন্তর্গত স্বামী বিবেকানন্দের নামাঙ্কিত বৃত্তি প্রকল্পে এই সুবিধা মিলবে বলে মনে করছেন আধিকারিকরা।
দপ্তর সূত্রে আরও খবর, সম্প্রতি অসংগঠিত শ্রমিকদের নিয়ে গঠিত তিনটি বোর্ডের বৈঠকে বিনা বিরোধিতায় এই পরিকল্পনা অনুমোদিত হয়েছে। এবার অর্থদপ্তরের কাছে এব্যাপারে প্রস্তাব পাঠানো হবে। একইভাবে এই বিপুল সংখ্যক শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় আনার জন্যও প্রস্তাব যাচ্ছে নবান্নে। অর্থদপ্তর সিলমোহর দিলে শীঘ্রই এই নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করবেন মমতা।