বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

বাঙালির গোড়ায় গলদকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়

August 2, 2020 | 2 min read

আজকের এই আরামপ্রিয় বাঙালির দুরাবস্থার কথা ১০০ বছর আগেই অনুমান করে, এই জাতিকে বার বার যিনি পথ নির্দেশ করেছেন তিনি আর কেউ নন, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়। চাকরি এবং ডিগ্রী প্রিয় বাঙালির ভবিষ্যৎ তিনি লিখে গেছেন “ অন্ন  সমস্যা ও বাঙালির নিশ্চেষ্টতা ” প্রবন্ধে ।

রবীন্দ্রনাথের সমসাময়িক ১৮৬১ সালে জন্মেও আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র বাঙালির মনকে বুঝতে একটুও ভুল করেননি। তিনি বার বার “ডিগ্রিপ্রিয়, চাকরি প্রিয় বাঙালিকে” “বিলাসের আরামশয্যা” থেকে জাগাবার চেষ্টা করে গেছেন, তাদের দোষ ত্রুটি শুধরে নিতে পথনির্দেশ করেছেন। বাঙালি “আলস্যের নিদ্রায় সুখের স্বপ্ন” দেখে, “বুদ্ধির অহংকারে অন্ধ হইয়া” জীবন সংগ্রামে ফাঁকি দেয়। ফলে “বাঙালি সকল দিকের সকল ক্ষেত্র হইতে পরাজিত হইয়া পশ্চাদপদ  হইতেছে”।

“মাড়োয়ারি, ভাটিয়া, দিল্লীওয়ালা ব্যবসাবাণিজ্যের সকল ক্ষেত্র করতলগত করিতেছে , আর আমরা বাঙালিরা তাদের হিসাব লিখিয়া মাসমাহিনা লইয়া পরমানন্দে কলম পিষিতেছি। বাঙালি শ্রমজীবির দশাও কিছু ভাল নহে।”

আচার্য স্যর প্রফুল্লচন্দ্র একজন আদ্যন্ত বাঙালি । “বাংলাদেশে বিবিধ শিল্পোন্নতি বিধানের এবং ব্যবসায় বাণিজ্য প্রসারের প্রচেষ্টায়” তাঁর উৎসাহ ছিল অদম্য । তাই তিনি বাঙালির চরিত্রের গলদ কোথায় তা শত বর্ষ আগেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন । একশ বছর আগেই লিখে গেছেন – “প্রকৃত ব্যাপার এই শিক্ষাপ্রণালীর কোথাও একটা মস্ত গলদ রহিয়া গিয়াছে।” কার্যক্ষেত্রে “পাস করা বুদ্ধি” প্রায়ই “অকেজো হইয়া দাঁড়ায়।”

লিখেছেন- “আমরা দোকান করিয়া ফেল মারি । কারণ সর্বপ্রকার কষ্ট সহ্য করিয়া কৃতিত্ব অর্জনের প্রয়াস আমাদের যুবক গণের মধ্যে দেখা যায় না।”

প্রফুল্লচন্দ্র বাঙালি জাতিকে যথাযথ ভাবেই চিনতে পেরেছিলেন। তাই লিখলেন “আমাদের জীবনটা যেন দিনগত পাপক্ষয় ।শুধু আলস্যের আরাম শয্যায় শয়ন করিয়া আমরা পদে পদে মনুষ্যত্বের লাঞ্ছনা ও অবমাননা করিতেছি । আজ বাঙালির পরাজয় পদে পদে।”

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bengalis, #prafulla chandra sen

আরো দেখুন