এইচ-১বি ভিসা নিয়ে নয়া অর্ডারে সই ট্রাম্পের, বিপাকে ভারতীয়রা
কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে আমেরিকার সংস্থাগুলি যাতে স্বদেশীয়দের অগ্রাধিকার দেয়, তার জন্য বহুদিন ধরেই সওয়াল করে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সাধারণ নির্বাচনের আগে এবার ‘মার্কিন জনতার স্বার্থে’ সোমবার এইচ-১বি ভিসা সংক্রান্ত এগজিকিউটিভ অর্ডারে স্বাক্ষর করলেন তিনি। এর ফলে ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের আমেরিকায় কাজ করার সুযোগ পাওয়া আরও কঠিন হয়ে গেল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাছাড়া, এই ভিসায় কাজ করা কর্মীদের চুক্তি বাতিল করার কাজও সহজ হবে বলে তাঁদের মত। মার্কিন সংস্থাগুলি এইচ-১বি ভিসার মাধ্যমে ভারত ও চীন থেকে তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী নিয়োগ করে থাকে। এই প্রবণতা রুখতে গত ২৩ জুন এইচ-১বি ভিসা সহ সব ধরনের ওয়ার্ক ভিসা চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সাসপেন্ড করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই সোমবার এইচ-১বি ভিসা সংক্রান্ত নুতন নির্দেশিকায় স্বাক্ষর করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এর ফলে ফেডারেল এজেন্সিগুলি আর কন্ট্রাক্ট বা সাব কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে এইচ-১বি ভিসাধারীদের নিয়োগ করতে পারবে না।
এই নির্দেশে সই করার আগে হোয়াইট হাউসের ওভাল হাউসে ট্রাম্প বলেন, ‘ফেডারেল সরকার একটি সহজ নিয়মকে গুরুত্ব দিয়েছে, তা হল নিয়োগের ক্ষেত্রে আমেরিকানদের অগ্রাধিকার।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এইচ-১বি ভিসা নীতির সংশোধন করছি, যাতে আমেরিকানদের কখনও অন্যত্র যেতে না হয়। আমেরিকায় যাতে কাজের সুযোগ তৈরি হয়, সেই লক্ষ্যে শুধুমাত্র উচ্চ মেধার দক্ষ কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে এইচ-১বি ব্যবহার করা উচিত। সাধারণ আমেরিকানদের কাজ ধ্বংস করে সস্তায় শ্রমিক আমদানির জন্য এই সুযোগের ব্যবহার করা যাবে না।’ সূত্রের খবর, এইচ-১বি ভিসা নিয়ে আমেরিকায় কাজ করা ব্যক্তিদের মধ্যে ৭০ শতাংশই ভারতীয়।
সম্প্রতি ২০ শতাংশ তথ্য-প্রযুক্তি সংক্রান্ত কাজ আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে করার সিদ্ধান্ত নেয় মার্কিন সংস্থা টেনেসি ভ্যালি অথরিটি (টিভিএ)। এর ফলে বহু দক্ষ আমেরিকান কর্মী কাজ হারান। সেই কাজ পান সস্তার বিদেশি শ্রমিকরা। এই ঘটনার পরেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন ট্রাম্প। সোমবারও সেই ক্ষোভের কথা জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, তিনি মেধাভিক্তিক অভিবাসনের পক্ষে। সস্তার বিদেশি শ্রমিকদের জন্য কঠোর পরিশ্রমী আমেরিকানদের কাজ চলে যাওয়া বরদাস্ত করা হবে না। ট্রাম্প এদিন স্পষ্টই বলেছেন, কারও ভালো লাগতে পারে, কারও খারাপ লাগতে পারে। কিন্তু মেধাভিত্তিক নতুন অভিবাসন নীতি আনা হবে।
ট্রাম্পের এগজিকিউটিভ অর্ডারে সইয়ের পরে এবার ফেডারেল এজেন্সিগুলি অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা করে ১২০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেবে। মার্কিনিদের স্বার্থ সুরক্ষিত রেখে যাতে নিয়োগ করা যায়, তা ফেডারেল এজেন্সিগুলিকে দেখতে বলা হয়েছে।