‘প্রতারিত ও প্রত্যাখ্যাত হয়ে আমার ছেলে আত্মহত্যা করতেও পারে’!- সুশান্তের বাবা কে কে সিং
সুশান্ত সিং রাজপুতের বাবা কে কে সিং রাজপুত মুম্বই পুলিশকে বলেছিলেন পারিপার্শ্বিক চাপ এবং বার বার প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর আমার ছেলে আত্মহত্যা করতেই পারে। মুম্বই পুলিশকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনই বলেছিলেন অভিনেতার বাবা। এমনকী একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেও ওই কথা বলেছিলেন কেকে সিং। তাঁর কথা অনুযায়ী ‘আমার ছেলে কেন আত্মহত্যা করল তা আমি সত্যিই জানি না। কোনওদিন মানসিক চাপ বা হতাশার কথা বলেনি’।
‘ওর মৃত্যু নিয়ে আমার কোনও অভিযোগ নেই। হয়তো ওর মনেও কোনও চাপা হতাশা ছিল, যেখান থেকে এরকম একটা সিদ্ধান্ত নিতে ও বাধ্য হল। তবে ছেলের মৃত্যুর একমাস পরে তিনি পটনা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন রিয়া চক্রবর্তী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে। চক্রবর্তী পরিবারের বিরুদ্ধে ওই এফআইআরে লেখা ছিল, অভিনেতার থেকে প্রচুর টাকা হাতিয়ে নেন রিয়া। তাঁকে নিয়মিত জোর করে কড়া ডোজের ড্রাগ খাওয়ানো হত। তাঁর ছেলেকে এভাবেই আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয় রিয়া ও তাঁর পরিবার। আর এই সুযোগে অভিনেতার বাড়ি থেকে বেশ কিছু দামি সামগ্রীও হাতিয়ে নেয় রিয়া। তবে কে কে সিং আরও দাবি করেছেন, ছেলের মৃত্যুর পর তিনি মুম্বই পুলিশকে যা যা বলেছিলেন সেগুলো সবই মরাঠিতে লেখা হয়।
বার বার অনুরোধ করার পরও অন্য ভাষায় লেখা হয়নি। তবে মুম্বই পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল, তিনি যা যা বলছেন সেসব কিছুই লেখা হয়েছে ওই বয়ানে। এরপর কে কে সিংকে দিয়ে তা সইও করিয়ে নেওয়া হয়’। সেদিন কে কে সিং বলেছিলেন, আমার ছেলে সুশান্ত ১৩ মে ২০১৯ মুম্বি থেকে পটনা এসেছিল মুন্ডন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। আবার ১৬ তারিখ ফিরে যায় মুম্বইতে। এরপর আমার ওর সঙ্গে ফোনে কথা হত কম। হোয়্যাটসঅ্যাপেই কথা হয় বেশি।
তবে রিয়া চক্রবর্তী প্রথম থেকেই তাঁর ছেলের মানসিক সমস্যাকে গোপন করে গিয়েছে। রিয়া যে তাঁর চিকিৎসা করাচ্ছেন তা যেমন জানায়নি তেমনই ও যে ওষুধ খাওয়াত সে কথাও কোনও দিন বলেনি। তবে যে সময় তাঁর এই বয়ান রেকর্ড করা হয় তখন সেখানে উপস্থিত ছিল জামাই ওপি সিং, যিনি হরিয়ানা পুলিশের সিনিয়র পুলিশ অফিসার এং তাঁর স্ত্রী নিতু সিং। এমনকী তাঁদেরও বয়ান রেকর্ড করা হয়েছিল। তবে কে কে সিংয়ের আগে সুশান্তের দিদি প্রিয়াঙ্কা ও মিতুও নিজেদের বক্তব্য পুলিশকে জানিয়েছেন। তাঁরা দু’জনেই স্বীকার করেছেন যে, সুশান্ত জানিয়েছিলেন যে তিনি হতাশায় ভুগছেন এবং ২০১৩ সালে তিনি একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেন।
তবে এরপর তদন্তভার যায় সিবিআই এর হাতে। সিবিআই নিজের মতো করে তদন্ত করতে শুরু করে। এমনকী এই মামলায় পাওয়া গিয়েছে ড্রাগের যোগ। ফলে এনসিবিও আলাদা করে একটি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। ইতোমধ্যে দুজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। সিবিআই জেরা করেছে রিয়া চক্রবর্তী ও তাঁর পরিবারকে। একাধিকবার সিদ্ধার্থ ও সুশান্তের বাড়ির দুই কর্মীকেও বারবার জেরা করা হয়েছে। উঠে এসেছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।