ভ্রমণ বিভাগে ফিরে যান

ঘুরে আসুন করুণার সিন্ধু বিদ্যাসাগরের জন্মভিটে থেকে

September 26, 2020 | 2 min read

উনিশ শতকের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মভুমি বীরসিংহ গ্রামটির নামের সঙ্গে স্কুলের পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে পরিচিত অধিকাংশ বঙ্গসন্তান। মেদিনীপুর শহর থেকে অথবা চন্দ্রকোণা রোড থেকে সহজেই আসা যায় এখানে। ক্ষীরপাই-ঘাটাল সড়কে বীরসিংহ মোড় থেকে বীরসিংহ গ্রাম ৫ কিলোমিটার পথ। এটি ঘাটাল থানার অন্তর্গত। মূল সড়কে নিয়মিত বাস চলে। মোড় থেকে ট্রেকার বা রিকশায় খুব সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায়। 

আগের মতো পথ আর এখন নেই, প্রশস্ত পিচ রাস্তা চলে গেছে গ্রাম অবধি। জন্মস্থানে বিদ্যাসাগরের প্রাচীন বসতবাটির কোনও চিহ্ন আজ আর নেই। তাঁর সেই মাটির বাস্তুভিটেয় গড়ে উঠেছে বিদ্যাসাগর স্মৃতিমন্দির। বিদ্যাসাগর স্মৃতি সংরক্ষণ সমিতির দ্বারা বিদ্যাসাগর স্মৃতিমন্দিরের উদ্বোধন হয় ১৭ মার্চ, ১৯৪০। উদ্বোধক ছিলেন প্রখ্যাত সাংবাদিক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়।

১২২৭ বঙ্গাব্দের ১২ই আশ্বিন বিদ্যাসাগরের জন্ম হয়। বিদ্যাসাগরের পিতৃপুরুষের আদি বাসস্থান ছিল হুগলি জেলার বনমালীপুর। তাঁর পিতামহী দুর্গামণি দেবী স্বামী রামজয় তর্কভূষণের তীর্থ ভ্রমণকালে আপন পিতৃগৃহে বীরসিংহ গ্রামে পুত্র ঠাকুরদাস ও অন্যান্য সন্তান-সহ বাস করতে শুরু করেন। ঠাকুরদাস ও ভগবতী দেবীর প্রথম সন্তান হলেন বিদ্যাসাগর। 

উল্লেখ্য, বিদ্যাসাগর যখন জন্মগ্রহণ করেন তখন বীরসিংহ গ্রাম হুগলি জেলার ক্ষীরপাই মহকুমার অন্তর্গত ছিল। পরে ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে চন্দ্রকোণা ও ঘাটাল থানা মেদিনীপুর জেলায় অন্তর্ভুক্ত হলে বীরসিংহ মেদিনীপুর জেলায় চলে আসে।

স্মৃতিমন্দিরের সঙ্গেই রয়েছে গ্রন্থাগার ও সংগ্রহশালা। সংগ্রহশালায় বিদ্যাসাগরের জীবনী ছোট ছোট পুতুলের দ্বারা সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বিদ্যাসাগরের ব্যবহৃত বাক্স, তোরঙ্গ, ছড়ি ইত্যাদি ছাড়াও রয়েছে তাঁর ব্যবহৃত বইপত্র। যেখানে তিনি ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন সেখানে একটি মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। স্মৃতি মন্দিরের সামনে ছোট উদ্যান তৈরি হয়েছে, রয়েছে বিদ্যাসাগরের সুন্দর মূর্তি।

এখানে ঘুরে দেখে নেওয়া যায় বিদ্যাসাগরের স্মৃতিবিজড়িত শচী বামনার পুকুরপাড়, শৈশবের খেলাধুলার স্থান, মায়ের নামে ভগবতী বিদ্যালয়, ছাত্রাবাস ও দাতব্য চিকিৎসালয়। এটি বর্তমানে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র হয়েছে। এছাড়া পাঠশালা বা প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালিকা বিদ্যালয়, বিদ্যাসাগর মেমোরিয়াল হল, গ্রামীণ পাঠাগার, ঠাকুরদাস মঞ্চ, সুবৃহৎ দিঘি ও পিরের স্থান রয়েছে। প্রতি বছর বিদ্যাসাগর মেলায় দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এই পুণ্যভূমে আসেন। কয়েক দিন ধরে নানান অনুষ্ঠান ও মেলা হয়।

কোথায় থাকবেন?

বীরসিংহে থাকার জায়গা নেই, চন্দ্রকোণা রোড অথবা মেদিনীপুর শহরে রাত্রিবাস করে বীরসিংহ ঘুরে নেওয়া যায়।

মেদিনীপুরে থাকার ঠিকানা হল—রানি শিরোমণি পর্যটক আবাস, ডাকবাংলো রোড,মেদিনীপুর, দূরভাষ-০৩২২২-২৬৬৫৮৮, চলভাষ- ৯৭৩২৫১০০৭৪।

চন্দ্রকোণা রোডে থাকার ঠিকানা হল—গীতাঞ্জলি লজ অ্যান্ড হোটেল, সাতবাঁকুড়া, চন্দ্রকোণা রোড, দূরভাষ- ০৩২২৭- ২৮২৩২২।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Ishwar Chandra Vidyasagar

আরো দেখুন