লাদাখ সীমান্তে মোতায়েন ৬০ হাজার চীনা সেনা, দাবি মার্কিন কর্তার
লাদাখ সহ ভারতের উত্তর সীমান্তজুড়ে ৬০ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে চীন। বারংবার দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সত্ত্বেও বেজিংয়ের এই আগ্রাসী মনোভাবের কোনও পরিবর্তন হয়নি। যা শুধু ভারত নয়, তাদের বন্ধুরাষ্ট্রগুলির কাছেও একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। শুক্রবার এমনই মন্তব্য করেছেন মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেও। ভারতের সীমান্তে লালফৌজের তৎপরতা নিয়ে এর আগেও সরব হয়েছে আমেরিকা। এবার আরও একধাপ এগিয়ে পম্পেও বলেছেন, এই লড়াইয়ে সর্বতোভাবে ভারতের পাশে থাকা প্রয়োজন। শুধু তারা নয়, জাপান-অস্ট্রেলিয়াও থাকছে নয়াদিল্লির পাশে।
আরও মারাত্মক বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়েন। তাঁর অভিযোগ, লাদাখ নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে আলোচনার আর কোনও প্রয়োজন কিংবা অবকাশই নেই। একথা স্বীকার করার সময় এসে গিয়েছে। যাবতীয় বৈঠক ও আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। শান্তি স্থাপনের কোনও সদিচ্ছা নেই চীনের।
স্বয়ং মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার এই মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। লাদাখ সঙ্কট যে আলোচনার বাইরে চলে গিয়েছে, নিশ্চিতভাবেই এই মর্মেই ট্রাম্প সরকারকে রিপোর্ট দিয়েছেন তিনি। এর একটাই অর্থ— সংঘাত অবশ্যম্ভাবী। মে মাসে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করে ভারতের মাটিতে প্রবেশ করে লালফৌজ। তারপর থেকে দফায় দফায় ভারত ও চীনের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। নিহত হয়েছে দু’পক্ষের বহু জওয়ান। লাদাখের পাশাপাশি সিকিম ও অরুণাচল সীমান্তেও আগ্রাসীভাবে সেনা মোতায়েন করেছে চীন। কিন্তু হঠাৎই আমেরিকা এর মধ্যে ঢুকে জানিয়ে দিল, যা ভাবা হচ্ছিল, পরিস্থিতি মোটেই সেরকম নয়। ৬০ হাজার সেনার বিপুল বাহিনী নিয়ে এসেছে বেজিং। পরিসংখ্যান রীতিমতো উদ্বেগজনক। সন্দেহ করা হচ্ছে, আসন্ন শীতের ঋতুতে বড়সড় কোনও পরিকল্পনা নিয়ে এগচ্ছে চীন।
একই মত ও’ব্রায়েনের। নয়াদিল্লির সুরেই তিনি বলেছেন, চীন যে ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ প্রকল্প হাতে নিয়েছে, তার অন্তর্গত অনেক পরিকাঠামো নির্মাণের পরিকল্পনাই সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়। চীনের অন্য কোনও প্ল্যান আছে।
সম্প্রতি ভারত, আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া মিলে গঠিত হয়েছে চার দেশের একটি অক্ষ। এই আন্তর্জাতিক কমিটির নাম কোয়াড্রিল্যাটারাল সিকিউিরিটি ডায়ালগ। ইতিমধ্যেই একাধিকবার ভারত মহাসাগরে নৌসেনা মহড়া করেছে এই চার দেশ। গত মঙ্গলবার করোনার মধ্যে এই প্রথম জাপানের টোকিওতে এই কোয়াডের বৈঠকে অংশ নেন চার দেশের বিদেশমন্ত্রীরা। বৈঠকের অন্যতম আলোচ্য বিষয়ই ছিল চীন। সেই বৈঠক সেরে ফিরেই মার্কিন বিদেশ সচিবের হুঁশিয়ারি, ভারত সীমান্তে ৬০ হাজার সেনা মোতায়েন করে রক্তচক্ষু দেখানোর জন্য চরম মূল্য দিতে হতে পারে বেজিংকে!