রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

একগুচ্ছ নির্দেশ-অনুরোধ মমতার, কী বললেন তিনি? জানুন

October 13, 2020 | 2 min read

‘এ বার বিজয়ায় প্রণাম নয়, নমস্কার করুন। মাস্কটা অবশ্যই পরুন।’ ‘টিভি চ্যানেলগুলোকে বলছি, উত্তর বনাম দক্ষিণে ভিড়ের লড়াই এ বার দেখাবেন না। বরং, যে পুজোগুলো কোভিড প্রোটোকল ভালো করে মানবে, সেই পুজো বেশি করে দেখান।’ সোমবার এ ভাবেই রাজ্যে পুজো-সতর্কতার সুর বেঁধে দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর মঙ্গলবার নবান্ন থেকে আবার তিনি বললেন, ‘উত্তরপ্রদেশে তো দুর্গাপুজোয় কোনও অনুমতিই দেওয়া হয়নি। দিল্লিতে মাত্র একটা ‌পুজো অনুমতি পেয়েছে। সারা দেশের কোথাও দুর্গাপুজো করার অনুমতি নেই। কিন্তু বাংলায় লক্ষ লক্ষ দুর্গাপুজো হয়। আমরা কিন্তু কোথাও বন্ধ করিনি। করবও না। কিন্তু করোনার এই সময়ে নিয়ম মেনে চলুন সকলে। ভাইরাস যাতে না ছড়ায়, সেই দিকে লক্ষ্য রাখুন।’

শুধু তাই নয়, এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আগামী সোমবার মানে তৃতীয়া থেকেই পুজো শুরু হয়ে যাচ্ছে। সবাই ভাল ভাবে পুজো কাটাবেন। কিন্তু সবার কাছে একটাই অনুরোধ করব, প্রত্যেকে মাস্ক পরে বাইরে বেরোন। এখন কিন্তু আগের থেকে সংক্রমণ অনেকটাই বাড়ছে। গোষ্ঠী সংক্রমণও হচ্ছে অনেক জায়গায়। বাতাসেও ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস।’

সেইসঙ্গেই পুজো কমিটিগুলির কাছে তিনি অনুরোধ করে বলেন, ‘পুজো কমিটিগুলির কাছে আবেদন করছি, মণ্ডপের মাইকে প্রচার করুন। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, অযথা ভিড় না বাড়ানোর কথা বলে যান। আর মণ্ডপে অবশ্যই মাস্ক পরে ঢোকার নিয়ম রাখুন। ভলান্টিয়ার যাঁরা থাকবেন, তাঁদের কাছেও আমার অনুরোধ, যাঁরা মাস্ক পরবে না তাঁদের মণ্ডপে ঢোকার অনুমতি দেবে না। যদি সম্ভব হয় তাঁদের মাস্ক দিন। ‘

একদিকে, সাধারণ মানুষ ও পুজো কমিটিকে তিনি আর্জি জানাচ্ছেন করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ভিড়ের আড়ম্বর এড়িয়ে মাস্ক ও দূরত্ববিধির মতো সতর্কতার শর্ত মেনে চলতে। অন্য দিকে, তিনি নিজেও সংযমের পরিচয় দিচ্ছেন, অন্যান্য বছরের মতো এ বার সরাসরি পুজোপ্রাঙ্গণে না-গিয়ে নবান্ন থেকে মণ্ডপে মণ্ডপে ভার্চুয়ালি বিভিন্ন পুজো উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। প্রতি বছরই বহু মন্ডপে ‘ক্রাউড পুলার’ মমতার উদ্বোধন ঘিরে জনজোয়ার সৃষ্টি হয়। জনস্বার্থে এ বার সে পথে হাঁটছেন না মুখ্যমন্ত্রী নিজেই।

সোমবারই তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন, ‘পুজো উপভোগ করুন, কিন্তু ভিড়ের মধ্যে যাবেন না। মাস্ক ছাড়া যাবেন না। মাস্ক পাতলা হলে আরও একটা পরুন, পারলে গ্লাভস পরবেন। নইলে দু’হাত ঢেকে যাবেন।’ তিনি বলেন, ‘এই সময়টা কোভিড লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। একটা পরিবারে একজনের হলে চার-পাঁচ জনের হয়ে যাচ্ছে। গোষ্ঠী সংক্রমণ হচ্ছে। আন্তর্জাতিক ও আন্তর্রাজ্য সীমান্ত চালু হয়েছে। বাইরে থেকে লরি, প্লেন,বিশেষ ট্রেন সবই চলছে। বাইরের লোকের আসা-যাওয়া শুরু হয়েছে। আমাদের ‘সাফার’ করতে হচ্ছে। পুজোর জন্য কেনাকাটা বেড়ে গেছে। কিন্তু মাস্ক অবশ্যই পরবেন। শারীরিক দূরত্ব মানুন, হাত ধোবেন।’

মমতার মতে, ‘এ বার অনেক পুজো মণ্ডপ তৈরির কাজ এখনও চলছে। উদ্বোধন ঘিরে ভিড়ের জন্য সিদ্ধান্তই নিতে পারছি না। প্রতিবার উদ্বোধন আমার ভালোই লাগে। কিন্তু এ বার পুজো উদ্যোক্তাদের কাছে আবেদন জানাই, ভিআইপি না-নিয়ে এসে উদ্বোধন নিজেরাই করুন। এ বার পুজো কার্নিভাল করা যাচ্ছে না।’

বিজয়া নিয়েও সতর্ক করেছেন মমতা। বলেছেন, ‘বিজয়ায় আমার কাছেও সবাই আসে। বিজয়াটাও নিজে সামলে করতে হবে। বাড়িতে বাড়িতে নিজেরা নিজেরা বিজয়া করুন। দেখা হলে হাতজোড় করে নমস্কার করুন। একসঙ্গে গিয়ে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করা যাবে না। রমজান, ঈদের সময় দেখেছি, সবাই বাড়িতে উৎসব করেছে। সহযোগিতা করেছে আমাদের সঙ্গে। উৎসব করুন শৃঙ্খলা মেনে। নিজেকে ও সমাজকে বাঁচিয়ে।’

পুজোর মরসুমে সতর্কতার অঙ্গ হিসেবে কোভিডে প্রয়াত তাঁর দলের বিধায়ক তমোনাশ ঘোষ ও গুরুপদ মেটের উদাহরণ দিয়ে মমতা জানান, তাঁরা চার-পাঁচ দিন জ্বর সত্ত্বেও প্রথম দিকে ‘নেগলেক্ট’ করেছিলেন। সে রকম করলেই বিপদ ঘনিয়ে আসবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Guidelines, #Durga Puja 2020, #Mamata Banerjee

আরো দেখুন