রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকে অবস্থানে অনড় রাজ্য

December 19, 2020 | 2 min read

আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়

তিন আইপিএস অফিসারকে(IPS Officers) কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে (Central Deputation) পাঠানো হবে না। সংঘাতের রাস্তায় অনড় রইল রাজ্য। শুক্রবার সন্ধ্যায় ভিডিও কনফারেন্সে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লাকেও (Ajay Bhalla) সে কথা জানিয়ে দিলেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়(Alapan Banerjee)। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক(HMO) সূত্রে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, গোটা আলোচনা ছিল হৃদ্যতাপূর্ণ। কোনও উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয় বাড়ানো নিয়ে আলোচনা চলেছে। তবে এতকিছুর পরও রাজ্যের (West Bengal) অবস্থান মেনে নেওয়ার ব্যাপারে কোনও ইঙ্গিত কেন্দ্রের তরফ থেকে মেলেনি। আর তাই, সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার রাস্তা খোলা রাখছে নবান্ন। সেব্যাপারে আলোচনাও চালাচ্ছে স্বরাষ্ট্র দপ্তর। তামিলনাড়ুর উদাহরণও রয়েছে হাতের কাছে। সেই রায়কে হাতিয়ার করে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে দরবারের পক্ষপাতী রাজ্য সরকার। কিন্তু তিন আইপিএসকে কোনওমতেই ছাড়া হবে না।
গত ১০ ডিসেম্বর ডায়মন্ডহারবারে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডার কনভয়ে হামলার পরই নড়েচড়ে বসেছে দিল্লি। নাড্ডার যাত্রাপথের দায়িত্বে থাকা তিন আইপিএস অফিসার—আইজি দক্ষিণবঙ্গ রাজীব মিশ্র, প্রেসিডেন্সি রেঞ্জের ডিআইজি প্রবীন ত্রিপাঠি এবং ডায়মন্ডহারবারের পুলিস সুপার ভোলানাথ পাণ্ডেকে কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে পাঠাতে বলা হয়। কিন্তু বেঁকে বসে নবান্ন। পাল্টা চিঠি দিয়ে তাঁদের না ছাড়ার কথা জানিয়ে দেওয়া হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে। সেইসঙ্গে ওই ঘটনার পর রাজ্য পুলিস কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তাও জানান মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরও তিন অফিসারকে এসএসবি, আইটিবিপি এবং বিপিআরডি’তে পোস্টিং দেয় মন্ত্রক। মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডিজি বীরেন্দ্রকে ডেকে পাঠানো হয় দিল্লিতে। কিন্তু তাঁরা আপত্তি জানান। শেষ পর্যন্ত এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা, আইবি-র ডিরেক্টর অরবিন্দ কুমার(Arvind Kumar) এবং অতিরিক্ত সচিব (অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা) পুণ্যসলিলা শ্রীবাস্তব (Punyasalila Srivastava)।
মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে বিশেষভাবে বলা হয় কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয় বাড়ানোর কথা। বিভিন্ন ইস্যুতে কোনও কো-অর্ডিনেশন না থাকার বিষয়টিও তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা। তাঁরা সাফ জানিয়েছেন, কেন্দ্র ও রাজ্য পরস্পরের প্রতিপক্ষ নয়। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় একজোট হয়ে কাজ করাই দস্তুর। সেইমতো এদিন রিয়েল টাইমে পারস্পরিক তথ্য বিনিময় ও আইনি সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে উঠে আসে নাড্ডার কনভয়ে হামলার প্রসঙ্গও। এই বিষয়ে সিআরপিএফের একটি রিপোর্ট উল্লেখ করা হয়। যেখানে পুলিসের গাফিলতির কথা বলা হয়েছে। রাজ্য পুলিসের ডিজি অবশ্য তা মানতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ভিভিআইপি নিরাপত্তার সবরকম ব্যবস্থা করা হয়। সেদিনও নেওয়া হয়েছিল। যা ঘটেছে তা দুর্ভাগ্যজনক।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের রাজ্য সফরের নিরাপত্তা নিয়েও কথা হয়েছে বৈঠকে। জোর দেওয়া হয়েছে গোয়েন্দা বার্তার উপর। কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা বলেন, আগামী দিনে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়বে। তাই এখন থেকে আরও বেশি সমন্বয় গড়ে তোলা দরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব বলেন, ভিভিআইপি নিরাপত্তার বিষয়টি জোর দিয়ে দেখতে হবে। আইনশৃঙ্খলার যেন কোনও অবনতি না হয়। এছাড়া সীমান্ত সহ যেসব জায়গায় অশান্তির সম্ভাবনা রয়েছে, সেদিকেও বিশেষ নজর দিতে হবে। রাজনৈতিক খুন নিয়েও দুশ্চিন্তার কথা উঠে এসেছে বৈঠকে। কিন্তু আইপিএসদের ছাড়া নিয়ে মুখ খোলেননি কেন্দ্রীয় কর্তারা। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#alapan bandyopadhyay, #west bengal government, #central Govt, #IPS

আরো দেখুন