ভ্রমণ বিভাগে ফিরে যান

নতুন বছরের প্রথম পিকনিক হোক অহলদারাতে

December 31, 2020 | 2 min read

শিলিগুড়ি শহর থেকে মাত্র পঁয়তাল্লিশ কিলোমিটার আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ ধরে দেড় থেকে দুঘন্টার মধ্যে আপনি পৌঁছে যাবেন স্বর্গের সদর দরজায়। দার্জিলিং জেলার এক অখ্যাত নির্জন পাহাড়ি জনপদ ‘অহলদারা’। নির্জন প্রকৃতির মাঝে, কাঞ্চনজঙ্ঘার কোলে মিঠে রোদ পোয়ানোর নাম ‘অহলদারা’। 

পাঁচ হাজার ফিট উচ্চতায়, হিমেল হাওয়ায় গুটিসুটি মারা নির্জন স্নিগ্ধ জীবন। এখানে এখনও সেভাবে পর্যটকদের বিপুল সমাগম শুরু হয়নি। আঁকাবাঁকা সরু পিচ রাস্তায় যে কোন সময় হারিয়ে যাওয়ার হাতছানি। হাত বাড়ালেই পাইন আর ধূপির সারবাঁধা ঘন সবুজ পাহাড়, এখানে এসে পৌঁছলেই মনে হবে — এই তো সেই স্বপ্নের প্রান্তিক স্টেশন !

অহলদারায় পৌঁছলেই আপনাকে অভ্যর্থনা জানাবে হিমেল হাওয়া আর সোনাঝুরি মিঠে রোদ। কাঞ্চনজঙ্ঘার অকল্পনীয় রূপ দেখবেন এই অহলদারা থেকে, কিন্তু দামাল মেঘেদের শাসন আপনাকে এই স্বর্গীয় রূপ আস্বাদনে মাঝে মাঝে বঞ্চিত করতে পারে — তাতে অবশ্য অসুবিধে হবে না আপনার, কারণ এই পাহাড়ি জনপদের অনন্য রূপে আপনি মুগ্ধ হয়ে যাবেন। 

পাহাড়ের গায়ে লেপটে রয়েছে গোটা কয়েক সুদৃশ্য কটেজ আর চারিদিকে পাইনঘেরা পাহাড়-পাহাড় আর পাহাড়। প্রতিনিয়ত শুনতে পাবেন সোঁ সোঁ – সাঁই সাঁই শব্দে বাতাসের তীক্ষ্ণ সুরেলা গান। এই কটেজগুলিই আপনাকে প্রকৃতি আর আপনার মধ্যে মেলবন্ধন ঘটানোর জন্য সাদর অভ্যর্থনা জানাতে প্রস্তুত হয়ে রয়েছে।

পাইনের একছত্র অধিকার, গম্ভীর পাহাড়ের নিস্তব্ধতার সুবিশাল প্রাচীন সাম্রাজ্য আর রংবেরংয়ের বিভিন্ন নাম নাজানা পাখিদের আপন দেশ এই অহলদারা। কটেজে বসে থাকতে পারবেন না, প্রতিনিয়ত আপনাকে হাতছানি দেবে সৌম্যসুন্দর কাঞ্চনজঙ্ঘা আর পাইনের মিছিল। বুনো গন্ধ গায়ে মেখে পাহাড় আর গাছেদের সংসারে আপনি সহজেই মিশে যাবেন সভ্যতার পোশাক খুলে ফেলে।

দুপুরের পর থেকেই ঘন নীল আকাশের দখল নিতে শুরু করবে দাপুটে দামাল মেঘের দল। শন শন হিমেল হাওয়া কাঁপন ধরিয়ে দেবে আপনাকে। পাখিদের কিচিরমিচির, মেঘেদের মাথায় মুকুটের মত নিঝুম পাহাড়শ্রেণী, পাহাড়ের ধাপে ধাপে চাষ করা ফসলের সবুজ আলপনা আর পাইনের জঙ্গলে আলো-আঁধারি — পবিত্র সন্ধ্যা নামার তোড়জোড় — এ যেন এক স্বর্গের সদর দরজা!!

কীভাবে যাবেন

শিলিগুড়ি থেকে সেবক রোড ধরে সেবক কালী মন্দির, করোনেশন ব্রীজ পার হয়ে কালীঝোড়া দিয়ে যাওয়া যায়। তবে করোনেশন ব্রীজ থেকে সিকিমের রাস্তায় সাত-আট কিলোমিটার এগোলেই ‘বিরিক’ মোড় দিয়ে যেতে পারেন, কারণ এই রাস্তায় প্রকৃতি তাঁর রূপের ডালি সজিয়ে বসে রয়েছেন আর রাস্তাও ভালো। 

বিরিক মোড় থেকে বাঁদিকের দেড়-দুহাজার ফিট খাড়া সরু রাস্তা তারপর সমতল। চার-পাঁচ কিলোমিটার যাওয়ার পর ‘সিটং’। ওখান থেকে দেড় কিলোমিটার এগোলেই পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ছোট্ট গ্রাম ‘শেলপু’ বাজার। এই ‘শেলপু’ হিলসেরই সানরাইজ ভিউ পয়েন্ট হচ্ছে ‘অহলদারা’। অহলদারার পাঁচশ মিটার নিচেই রয়েছে ‘নামথিং’ লেক।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#picnic, #new year picnic, #ahaldara

আরো দেখুন