মোদী সরকারের প্রথম তিন বছরের এনপিএ ৪.৫৬ লক্ষ কোটি, খতিয়ান দিল তৃণমূল
আজ তৃণমূল ভবন থেকে বিজেপি জমানায় কেন্দ্র সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদতে বিভিন্ন ব্যাঙ্কিং দুর্নীতির কথা তুলে ধরা হয়। সাংবাদিকদের কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা, সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court), আরবিআইয়ের বিভিন্ন রিপোর্ট ও নির্দেশিকা থেকে পরিসংখ্যান তুলে ধরেন সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় (Sukhendu Sekhar Roy)।
তিনি বলেন, গত দুই দশকে রাস্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের (Nationalized Bank) সংখ্যা ২১ থেকে কমে ১২ হয়েছে এবং কেন্দ্র পরিকল্পনা করছে এই সংখ্যা কমিয়ে ৪ করার। একই সময়ে রাস্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের অ্যাসেটের অনুপাত যেখানে ৭৮ শতাংশ থেকে কমে ৬১ শতাংশ হয়েছে, সেখানে বেসরকারি ব্যাঙ্কের অ্যাসেট ১০.৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩২ শতাংশ হয়েছে। পাশাপাশি শেয়ার অফ ডিপোজিট রাস্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে যেখানে ৭৬ শতাংশ থেকে কমে ৬৬ শতাংশ হয়েছে, সেখানে বেসরকারি ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে ১১ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৭ শতাংশ হয়েছে।
রাস্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের ব্যাড লোনের বিষয়ে তিনি বলেন, সেপ্টেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত ব্যাড লোন ছিল ৭.২৭ লক্ষ কোটি যার পরিমাণ এখন ৮.৫ লক্ষ কোটি টাকা। ব্যাঙ্ককেও প্রতি বছর রিফিনান্স করতে হচ্ছে। যে ১০০ জন সবথেকে বড় ডিফলটার, যাদের মোট ঋণ নেওয়ার পরিমাণ ৪ লক্ষ কোটি টাকা, তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ৬৫.৯৫ শতাংশ ব্যাড লোন একা দিয়েছে এসবিআই (SBI)। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও যেসব ব্যক্তি ও সংস্থা ইচ্ছাকৃত লোন খেলাফ করছে তাদের নাম ও ছবি প্রকাশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
সুখেন্দু বাবু প্রশ্ন করেন, ব্যাঙ্কে টাকা রাখা কতটা সুরক্ষিত? প্রতি ব্যাঙ্কের এনপিএ বাড়ছে। ১৮ই এপ্রিল ২০১৭ জারি করা আরবিআই গাইডলাইন মানছে না রাস্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্ক। এনপিএ (NPA) কম দেখাচ্ছে। এটি একটি দুর্নীতি। এর বিরুদ্ধে অবিলম্বে এসএফআইওর তদন্ত দাবী করেন তিনি।
এখন এমন অবস্থা এসে দাঁড়িয়েছে ব্যাঙ্ক কোনও লোন দিচ্ছে না। সরকার এই ধরণের আধিকারিকদের আড়াল করতে নিয়ম করেছে ব্যাড লোন ও এনপিএ পাস করানো আধিকারিকদের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া কোনও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না। তারা অদেয় ঋণ সরাসরি রাইট অফ করে দিচ্ছে। ২০১৪ সালের ৩১শে মার্চ পর্যন্ত মোট এনপিএর পরিমাণ ছিল ২.২৭ লক্ষ কোটি টাকা। নরেন্দ্র মোদী সরকার আসার পর মাত্র তিন বছরে অর্থাৎ ২০১৭ সালের ৩১শে মার্চ এই পরিমাণ বেড়ে হয় ৩১ মার্চ ৬.৮৩ লক্ষ্য কোটি টাকা। ব্যাঙ্ক উঠে গেলে মানুষ টাকা ফেরত পাবেন, এরকম কোনও নিশ্চয়তা সরকার দেয়নি।