ভারত ও ইউরোপের জন্য আলাদা নীতি, বিতর্কে হোয়াটসঅ্যাপ
ভারতের(India) জন্য একরকম নীতি। আর ইউরোপের(Europe) জন্য আর এক। ‘প্রাইভেসি পলিসি’(Privacy Policy) নিয়ে এবার নতুন অভিযোগের মুখে পড়ল মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ(WhatsApp)। ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার নয়া নীতি নিয়ে এই অ্যাপের বিরুদ্ধে দেশে ক্ষোভ ছিলই। নতুন অভিযোগটি সামনে আসার পর সেই ক্ষোভই আরও উস্কে দিয়েছে। ইউরোপে হোয়াটসঅ্যাপের পলিসি ডিরেক্টর নিয়াম সুইনির এক বক্তব্য সামনে আসার পরই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। অ্যাপের নতুন গোপনীয়তা নীতি প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ইউরোপের জন্য এই নতুন আপডেটে ডেটা শেয়ারিং (তথ্য ভাগ করে নেওয়া) পলিসিতে কোনও পরিবর্তন করা হচ্ছে না। তবে ভারতের ক্ষেত্রে নতুন নীতিই কার্যকর থাকবে। অর্থাৎ, ভারতে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের তথ্য অভিভাবক সংস্থা ফেসবুককে সরবরাহ করবে তারা। কিন্তু, ইউরোপে ব্যবহারকারীদের অনলাইন কেনাকাটা, আর্থিক লেনদেন বা লোকেশন সংক্রান্ত তথ্য আগের মতোই প্রকাশ করবে না হোয়াটঅ্যাপ।
বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, হোয়াটসঅ্যাপের এই ‘দুমুখো’ নীতির নেপথ্যে রয়েছে ইউরোপের একটি বিশেষ আইন। যার পোশাকি নাম ‘দ্য জেনারেল ডেটা প্রোকেটশন রেগুলেশন’, সংক্ষেপে জিডিপিআর। সোশ্যাল অ্যাপ ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষার জন্য ‘রক্ষাকবচ’ হিসেবে কাজ করে এই আইন। এই আইন ভাঙার জন্যই ২০১৭ সালে ফেসবুককে বিপুল অঙ্কের জরিমানা করেছিল ইউরোপিয়ান কমিশন। ফলে হোয়াটসঅ্যাপ যে ইউরোপের মাটিতে একটু সমঝে চলবে, সেটাই স্বাভাবিক। উল্টোদিকে, ভারতে কিন্তু এমন কোনও কড়া আইন নেই। কেন্দ্র ২০১৯ সালে ‘পার্সোনাল ডেটা প্রোটেকশন বিল’-এর প্রস্তাব দিয়েছিল বটে কিন্তু তা আর দিনের আলো দেখেনি। তবে, বর্তমানে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন নীতি নিয়ে দেশজুড়ে অসন্তোষ তৈরি হওয়ার পর ফের নড়েচড়ে বসেছে মোদি সরকার। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের অন্দরে এনিয়ে আলোচনাও হয়েছে। মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, এই নয়া পলিসিটি বিস্তারিতভাবে খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ, দেশের একটা বড় অংশের ব্যবহারকারী, যার মধ্যে কিছু বড় শিল্পপতিও রয়েছেন, এই বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এর ব্যাখ্যা চেয়ে এখনও হোয়াটসঅ্যাপের সঙ্গে যোগাযোগ করা না হলেও শীঘ্রই তা করা হবে বলেই মন্ত্রক সূত্রে খবর মিলেছে। হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার বলেছে, সরকারের যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দিতে সংস্থা তৈরি রয়েছে। পাশাপাশি নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখতে চেষ্টায় খামতি রাখছে না হোয়াটসঅ্যাপ। সংস্থাটি জানিয়েছে, ব্যবহারকারীদের সমস্ত তথ্য সুরক্ষিতই থাকবে। বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবহারকারীদের কোনও তথ্য ফেসবুককে দেওয়া হচ্ছে না।