আম্পানের ক্ষতিপূরণ – কেন্দ্রের বঞ্চনার শিকার বাংলা
আম্পান (Amphan) ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতিপূরণ হিসেবে নতুন করে আর কোনও অর্থ সাহায্য করা হল না বাংলাকে। অথচ গত বছর সাইক্লোন, বন্যা, কীটপতঙ্গের আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচটি রাজ্য পেল বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ। শনিবারই ওই রাজ্যগুলিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকে সহায়তা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ নেই। যাকে কেন্দ্রের বঞ্চনার তালিকায় নয়া সংযোজন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এদিন ৩ হাজার ১১৩ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি এবং মধ্যপ্রদেশকে। ২০২০ সালে এই পাঁচটি রাজ্য বন্যা, সাইক্লোন এবং পঙ্গপাল আক্রমণের শিকার হয়েছিল। সম্পদ, ফসল ও প্রাণহানির ক্ষতিপূরণ হিসেবে তাদের দেওয়া হচ্ছে কেন্দ্রের বিশেষ অতিরিক্ত আর্থিক প্যাকেজ। অন্ধ্রপ্রদেশ ও বিহার বন্যার ক্ষয়ক্ষতির কারণে এই সহায়তা পাচ্ছে। নিভার ও বুরেভি সাইক্লোনের জেরে আথির্ক সহায়তা দেওয়া হয়েছে পুদুচেরি ও তামিলনাড়ুকে। মধ্যপ্রদেশ পঙ্গপাল আক্রমণের জন্য ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে।
২০২০ সালের মে মাসে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশায় আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় আম্পান। বাংলার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে এসে এক হাজার কোটি টাকা তাৎক্ষণিক সহায়তা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তারপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দলও পশ্চিমবঙ্গে পাঠানো হয়। ক্ষয়ক্ষতি সরেজমিনে পরিদর্শন করে তারা। তার কয়েকমাস পর গত ১৪ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এরকমই একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী আম্পান ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতিপূরণ বাবদ পশ্চিমবঙ্গকে দেওয়া হয়েছিল ২ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা।
ছ’মাস বাদে এই প্যাকেজ পেয়ে চরম ক্ষুব্ধ হয় রাজ্য সরকার। নবান্নের তরফে কেন্দ্রীয় সরকারকে জানানো হয়, নিজেদের বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকেই ছ’মাসের মধ্যে ৬ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছে তারা। আরও অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে। কারণ, সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩৫ হাজার কোটি। এমতাবস্থায় রাজ্য জানায়, আম্পানের মতো এত বড় এক সাইক্লোনের ক্ষতিপূরণ হিসেবে কেন্দ্র যেন আরও অর্থ বরাদ্দ করে। কারণ, কোন পর্যায়ের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিনিধিরাই দেখে গিয়েছেন। রাজ্য সরকার আশা করেছিল দ্বিতীয় কিস্তি হিসেবে ফের ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়া যাবে। কিন্তু এদিন সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে কেন্দ্র। মোদি সরকারের এই বঞ্চনা বাংলা দখলে মরিয়া বিজেপির বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে নতুন অস্ত্র তুলে দিল বলেও মনে করছেন রাজনীতিকরা।