ঐতিহাসিক! মঙ্গলের মাটি ছুঁল পারসিভারেন্স
সাত মিনিটের আতঙ্ক শেষ। অবশেষে লাল গ্রহের মাটি স্পর্শ করল নাসার মঙ্গলযান ‘পারসিভারেন্স’ (Perseverance)। মঙ্গলের (Mars) পৃষ্ঠদেশ ছোঁয়ার মুহূর্তে এর ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন বিজ্ঞানীরা। লেটার মার্কস পেয়েই সেই পরীক্ষায় উতরে গিয়েছে এই যান। সাত মাসের সফর শেষে বৃহস্পতিবার রাত ২টো ২৩ মিনিটে নিরাপদেই মঙ্গলের মাটি ছুঁল সর্বাধুনিক ল্যান্ডার ও রোভার। সেই খবর পৌঁছতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন বিজ্ঞানীরা। এরপর গবেষকদলের এক সদস্য জানিয়েছেন, ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আমরা সকলেই খুব উত্তেজিত। পারসিভারেন্সের পাঠানো প্রথম ছবি দেখার অপেক্ষায় রয়েছি। তার কিছুক্ষণের মধ্যে ছবিও আসতে শুরু করে। সেগুলি দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন সকলে। এদিন শুধু মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীরাই নন, গোটা বিশ্ব অপেক্ষা করছিল ওই মাহেন্দ্রক্ষণের সাক্ষী থাকার জন্য। নিরাশ করেনি নাসার এই যান। সংবাদ সংস্থা বিবিসি জানিয়েছে, মঙ্গলের ‘জেজোরো ক্রেটার’ নামে একটি সুবিশাল গহ্বরে যানটি অবতরণ করে। এর ব্যাস ৪৯ কিলোমিটার। কোটি কোটি বছর আগে গ্রহাণু বা কোনও মহাজাগতিক বস্তুর সঙ্গে সংঘর্ষের পরই এর সৃষ্টি হয়েছিল বলে দাবি।
কিন্তু, পারসিভারেন্স-কে নিয়ে কেন এত উন্মাদনা? বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী দু’দশকের মধ্যে মঙ্গল নিয়ে বড় পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে ‘উপনিবেশ’ গড়তে চাইছেন বিজ্ঞানীরা। আগামী দু’বছর ধরে সেব্যাপারে খুঁটিনাটি তথ্য জোগাড় করবে এই রোভার। খতিয়ে দেখবে মাটি-পাথর। খুঁজবে প্রাণের স্পন্দনও। পাশাপাশি, বসতি গড়ার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান সেখানে রয়েছে কি না, তার উত্তরও জানাবে পারসিভারেন্স। এর সঙ্গেই মঙ্গলে উড়ে গিয়েছে একটি হেলিকপ্টারও। নাম ‘ইনজেনুইটি’। ১৯ মার্চের পর এক মাস ধরে যা উড়বে লালগ্রহের আকাশে। অর্থাত্, মাটি ও আকাশ- দু’দিক থেকেই যতটা সম্ভব তথ্য এককাট্টা করা চেষ্টা করা হচ্ছে। সাত মাসের সফরের একেবারে শেষ পর্যায়ে নাসার মহাকাশ বিজ্ঞানীদের কপালে ভাঁজ পড়েছিল। তাঁরা উদ্বিগ্ন ছিলেন, মঙ্গলের মাটিতে আছড়ে পড়ে কোনও যন্ত্র যেন না বিগড়ে যায়। লালগ্রহের মাটি পরীক্ষা থেকে শুরু করে সেখানে বিভিন্ন মুহূর্তের ছবি তোলা এবং তথ্য সংগ্রহের জন্য পারসিভারেন্সের ভিতরে রয়েছে একটি ৬ চাকার অনুসন্ধান যান। ওই বিশেষ যানটি ছবি তোলা ছাড়াও লালগ্রহের মাটি সংগ্রহ করবে। সেই মাটিতে প্রাণের অস্তিত্ব মেলে কি না, তা খতিয়ে দেখবে।