যশোবন্তের তৃণমূলে যোগদানের সিদ্ধান্ত বদলে দিতে পারে জাতীয় রাজনীতির চিত্র
যশোবন্ত সিনহার মতো বর্ষীয়ান নেতার ভোটের ঠিক আগেই তৃণমূলে যোগদানের বিষয়টি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা।
বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই যশোবন্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) শাসনের এবং বিজেপি (BJP) দলে তাঁর একচেটিয়া প্রভাবের একজন খুব বড় সমালোচক। বিশেষ করে বিদেশ নীতি, রাজনৈতিক অর্থনীতি নিয়ে তিনি বার বার সমালোচনা করেছেন। কিছুদিন আগে তাঁকে কৃষক আন্দোলনের (Farmers Protest) সভাতেও দেখা গেছে।
যশোবন্ত সিনহার (Yashwant Sinha) তৃণমূলে যোগদান করার এই সিদ্ধান্তের পরেই আরো অনেক বিরোধী দল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে তাঁদের সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। সম্প্রতি সমাজবাদী পার্টি, আরজেডি, শিবসেনা এবং ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। আসাউদ্দীন ওয়েসিও বলেছেন বাংলায় তিনি প্রার্থী দেবেন না। সেক্ষেত্রে মুসলিম ভোট তৃণমূলের তরফে আসার সম্ভবনাই প্রবল।
রাজ্যের নির্বাচনে (West Bengal Elections 2021) এই দলগুলির কোন গুরুত্ব না থাকলেও, তাঁদের সহযোগীতায় বিজেপির বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যের আন্দোলন এক জাতীয় মাত্রা পেয়েছে।
আরজেডি (RJD) এবং এনসিপি (NCP) তৃণমূলকে সমর্থন করতে তাঁদের মূল শরিক কংগ্রেসের বিরুদ্ধেও গেছে। আঞ্চলিক দলগুলি যে একত্রিত হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সর্ব শক্তি দিয়ে লড়তে চাইছে, এটা তার বড় প্রমাণ।
যশোবন্তের মতে বিজেপির নীতি সব দলকে পিষে দিয়ে স্বৈরাচারীতার রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করা। আর এই কারণেই বিজেপিকে রুখতে সব দলগুলি তৃণমূলকে সমর্থন করছে।
দল ছাড়ার প্রসঙ্গে যশোবন্তকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘অটল বিহারী বাজপেয়ীর সময়কার বিজেপি আর এখনকার বিজেপির মধ্যে বিস্তর তফাৎ। অটলজি সহাবস্থানে বিশ্বাস করতেন, আর এখন অন্যান্য দলকে পিষে মারার চক্রান্ত চলছে।’
২০১৯ – এ লোকসভা নির্বাচনের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব দলকে একসাথে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময় কংগ্রেস রাহুল গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী পদের মুখ করার জন্যে ব্যস্ত ছিল।
এরপরেই মমতা দিল্লিতে আপকে (APP), বিহারে আরজেডিকে (RJD), তেলেঙ্গানায় তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি এবং মহারাষ্ট্রে এনসিপিকে সমর্থন করেন। তিনিই প্রথম সব বিরোধী শক্তিকে একজোট হওয়ার কথা বলেছিলেন। তারপর থেকে তিনিই হয়ে ওঠেন বিজেপির সব থেকে বড় সমালোচক। শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই নন। তৃণমূলের সাংসদদেরও বহুবার প্রথম সারিতে এসে বিজেপির স্বৈরাচারিতার প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে।
এর আগে সিনহার সাথে যোগাযোগের কথা রাজনৈতিক আদর্শের কারণেই অস্বীকার করেছে তৃণমূল। বিজেপি ছেড়ে যশোবন্তের তৃণমূলে আসার ঘটনা জাতীয়স্তরের রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলবে।