করোনা মোকাবিলায় উচ্চ পর্যায়ের টাস্ক ফোর্স রাজ্যের
কোভিড (COVID19) মোকাবিলায় ছ’সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের টাস্ক ফোর্স (Task Force) গঠন করল রাজ্য সরকার। মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন এই টাস্ক ফোর্সে স্বরাষ্ট্র সচিব, স্বাস্থ্যসচিব, অর্থসচিব, পঞ্চায়েত সচিব, রাজ্য পুলিসের ডিজি এবং কলকাতার নগরপাল রয়েছেন। টাস্ক ফোর্সকে সাহায্য করার জন্য স্বরাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে ছ’জন পদস্থ আমলাকে নিয়ে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। টাস্ক ফোর্সের কাজ রাজ্যের করোনা মোকাবিলা সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা। করোনা আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক, প্রশাসকদের জন্য পৃথক শয্যার ব্যবস্থা রাখার দাবি উঠছিল বেশ কিছুদিন ধরেই।
রাজ্য সেই দাবিকে গুরুত্ব দিয়ে উপসর্গহীন বা মৃদু উপসর্গ থাকা স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক ও প্রশাসকদের বিভিন্ন হোটেলে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেগুলিকে সেফ হোম বলেই বিবেচনা করা হবে। তবে জেলায় সরকারি বাংলো বা গেস্ট হাউসগুলি যদি সেফ হোম (Safe Home)হিসেবে বিবেচিত না হয়, তবেই এই সুবিধা মিলবে। এক্ষেত্রে ব্যক্তি পিছু থাকা, খাওয়া ও ওষুধের খরচ মিলিয়ে রাজ্য ২,২০০ টাকা বহন করবে। করোনার ঊর্ধ্বমুখী গতি অব্যাহত। শুক্রবার রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের বুলেটিন থেকে জানা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১২ হাজার ৮৭৬ জন মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় এক হাজার বেড়েছে। আর চলতি বছরে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আগের সমস্ত রেকর্ড ভেঙেছে। ২৪ ঘণ্টায় মারা গিয়েছেন ৫৯ জন। এদিকে, সংক্রমণ যত বাড়ছে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শয্যা না পাওয়া, করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসার আগে বাড়িতেই বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হওয়া ইত্যাদি অভিযোগ আসতে শুরু করেছে।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা এক বৃদ্ধার মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। গরফাতেও হাসপাতালে ভর্তি হতে না পারায় বাড়িতে অক্সিজেন সাপোর্টে থাকা এক রোগীর মৃত্যুর খবর নিয়েও শোরগোল পড়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় টিকা কম আসতে থাকায় এদিনও বিভিন্ন জায়গায় ভোগান্তিতে পড়েন বহু মানুষ। শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে কয়েক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও টিকা না মেলায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন অনেকে। একদিকে টিকা, অন্যদিকে করোনা পরীক্ষা— দুইয়ের লাইন সামাল দিতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠেছে বহু হাসপাতালের কর্তাদের। ইন্টিগ্রেটেড হেল্পলাইন নম্বরে ফোন হয় সব সময় ব্যস্ত থাকছে, নয়ত ফোন না লাগার অভিযোগ আসতে শুরু করেছে। ঠাঁই নাই পরিস্থিতিতে ভর্তির জন্য কামারহাটির সাগর দত্ত সহ বেশ কয়েকটি হাসপাতালে দালালচক্রের উৎপাত শুরু হয়েছে।
করোনা বিপর্যয় দেখে ঝোপ বুঝে কোপ মারা শুরু করেছে মৃতদেহ বহনকারী বহু অ্যাম্বুলেন্স চালক। পুরসভা নির্ধারিত দামের বদলে বেশি টাকা চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। কেন্দ্রীয় সরকার এদিন পাঁচ লক্ষ কোভিশিল্ড পাঠিয়েছে রাজ্যে। এদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ১,৬৫৩টি কেন্দ্রে দুই লক্ষাধিক মানুষ টিকা নিয়েছেন।