অক্সিজেন ও প্লাজমা ব্যবহারে গাইডলাইন আনল রাজ্য
জীবনদায়ী অক্সিজেন আর প্লাজমা— এই দুইয়েরই অপব্যবহার হচ্ছে রাজ্যে। এই স্বীকারোক্তি খোদ রাজ্য সরকারেরই। সেকারণে করোনাকালে অত্যন্ত জরুরি এই দুই চিকিৎসাসামগ্রী তথা ‘ওষুধ’-এর অপব্যবহার রুখতে নির্দেশনামা জারি করল সরকার। দুই স্বাস্থ্য অধিকর্তার জারি করা ওই নির্দেশে বলা হয়েছে, দরকার ছাড়া অক্সিজেনের অতিব্যবহারই কৃত্রিম সঙ্কট ডেকে আনছে। রোগীকে হাসপাতালে এনে স্থিতিশীল করার পর অক্সিজেনের মাত্রা ৯২-৯৬ শতাংশ রাখলেই যথেষ্ট। গাইডলাইনও সেই কথাই বলে। চিকিৎসক-নার্সদের ওই লক্ষ্য বজায় রেখে যেতে হবে। অন্যদিকে যেসব করোনা রোগীর চিকিৎসায় প্লাজমা ব্যবহারের দরকার নেই, তাঁদের ক্ষেত্রেও ডাক্তারবাবুরা প্লাজমা (plasma therapy) লিখছেন। স্বাস্থ্যদপ্তর একথা জানিয়ে ১০টি পরামর্শ দিয়েছে। যেমন, উপসর্গ ধরা পড়ার তিন থেকে সাতদিনের মধ্যে প্লাজমা দিতে হবে, ১০ দিন পর নয়। দুই, কো-মরবিডিটি থাকা (কিডনির অসুখ, ধূমপায়ী, সিওপিডি আছে ইত্যাদি) মৃদু ও মাঝারি উপসর্গের করোনা রোগীদের কোভিড প্লাজমা দেওয়া যেতে পারে। তিন, অক্সিজেনের মাত্রা ৯৪ শতাংশের বেশি থাকা এআরডিএস রোগীদেরও প্লাজমা থেরাপি শুরু করা যেতেই পারে।
অক্সিজেন (Oxygen) সঙ্কটের জন্য বহু রোগীর জীবন ঝুঁকিতে, সোমবার এমনই একটি পরিস্থিতি হয়েছিল রেমিডি নার্সিংহোমে। শেষমেশ অক্সিজেন সিলিন্ডার পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর তথ্য জানতে পারে স্বাস্থ্যদপ্তর। তারা জেনেছে, স্বাস্থ্যদপ্তরের খাতায় রেমিডি’র শয্যা ৪৫টি দেখানো আছে। সরকারের নয়া নির্দেশ অনুযায়ী, ৪০ শতাংশ শয্যা বাড়ানোর অনুমতি দেওয়ায় সেই শয্যা বেড়ে ৬৩ হতে পারে। কিন্তু সেই জায়গায় ৯১টি শয্যা চালু রেখেছে ওই হাসপাতাল। অবিলম্বে অতিরিক্ত বেডগুলি বন্ধ না করলে হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দক্ষিণের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।
এদিকে মঙ্গলবার স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে ২০,১৩২। মারা গিয়েছেন ১৩২ জন। মৃতের সংখ্যায় এদিন কলকাতাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় মৃত্যু হয়েছে ৩৭ জনের এবং উত্তর ২৪ পরগনায় মারা গিয়েছেন ৩৯ জন। এদিন সকালে মেডিক্যাল কলেজের কোভিড ব্লকে এক করোনা রোগীকে খুঁজে না পাওয়ায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। পরে দেখা যায়, তিনি চারতলায় কার্নিশে পা ঝুলিয়ে বসে আছেন। দমকলে খবর দেওয়া হয়। শেষমেশ তাঁকে নামানো গিয়েছে।