ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় তাউকত, জানেন কে রেখেছে নাম?
একে করোনায় রক্ষা নেই তার উপর দোসর ঘূর্ণিঝড় ‘তাউকত’ (Tautkae)। মরশুমের প্রথম ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ‘তাউকত’ আছড়ে পড়বে দক্ষিণ ভারতের উপকূলবর্তী( South India) রাজ্যগুলিতে।
মৌসম ভবন সূত্রে(IMD) খবর ১৬ থেকে ১৭ই মে’র মধ্যে দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, কেরল,গুজরাট ও মহারাষ্ট্রে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় তাউকত। তাই আগাম সতর্কতা হিসেবে উপকূলবর্তী অঞ্চলে জারি হয়েছে রেড অ্যালার্ট।
এটি ২০২১ সালের প্রথম ঘূর্ণিঝড় ঝড়, মায়ানমার এর নাম দিয়েছে ‘তাউকত’ , যার অর্থ ‘গরম জলবায়ুতে পাওয়া টিকটিকি ‘।
ঘূর্ণিঝড়ের নাম কে রাখে?
ঘূর্ণিঝড়ের নাম রাখার দায়িত্বে ছিল ৮টি দেশ। এ বার ১৩টি দেশ মিলে নাম রেখেছে ১৬৯টি। সাগরের জঠরে জন্ম হলেই সেই নামে দুনিয়া চিনবে ঘূর্ণিঝড়কে। বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগর লাগোয়া যে দেশগুলিতে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়ে, তেমন ১৩টি দেশ নাম রাখার দায়িত্বে। ব্যবহারের মূল দায়িত্বে নয়াদিল্লির রিজিওনাল স্পেশ্যালাইজড মেটেরোলজিক্যাল সেন্টার ফর ট্রপিক্যাল সাইক্লোনস ওভার নর্থ ইন্ডিয়ান ওশনস।
এতদিন ছিল আটটি দেশ বাংলাদেশ, ভারত, মালদ্বীপ, মায়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড। নতুন তালিকায় যোগ হয়েছে ইরান, কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ও ইয়েমেন।
‘নামাবলি’ দেখতে রসায়নের পর্যায় সারণির মতো। আদ্যাক্ষর অনুযায়ী পর পর দেশের নাম। ডান দিকে সেই দেশের দেওয়া নাম। একটি করে ঘূর্ণিঝড় আসে, একটি করে নাম দেওয়া হয়। যেমন, নিসর্গ নামটি বাংলাদেশের দেওয়া। পরের দু’টি ভারতের গতি, ইরানের নিভার।
কেন নাম দেওয়া হয় ঘূর্ণিঝড়ের?
মৌসম ভবনের ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলেন, ‘প্রতিটি ঘূর্ণিঝড়কে আলাদা করার জন্যই নামকরণ করা হয়। নাম থাকলে দ্রুত মানুষের কাছে তা পরিচিত হয়ে ওঠে। দ্রুত লোকজনকে সতর্ক করা যায়। মানুষের মনে চিরদিনের জন্য দাগও কেটে যায় বহু ঝড়।’ যেমন, আয়লা, বুলবুল বা আম্পান।
নামকরণের এই চল উত্তর ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এসেছে অনেক পরে। প্রবণতা প্রথম দেখা যায় প্রশান্ত মহাসাগর, আটলান্টিকের ক্ষেত্রে। ১৯৫৩ সালে শুরু হয় হারিকেনের নাম দেওয়া। শুরুতে বেশিরভাগ ঘূর্ণিঝড়ের নাম হত মেয়েদের নামে। পরে আবার ছেলেদের নামের চল দেখা যায়।
গোটা বিশ্বেই যে দেশগুলিতে ঝড়ের প্রভাব পড়ে, নামকরণ তারাই করে। যেমন, দক্ষিণ চিন সাগরে সৃষ্ট টাইফুনের নাম ঠিক করে ওই অঞ্চলের দেশগুলি। আমেরিকা ও তার পড়শি দেশ মিলে ঠিক করে আটলান্টিকের হারিকেনের নাম। টাইফুন বা হারিকেনের আনাগোনা সাইক্লোনের চেয়ে বেশি। তাই একই নাম ঘুরে-ফিরে আসার চল রয়েছে। সাইক্লোনের ক্ষেত্রে অবশ্য এক নাম দু’বার ব্যবহারের চল নেই।
এর আগে হুদহুদ, তিতলির মতো নাম নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। নামে পাখি বা প্রজাপতি কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ঝড়ের নাম কেন নিসর্গ, নতুন তালিকার প্রথম নামও নিয়ে প্রশ্ন উঠল বলে!