রাজ্যের হেল্পলাইনে ফোন করলেই করোনা রোগীরা পাবেন মোবাইল প্রেসক্রিপশন
মোবাইলে প্রেসক্রিপশন! হ্যাঁ, লকডাউনের মতো পরিস্থিতিতে সারি, করোনা ও পোস্ট কোভিড রোগীদের জন্য এমনই ই-প্রেসক্রিপশন পরিষেবা চালু করে দিল স্বাস্থ্যদপ্তর। শনিবার দপ্তর শুরু করে দিয়েছে এই পরিষেবা। রাজ্যের করোনা হেল্পলাইন নম্বর ১৮০০৩১৩৪৪৪২২২— এ ফোন করে টেলিমেডিসিন অংশে গিয়ে নিজের বা পরিবারের কারও করোনা সংক্রান্ত সমস্যা ও উপসর্গের কথা জানালে কল সেন্টারে থাকা স্পেশালিস্ট ডাক্তাররা নিমেষে তৈরি করে দিচ্ছেন প্রেসক্রিপশন। রোগীর দেওয়া ফোন নম্বরে চলে যাচ্ছে সেই প্রেসক্রিপশন। এদিন এই পরিষেবা শুরুর পর থেকেই তা জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে। প্রথম দিন, তাই এসএমএস পাওয়া বহু রোগীকে পাল্টা ফোন করে মোবাইলে প্রেসক্রিপশন পেয়েছেন কি না জানতেও চেয়েছে স্বাস্থ্যভবন। নয়া পরিষেবা পেয়ে উচ্ছ্বাস গোপন রাখেননি বহু রোগী। জানিয়েছেন, এই কঠিন সময়ে মোবাইলে প্রেসক্রিপশন পরিষেবা অচিরেই ‘সুপারহিট’ হবে।পিজি হাসপাতালের অ্যাকাডেমিক বাড়িতে থাকা সুবিশাল কল সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত স্বাস্থ্যদপ্তরের এই হেল্পলাইন। রোগীদের ফোন ধরে সমস্যা শুনে যাঁরা এই প্রেসক্রিপশন বানাচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে অভিজ্ঞ এমবিবিএস ডাক্তার, পিজিটিরা যেমন আছেন, আছেন শিক্ষক চিকিৎসকরাও। আরএমও, সহকারী অধ্যাপক, এমনকী সহযোগী অধ্যাপকরাও রয়েছেন।
এখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক ডাঃ নাফিসা ইয়াসমিন জানালেন, শনিবার শুরুর পর এক বেলাতেই প্রায় দু’হাজার ই-প্রেসক্রিপশন রোগীদের মোবাইলে পাঠিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
কীভাবে সাধারণ মানুষ পড়তে পাচ্ছেন এই ই-প্রেসক্রিপশন? সূত্রের খবর, যে মোবাইল নম্বর থেকে হেল্পলাইন নম্বরে ফোন যাচ্ছে, সেখানেই চলে যাচ্ছে ই-প্রেসক্রিপশনের লিঙ্ক। টিকাকরণের এসএমএস-এর মতো তাতে ক্লিক করলেই খুলে যাচ্ছে প্রেসক্রিপশন!
তবে একদিকে যেমন স্বাস্থ্যদপ্তরের তথ্যপ্রযুক্তি শাখা এভাবে একের পর এক সুপারহিট পরিষেবা চালু করছে, পাশাপাশি কিছু বিষয়ে সমালোচনাও শুনতে হচ্ছে তাদের। প্রধান সমালোচনা হল, গত বছরের মতো এবার আর কোভিড পজিটিভ রোগীদের উপযাচক হয়ে ফোন করে স্বাস্থ্যভবন খোঁজখবর নিচ্ছে না, ভালোমন্দ জানতেও চাইছে না। বিষয়টি স্বীকার করে তথ্যপ্রযুক্তি শাখার এক কর্তা বলেন, গত বছর দৈনিক করোনা সংক্রমণ এবারের পাঁচ-ছয় ভাগের এক ভাগও ছিল না। তাই ওই কাজ আমরা করতে পারছিলাম। দিনে ১৯-২০ হাজার মানুষ পজিটিভ হলে প্রত্যেককে ফোন করা অসম্ভব।
হেল্পলাইন নম্বরে গত এক সপ্তাহ ধরে কল কমে আসার বিষয় নিয়েও চিন্তিত দপ্তর। হেল্পলাইনে ফোন করে ১ টিপলে করোনা সংক্রান্ত তথ্য, ২ টিপলে ভর্তি, ৩ নম্বরে টেলিমেডিসিন এবং ৪-এ অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা মেলে। সপ্তাহখানেক আগেও দিনে প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রায় পাঁচ হাজার করে ফোন কল আসছিল। তা এখন কমে কমবেশি আড়াই হাজার হয়েছে। সেটা কী ফোন কল না ধরা বা সবসময় ‘বিজি’ থাকা বা অন্য কোনও কারণে মানুষের বিরক্তির জন্য কমেছে, না অন্য রহস্য আছে, খতিয়ে দেখছে দপ্তর।