আন্তর্জাতিক বিভাগে ফিরে যান

কমিউনিস্ট পার্টির শতবর্ষে আমেরিকাকে হুমকি চিনের

July 2, 2021 | 2 min read

 চিনা কমিউনিস্ট পার্টির (CPC) শতবর্ষে ‘ফিরলেন’ মাও জে দং। সেই তিয়ানআনমেন স্কোয়ারে বাঁধা উজ্জ্বল মঞ্চে মাওয়ের সুবিশাল মুখচ্ছবি দেখে মনে হচ্ছিল এই বুঝি তিনি বলে ওঠেন, ‘বন্দুকের নলই…….’। আর নেপথ্যে ‘লং মার্চ’-এর নায়ককে নিয়েই আমেরিকার বিরুদ্ধে ফের গর্জন করলেন চিনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (Xi Jinping)।

বৃহস্পতিবার চিনা কমিউনিস্ট পার্টির শতবর্ষে বেজিংয়ে জাঁকজমক কম কিছু ছিল না। তিয়ানআনমেন স্কোয়ারে ঝরা রক্তের দাগ মুছে দিতে না পারলেও দলের প্রোপাগান্ডা মেনেই গমগম করছিল উজ্জ্বল মঞ্চ। এদিন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন চিনের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হু জিনতাও ও প্রাক্তন প্রিমিয়ার ওয়েন জিয়াওবাও। চোখ ধাঁধানো অনুষ্ঠানে আকাশে যুদ্ধবিমানের গর্জন থেকে শুরু করে কুচকাওয়াজের মাঝেই প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ভাষণ দেন প্রেসিডেন্ট জিনপিং। করোনা আবহেও দলীয় কর্মী থেকে স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন প্রায় ৭০ হাজার মানুষ। এদিন গোটা বিশ্ব দেখতে পায় কার্যত এক দানবের উত্থান। আর দুনিয়া যে নজর রাখছে সেই কথা মাথায় রেখে ফের আমেরিকার আধিপত্যকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন জিনপিং। তাঁর কথায়, “আমাদের কেউ ভয় দেখাতে পারবে না। যারা আমাদের দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে, তাদের ১৪০ কোটি চিনা জনতার তৈরি ইস্পাতের দেওয়ালের সঙ্গে ধাক্কা খেতে হবে।”

নাম না করলেও চিনা প্রেসিডেন্টের নিশানায় যে আমেরিকাই ছিল তা স্পষ্ট। অর্থাৎ ভবিষ্যতে বিশ্বমঞ্চে সমীকরণ পালটে ক্ষমতা বিস্তারে বদ্ধপরিকর বেজিং তা এদিন বুঝিয়ে দিলেন জিনপিং। চিরাচরিত সাহেবি পোশাক ছেড়ে এদিন বড় কলারের গলাবন্ধ কোট পরেছিলেন শি ঠিক যেমনটি মাও পরতেন। আর এই সাফল্যের জন্য প্রেসিডেন্ট শি কুর্নিশ জানিয়েছেন ঐতিহাসিক লং মার্চের নায়ক সেই মাওকেই। আফিম যুদ্ধকেও সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রামের পূর্বাধিকার দিয়ে শি বর্তমান সম্পদশালী ও প্রযুক্তিতে আগুয়ান চিন গঠনের সাফল্যের জন্য সে দেশের মানুষের ভূমিকাকেই মুখ্য বলে ঘোষণা করেছেন।

বিশ্লেষকদর মতে, জনপ্রিয়তার নিরিখে মাওয়ের সমকক্ষ না হলেও দলের উপর রাশ অত্যন্ত শক্ত হাতেই ধরেছেন চিন ও কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান শি। এদিন তিয়ানআনমেন প্রান্তরে মাওয়ের ছবির প্রেক্ষাপটে জিনপিংয়ের সদম্ভ ভাষণই বলে দিচ্ছে যে সে দেশে গণতন্ত্রের আশা করা বৃথা। কোনওধরনের বিক্ষোভ বা বেসুর আওয়াজ যে সরকার ভাল চোখে দেখবে না তাও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এছাড়া, নয়া আইন এনে আগেই আজীবন দেশের প্রেসিডেন্ট থাকার ব্যবস্থা করে ফেলেছেন জিনপিং। তাই সিপিসি-র অন্দরে থাকা বিরুদ্ধ গোষ্ঠীকেও মাওয়ের কায়দায় পথ থেকে সরিয়ে দেবেন বা দিচ্ছেন তিনি সেটাও স্পষ্ট। সবমিলিয়ে, এদিনের অনুষ্ঠান কয়েক দশক আগে বার্লিনে নাৎসিদের বিশাল সমাবেশ ও হিটলারের ভাষণের কথা মনে করিয়ে দেয়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#USA, #100 Years

আরো দেখুন