আমেরিকার সঙ্গে আফগান সরকারের যৌথ বিমান হানায় খতম ২০০ জঙ্গি
একদিকে সাফল্য, অন্যদিকে ব্যর্থতা। গত ২৪ ঘণ্টায় আফগান সেনা ও তালিবান জঙ্গিদের লড়াইয়ের নির্যাস এটাই। একদিকে ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে বড়সড় ধাক্কা খেল তালিবান জঙ্গিরা। আমেরিকার সঙ্গে আফগান সরকারের যৌথ বিমান হানায় খতম কমপক্ষে ২০০ জঙ্গি। আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক একথা জানিয়েছে। মন্ত্রকের আধিকারিক ফাওয়াদ আমান ট্যুইটারে জানান, ‘শেবারগান এলাকার জঙ্গি ডেরায় টানা বিমান হানা চালিয়েছে বায়ুসেনা। যার ফলে অন্তত ২০০ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র। জঙ্গিদের ব্যবহৃত প্রায় ১০০টি গাড়ি নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।’
অন্যদিকে, রবিবার আরও দু’টি শহর তালিবানদের দখলে এসেছে বলে স্থানীয় সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
সেনার সঙ্গে তীব্র সংঘর্ষের পর কুন্দুজ প্রদেশের রাজধানী শহর কুন্দুজ ও শের-ই-পল প্রদেশের দখল নিয়েছে তালিবান। এই নিয়ে মোট চারটি প্রদেশ দখলের দাবি করল জঙ্গিরা। এক বিবৃতিতে তালিবান জানিয়েছে, ‘তীব্র সংঘর্ষের পর মুজাহিদিনরা কুন্দুজ প্রদেশের রাজধানীর দখল নিয়েছে।’ স্থানীয় এক বাসিন্দার দাবি, চরম বিশৃঙ্খলা শুরু হয়েছে শহরে। অন্যদিকে, শের-ই-পলের এক সমাজকর্মী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাবিলান হামলায় পিছু হটে বারাকে ফিরে গিয়েছে সরকারি সেনারা। শহরের নিয়ন্ত্রণ তালিবানের হাতে।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ জাওযান প্রদেশের শেবারগান হামালা চালায় আমেরিকার বি-৫২ বোমারু বিমান। যার ফলে দিশাহারা হয়ে পড়ে জঙ্গিরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত দু’দিন ধরে জাওযান প্রদেশের রাজধানী শহর দখল করে রেখেছিল তালিবান জঙ্গিরা। প্রায় সপ্তাহ খানেক ধরে সেনার সঙ্গে সংঘর্ষের পর শহরটির দখল নেয় তারা। তবে শুধু শেবারগান শহর নয়, বেশ কয়েকটি শহরে হামলা চালিয়েছে মার্কিন সেনা। যার ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৩৮৫ জন তালিবান জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। আহত ২১০। মার্কিন ও আফগান সেনার যৌথ হামলায় এই সাফল্য এসেছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দাবি, হেলমন্দ প্রদেশে আমেরিকান এয়ার ফোর্সের হামলায় ৩০ জন পাকিস্তানি জঙ্গি ও আল কায়েদা সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে রাষ্ট্রসঙ্ঘে আফগানিস্তানের স্থায়ী দূত গুলাম এম ইশাকজাই বলেন, তালিবানকে নানাভাবে সাহায্য করছে ভিন দেশি জঙ্গিরা। লাগাতার অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা চালানো হচ্ছে। নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার প্রয়াস চলছে। শুধু আফগানিস্তানে নয়, গোটা অঞ্চলে অশান্তি জিইয়ে রাখতে চাইছে জঙ্গিরা। পূর্ব ঘোষণা মতো ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের মাটি ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে মার্কিন সেনার। তার আগেই দেশ দখলের মরিয়া চেষ্টা শুরু করেছে তালিবান। যদিও আমেরিকা জানিয়েছে, আফগানিস্তান ছেড়ে গেলেও আগামী দিনে জঙ্গি মোকাবিলায় সক্রিয় ভূমিকা নিয়ে আফগানিস্তানের পাশেই থাকবে তারা।
এরই মধ্যে ভারতের পৌরোহিত্যে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। সমস্যা সমাধানে সব দেশকে জোটবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।