মহিলাদের শরিয়ত অনুযায়ী অধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি তালিবানের
দুই দশক পরে ফের তালিবানের (Taliban) দখলে আফগানিস্তান (Afghanistan)। বিগত দুঃস্মৃতির ভয়াবহতায় দেশ ছেড়ে পালাতে চাইছেন সাধারণ আফগান নাগরিকরা। সবথেকে বেশি ভয়ে রয়েছেন সেদেশের মহিলারা। তালিবান আসা মানেই মেয়েদের অন্তঃপুরবাসিনী হয়েই থাকতে হবে, এমন আশঙ্কাই ক্রমশ জোরাল হয়ে উঠছে। কিন্তু সবাইকে বিস্মিত করে মঙ্গলবার তালিবানের তরফে সকলকে অভয় দিয়ে সকলের সঙ্গে মহিলাদেরও দ্রুত সরকারি কাজে যোগ দেওয়ার আরজি জানানো হল।
দেশজুড়ে প্রবল উত্তেজনা। এখনও সেই অর্থে তালিবানদের (Taliban) তরফে কোনও হিংসাত্মক ঘটনা ঘটানো হয়নি। সেই অর্থে জারি করা হয়নি কোনও ফতোয়াও। কিন্তু তবুও পুরনো সময়ের কথা মনে করে মানুষের মনে আতঙ্কের জলছাপ। এই পরিস্থিতিতে তালিবানের তরফে উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা শুরু হয়েছে।
ঠিক কী জানিয়েছে তালিবানের সংস্কৃতি কমিশনের সদস্য এনামুল্লা সামানগানি? তাঁর কথায়, ”ইসলামিক শাসন কখনও মহিলাদের আক্রান্ত হতে দিতে চায় না। শরিয়ত আইন মেনে সরকারি কাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। এখনও সরকারি পরিকাঠামোর সবটা পরিষ্কার নয়। তবে অভিজ্ঞতার নিরিখে বলতে পারি সেখানে ইসলামিক নেতৃত্বই পুরোভাগে থাকবেন। সেই সঙ্গে সব পক্ষকেই সরকারে যুক্ত করা হবে।”
কিন্তু কেন তালিবানরা মহিলা সরকারি আধিকারিক, আমলা ও সাধারণ কর্মীদেরও সরকারে যোগ দেওয়ার আরজি জানাচ্ছে? ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এর পিছনে রয়েছে বহির্বিশ্বে নিজেদের খারাপ ইমেজকে কিছুটা শোধরানোর চেষ্টা। আন্তর্জাতিক মহলের কাছে ভাবমূর্তির উন্নতিই এই মুহূর্তে তাদের প্রাথমিক পরিকল্পনার অংশ। আর সেই কারণেই এমন আরজি জানাচ্ছে তারা।
তালিবানরা আফগানিস্তান দখল নেওয়ার পর এখনও পর্যন্ত সেদেশে কোনও বড়সড় সংঘর্ষের কথা জানা যায়নি। যদিও তালিবান জেলবন্দিদের মুক্তিপ্রাপ্তির খবরে আতঙ্ক ভালমতো বেড়েছে। সন্ত্রস্ত সাধারণ মানুষ ঘরবন্দি হয়ে রয়েছেন। কুড়ি বছর আগের আফগানিস্তানের কথা ভেবে মনে মনে শিউরে উঠছেন বয়স্ক মানুষরা। নয়া তালিবান জমানায় সেই আতঙ্কের ছবি আবার ফেরা যে স্রেফ সময়ের অপেক্ষা, সেব্যাপারে নিশ্চিত তাঁরা।