আন্তর্জাতিক বিভাগে ফিরে যান

বন্ধ আফগানিস্তান থেকে আমদানি, বাড়তে পারে শুকনো ফলের দাম

August 20, 2021 | 2 min read

খুরমানি বা খুবানি, আঞ্জিল, মুনাক্কা, কিসমিস। শুকনো ফলের বাজারে অতিপরিচিত নাম। কিন্তু আফগানিস্তানের টালমাটাল পরিস্থিতিতে এই সব সুস্বাদু ড্রাই ফ্রুটসের (Dried Food) আমদানিই এখন প্রশ্নের মুখে। আর সরবরাহ নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন উঠতেই দাম বাড়তে শুরু করেছে হু হু করে। ইতিমধ্যেই দিল্লির খোলা বাজারে এই সব শুকনো ফলের নাম ১৫০-২০০ টাকা কেজি দরে বেড়ে গিয়েছে। কলকাতার বাজারেও তাই এই সব শুকনো ফলের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার আশঙ্কা। ফলে উৎসবের মরশুমের প্রাক্কালে মাথায় হাত ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষের। নয়াদিল্লি বা কলকাতা, ছবিটা সর্বত্র এক।

পুরনো দিল্লির খড়ি বাওলি। মুঘল জমানা থেকে চাঁদনি চকের এই এলাকা শুকনো ফলের জন্য প্রসিদ্ধ। শুকনো সুস্বাদু-স্বাস্থ্যকর ফল আর নানা মশলা মিলিয়ে বছরে গড়ে প্রায় ৩৫ হাজার টন আফগানি সামগ্রী এসে পৌঁছয় সদর বাজারের এই খড়ি বাওলিতে। কিন্তু আচমকা আফগানিস্তানে তালিবানি আগ্রাসনে সব ওলটপালট হতে বসেছে। কারণ আফগানিস্তান তালিবানের দখলে আসার পরই তোরখাম, চমন সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে এগুলি বাণিজ্যের জন্য খুলে দেওয়া হলেও, ব্যবসায়ীরা এখনও আতঙ্কিত নিরাপত্তা নিয়ে। ফলে আফগানিস্তান-পাকিস্তানের এই দুই সীমান্ত পেরিয়ে পাঞ্জাবের আটারি হয়ে আমদানি আপাতত থমকে। ভারতে আসছে না রবীন্দ্রনাথের কাবুলিওয়ালাদের ঝোলা থেকে বেরনো পেস্তা, কিশমিশ। ইন্দো-আফগান চেম্বার অব কমার্সের সচিব বিকাশ বলশল বলেন, ‘পরিস্থিতি যে খারাপ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আচমকা দুটি সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ড্রাই ফ্রুটসের আমদানি হচ্ছে না। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, সেটাও বুঝতে পারছি না।’

একই আশঙ্কা কলকাতা ড্রাই ফ্রুট মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের মনজর আলম, বালকৃষ্ণ আগরওয়ালদের। তাঁদের কথায়, ‘কাশ্মীর থেকে আখরোট আসে। ফলে সেখানে দাম বাড়লে তার প্রভাব কলকাতার বাজারে পড়তে বাধ্য। দিল্লির খোলাবাজারেও আফগানিস্তান থেকে আসা শুকনো ফলের জোগান কমে গিয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই দাম বেড়েছে হু হু করে। কলকাতায় এখনো পুরনো স্টক চলছে। কয়েকদিনের মধ্যেই নতুন স্টক কিনতে হলে দাম বাড়াতে বাধ্য থাকবেন ব্যবসায়ীরা।’  পেস্তা, খুরমানি, আঞ্জিল, মুনাক্কা—এগুলি মূলত বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি তৈরির কাজে ব্যবহার হয়। কলকাতার বাজারে খুরমানির মোটামুটি দাম কেজি প্রতি ৪৫০-৮০০ টাকা। আঞ্জির বিক্রি হয় কেজি প্রতি ৬০০-১৪০০ টাকা দরে, মুনাক্কার দাম প্রতি কেজি প্রায় ৫০০-৮০০ টাকা এবং কিসমিস ৫০০-১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। যা অন্তত কেজিতে ২০০-২৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। গত কয়েক দশক ধরে শুকনো ফলের পারিবারিক ব্যবসা সামলাচ্ছেন অনিল আগরওয়াল। তাঁর কথায়, ‘গতবছর আফগানিস্থানে ফলন ভালো হয়নি। এমনিতেই এইসব শুকনো ফলের দাম খানিকটা বেড়েছে। আমরা ভেবেছিলাম এ বছর শস্য ভালো হয়েছে। তাই দাম কিছুটা কমতে পারে। কিন্তু আফগানিস্তানে এই পরিস্থিতিতে সেই সুযোগ আর নেই।’ তাই আপাতত স্মার্টফোনে সবার চোখ কাবুলের পরিস্থিতিতে। সরবরাহ স্বাভাবিক হলে তবেই মানুষের কাছে নির্বিঘ্নে পৌঁছনো যাবে কিশমিশ, পেস্তা। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#India, #Afganistan, #Dried Food

আরো দেখুন