ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি, সাতসকালে ফের একাধিক রকেট হামলা কাবুল বিমানবন্দরে
কাবুল বিমানবন্দরে (Kabul Airport) পরপর রকেট হামলা। সোমবার সকালেও হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লক্ষ্য করে রকেট (Rocket) ছোঁড়া হয়েছে বলে সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর। এক রিপোর্ট অনুযায়ী, হামলা চলে বিমানবন্দরের অদূরে খোরশিদ বিশ্ববিদ্যালয়ে চত্বরের কাছাকাছি একটি গাড়ি থেকে। একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে। স্থানীয় এক সাংবাদিক জানাচ্ছেন, লব-জর এলাকার ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সকাল পৌনে সাতটা নাগাদ অন্তত ২ টি রকটে ছোঁড়া হয়েছে বিমানবন্দর লক্ষ্য করে। স্থানীয় আরিয়া এলাকার মানুষজন ত্রস্ত। তবে এই রকেট হামলায় প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনও মেলেনি।
রবিবারের পর সোমবার। রবিবার বিকেলে কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে রকেট হামলা চালিয়েছিল আইএস জঙ্গিরা। তাতে ২ জনের মৃত্যু হয়। টার্গেট ছিল মার্কিন সেনা ও নাগরিকরা। একটি বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। পরে হামলার দায়ও স্বীকার করে ইসলামিক স্টেট-খোরাসান । সন্ধের মধ্যেই এর প্রত্যাঘাত করে মার্কিন সেনা (US Army)। IED বোঝাই একটি গাড়ি বিমানবন্দরের দিকে এগোচ্ছে, তা নজরে আসার পর এয়ারস্ট্রাইক করা হয়। আত্মঘাতী জঙ্গিকে টার্গেট করে ড্রোন হামলা চালিয়ে বিমানবন্দরে বড়সড় নাশকতার ছক বানচাল করা হয় বলে দাবি আমেরিকার। এতে খতম হয় IS-K জঙ্গি। সেইসঙ্গে গাড়ি থেকে প্রচুর বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয় বলেও জানা গিয়েছে।
তবে আমেরিকার এই ড্রোন হামলায় (Drone Attack) কয়েকজন শিশু-সহ মোট ৯ সাধারণ আফগান নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলেও খবর মিলছে। মার্কিন নৌসেনার ক্যাপটেন বিল আরবান জানাচ্ছেন, সুরক্ষার স্বার্থে ওই হামলা চালানো হয়েছিল, নইলে কাবুল বিমানবন্দরে অনেক বড় নাশকতা ঘটতে পারত। তবে ওই হামলায় সাধারণ নাগরিকদেরও প্রাণহানি ঘটায় তারা দুঃখপ্রকাশ করেছে। এক সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ড্রোন হামলায় অন্তত ৯ সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। একই পরিবারের এই ৯ জনের মধ্যে ৬ জনই শিশু বলে খবর স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, আচমকাই ওই বাড়িতে আগুন জ্বলে ওঠে। সকলে মিলে দ্রুত তা নেভানোর তোড়জোড় করেন। তারপরই তাঁরা ৫-৬টি দেহ উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে মৃতদেহের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯। এদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু। পরিবারের গৃহকর্তা থেকে সবচেয়ে কনিষ্ঠ সদস্য, ২ বছরের শিশু – সকলেই মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছে বলে দাবি প্রতিবেশীদের।
এরপর সোমবার সকালের দিকে ফের কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দরে লক্ষ্য করে লব-জর এলাকার খোরশিদ প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি চত্বর থেকে রকেট উড়ে আসে। কিন্তু কেন বারবার কাবুল বিমানবন্দরেই হামলা চলছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই মুহূর্তে বিমানবন্দর থেকে সমস্ত জমায়েত সরিয়ে সেখানে প্রবেশের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে তালিবান (Taliban)। যদিও তাদের দেওয়া ডেডলাইন ৩১ আগস্টের পরও আফগানরা চাইলে দেশ ছাড়ত পারে, এই ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। তাই অনেকেই কাবুল ছাড়তে চাইছেন। তবে কি এভাবে হামলা চালিয়ে সাধারণ নাগরিকদের মনে ভয় ঢোকানোর চেষ্টা?