রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

অধীরের গড় মুর্শিদাবাদেই কংগ্রেসের সংগঠন টলমল

September 9, 2021 | 2 min read

উপনির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে পথে না নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস। মঙ্গলবার রাতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী সাংবাদিক বৈঠক করে তা ঘোষণা করেছেন। তা শুনে অনেকেই বলছেন, দেরিতে হলেও শুভবুদ্ধির উদয় হল নেতৃত্বের। এখন আর কিছু করার নেই। জেলার সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুর বিধানসভা কেন্দ্রে লড়াই করার ক্ষমতা আগেই হারিয়েছে হাত শিবির। আগামী দিনে জেলায় সংগঠন টিকিয়ে রাখাই দায় হয়ে উঠবে বলে রাজনৈতিক মহলের মত। দলের অনেকেই বলছেন, বিধানসভা নির্বাচনের আগে অধীরবাবু তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক প্রচার চালিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ব্যক্তিগত আক্রমণ করতেও ছাড়েননি। কিন্তু তার ফল ভালো হয়নি। জেলাজুড়ে ধরাশায়ী হয়েছে কংগ্রেস। বিধানসভা নির্বাচনের আগে অধীরবাবুরা শাসক দলের সঙ্গে সমঝোতার রাস্তায় হাঁটলে এই পরিণতি হতো না। জঙ্গিপুর মহকুমার কংগ্রেসের এক প্রাক্তন বিধায়ক বলেন, এখন তৃণমূল আর বিজেপির মাঝে আর কোনও দল নেই। তাই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। বিধানসভা নির্বাচনে দল তৃণমূলের সঙ্গে জোট করলে সংগঠনের ভালো হতো। অন্তত মুর্শিদাবাদ জেলায় খাতা খোলা যেত।

দলের একাংশের দাবি, অধীরবাবু আগামী দিনের কথা চিন্তা করেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। অতীতে তিনি একাধিকবার শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন। তৃণমূলের সঙ্গে জোট না মেনে জেলায় নির্দল প্রার্থী দিয়েছিলেন। সফলও হয়েছিলেন। কিন্তু এখন তাঁর সেই ক্ষমতা নেই। খোদ অধীরবাবুর লোকসভা কেন্দ্রেই কংগ্রেস দুর্বল হয়ে পড়েছে। তৃণমূলের বিরোধিতা করে তাঁর পক্ষে জয় পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। সেই কারণেই তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার ঝুঁকি নেননি বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। 

তৃণমূল নেতা অশোক দাস বলেন, অধীরবাবু আগামীর দেওয়াল লিখন পড়তে পেরেছেন। তিনি ভালোই জানেন, সামনের লোকসভা নির্বাচনে হারবেন। তাই তৃণমূলের কাছাকাছি তিনি আসতে চাইছেন। আমরা কংগ্রেসের সাহায্য ছাড়াই জিতব। অধীরবাবু সাংবাদিক বৈঠকে অবশ্য বলেন, ভবানীপুরে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তে প্রার্থী দেওয়া হবে না। আমরা সেখানে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচারও করব না। তবে সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুর বিধানসভা কেন্দ্রে দলের ভূমিকা কী হবে, তা তিনি স্পষ্ট করেননি। সবটাই স্থানীয় নেতৃত্বের উপর ছেড়ে দিয়েছেন। কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই কেন্দ্রেও তারা তৃণমূলের বিরোধিতা করবে না। সামশেরগঞ্জে তাদের প্রার্থীই ভোটে লড়াই করতে চাইছেন না। দাপুটে অনেক নেতা তৃণমূলের দিকে ঝুঁকেছেন। একই অবস্থা জঙ্গিপুরেও। এখানেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সামনে থেকে লড়াই করার মতো নেতা কংগ্রেসের নেই।

তৃণমূল শিবিরের দাবি, শুধু ওই দুই কেন্দ্রে নয়, জেলার সর্বত্রই হাত শিবিরের একই অবস্থা। বিধানসভা নির্বাচনের পর সেই দলের অনেক নেতা শিবির বদল করে ফেলেছেন। জঙ্গিপুর মহকুমার এক প্রাক্তন বিধায়কেরও দলবদল করা সময়ের অপেক্ষা মাত্র। ইতিমধ্যেই তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর প্রাথমিক কথা হয়ে গিয়েছে। তিনি দল ছাড়লে ফরাক্কা এলাকায় হাত শিবির আরও দুর্বল হয়ে পড়বে।

কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, মুর্শিদাবাদে দল পুরোটাই অধীরবাবুর উপর নির্ভরশীল ছিল। তাঁর প্রতি জেলার বাসিন্দাদের আবেগ ছিল। এখন তা উধাও হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে উন্নয়ন ও জনসংযোগের মাধ্যমে তৃণমূল এই জেলায় এখন কার্যত দুর্ভেদ্য ঘাঁটি তৈরি করে নিয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Adhir Chowdhury

আরো দেখুন