‘অকাস’ চুক্তি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ফ্রান্সের , তলব আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে রাষ্ট্রদূতদের
আন্তর্জাতিক বাজারে অস্ত্র রপ্তানিতে শীর্ষে আমেরিকা (America)। বিশ্বে হাতিয়ারের ব্যবসায় প্রায় ৩৭ শতাংশ দেশটির দখলে। ওই তালিকায় মাত্র ৮.২ শতাংশ নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফ্রান্স। তাও প্যারিসের হাত থেকে সাবমেরিনের খদ্দের ‘ছিনিয়ে নিয়েছে’ ওয়াশিংটন। আর এই ঘটনায় দুই ‘বন্ধু’ দেশের মধ্যে তুঙ্গে বিবাদ।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সম্প্রতি ফ্রান্সের তৈরি অত্যাধুনিক ডিজেল-ইলেকট্রিক সাবমেরিন কিনতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। হাতিয়ারের বাজারে মুনাফা বাড়াতে কয়েকশো কোটি ডলার মূল্যের ওই চুক্তি ফরাসি অস্ত্রনির্মাতাদের কাছে বড়সড় সুযোগ ছিল। কিন্তু গত বুধবার আচমকা ওই চুক্তি বাতিল করে দেয় অস্ট্রেলিয়া। কারণ, আমেরিকা ও ব্রিটেনের সঙ্গে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কৌশলগত সহযোগিতা বাড়িয়ে তুলতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে দেশটি। যার ফলে আমেরিকার তৈরি অত্যাধুনিক আণবিক শক্তিচালিত ডুবোজাহাজ চলে আসছে অস্ট্রেলিয়ার হাতে। আর খুব স্বাভাবিকভাবেই ফরাসি ডিজেল চালিত সাবমেরিন কিনতে নারাজ দেশটি।
এভাবে মুখের গ্রাস ছিনিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক সাবমেরিন দিয়ে ফ্রান্সের ক্ষোভের মুখে পড়েছে আমেরিকা। আমেরিকার এই ভূমিকাকে ‘পিছন থেকে ছুরি মারা’র শামিল বলে উল্লেখ করল তারা। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে টানাপড়েন আরও বাড়ল। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে রাষ্ট্রদূতদের ফেরত আসার নির্দেশ দিয়েছে ফ্রান্স।
এদিকে, ন্যাটো গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত ও মিত্র দেশ ফ্রান্সের মান ভাঙাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে আমেরিকা। শুক্রবার হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর, প্যারিসের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিবাদ মিটিয়ে ফেওলার চেষ্টা চলছে। ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেছে অস্ট্রেলিয়াও। দেশটির বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, ফ্রান্সের সঙ্গে বন্ধুত্বকে যথেষ্ট মর্যাদা দেয় অস্ট্রেলিয়া। ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে নেওয়ার এহেন সিদ্ধান্ত হতাশাজনক। বিশ্লেষকদের মতে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনকে (China) ঘিরে ফেলতে অস্ট্রেলিয়াকে দলে টেনেছে আমেরিকা।