তালিবানের নতুন ফতোয়া, স্টাইল করে চুল কাটা, সেলফি তোলায় নিষেধাজ্ঞা
একের পর এক ফতোয়া। আফগানিস্তানের মহিলাদের উপর নানা বিধিনিষেধ আরোপ করার পর এবার পালা আফগান পুরুষদের। পোশাক ও সাজসজ্জায় মার্কিন অনুকরণ বন্ধ করতে কড়া হুঁশিয়ারি দিল তালিবান। এমনকী হেলমন্দ প্রদেশের সমস্ত নাপিতকে বলে দেওয়া হয়েছে তাঁরা যেন কারও দাড়ি না কাটেন। স্টাইল করে চুল ছেঁটে না দেন। নির্দেশ অমান্য হলে পড়তে হবে কড়া শাস্তির মুখে। দাড়ি-চুল রাখার ক্ষেত্রে আফগান পুরুষদের কঠোরভাবে মানতে হবে ইসলামী রীতি। অন্যথা হলেই সাজা। হেলমন্দ প্রদেশের বহু নাপিত এই হুঁশিয়ারি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। গোপনে তাঁদের উপর তালিবান যোদ্ধারা নজর রাখছে বলেও জানিয়েছেন নাপিতরা। কাবুলের এক সেলুনের মালিক সংবাদ মাধ্যমকে জানান, তালিবান সরকারের এক প্রতিনিধি তাঁকে ডেকে বলেছেন, ‘আমেরিকান স্টাইল যেন অনুকরণ না করা হয়।’ গতবারের তালিবান রাজ খতম হওয়ার পর স্থানীয় বাসিন্দারা সেলুন ও বিউটিপার্লারে যাওয়া শুরু করেন। দাড়ি ও চুলে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগে। এই সব স্টাইল না পসন্দ তালিবানের।
তবে শুধু সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা নেমে এসেছে এমন নয়। আতসকাচের নীচে তালিব যোদ্ধারাও। তাঁদের লাগামহীন উদ্দামে রাশ টানতে চাইছেন তালিবান সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তালিব যোদ্ধাদের সেলফি তোলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ দেখা যাচ্ছে, ক্ষমতায় আসার পর তারা বিভিন্ন দ্রষ্টব্য স্থানে গিয়ে ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিচ্ছেন। যাতে তালিবানের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। তালিব নেতাদের কাজকর্ম প্রকাশ্যে চলে আসছে। তালিবান সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী তথা সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের পুত্র মৌলবী মহম্মদ ইয়াকুব বলেন, ‘যোদ্ধাদের সেলফি তোলা বন্ধ করতে হবে। এর ফলে তালিব নেতাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। যে কেউ বুঝতে পারছেন নেতাদের অবস্থান।’ এছাড়াও যোদ্ধাদের পোশাকের ব্যাপারেও সচেতন করেছেন ইয়াকুব। কাঁধ পর্যন্ত চুল না রাখতে, কেতাদুরস্ত পোশাক বর্জন করতে ও সাদা হাইটপ স্নিকার পরতে বারণ করা হয়েছে। এ সবই পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অনুকরণ বলে মত তালিবান নেতাদের। এমনকী দ্রুত গতিতে গাড়ি ছোটাতে নিষেধ করা হয়েছে। তালিব নেতাদের মতে এগুলি যুদ্ধবাজ, গ্যাংস্টার ও পুরনো শাসকদের সংস্কৃতি। ইয়াকুবের মতে, ‘এসব অনুকরণ করলে ইসলামের নিয়ম মানা সম্ভব হবে না।’