ভোট পরবর্তী হিংসা সংক্রান্ত মানবাধিকার রিপোর্ট কতটা সত্য? কেন্দ্রকে নোটিস সুপ্রিম কোর্টের
বাংলায় ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’ (West Bengal Post poll violence) মামলায় মঙ্গলবার কেন্দ্রকে নোটিস পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট। এদিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিনীত সরণ ও বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসুর ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। এই মামলায় গত শুনানিতেই এই ঘটনায় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল।
আদালতে কপিল জানিয়েছিলেন, প্রচুর ভুয়ো রিপোর্ট দায়ের হয়েছে কমিশনে। এমনকী, এমন ব্যক্তির খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে, বাস্তবে যিনি জীবিত। এছাড়া কমিশনের তিন সদস্যের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল। সুপ্রিম কোর্ট নোটিস পাঠানোয় বিষয়টি অস্বস্তিকর হয়ে উঠল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে কড়া মন্তব্য ও তথ্য সত্যনিষ্ঠ এবং যুক্তিসংগত সেটি প্রমাণ করার, দায় এসে পড়ল কেন্দ্রের কোর্টে।
এদিনের শুনানিতে আদালতে তথ্য-প্রমাণ পেশ করেন সিব্বল। তাঁর দাবি, রাজ্যে ‘হিংসা’-র ঘটনা কেউ অস্বীকার করছে না। তবে যে সময়ে হিংসার উল্লেখ করা হয়েছে, সেই সময় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে ছিল নির্বাচন কমিশন। কারণ ২ মে নির্বাচনের ফল প্রকাশ হলেও, মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শপথ নেন ৫ মে। এই সময়ের মধ্যে বিভিন্ন ‘হিংসা’-র অভিযোগ উঠছে। তাছাড়া মানবাধিকার কমিশনের যে রিপোর্টকে ভিত্তি করে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট, তার কোনও কপি রাজ্যকে না দেওয়ায়, তদন্তে সমস্যা তৈরি হওয়ার কথাও উল্লেখ করেন রাজ্যের আইনজীবী সিব্বল। উদাহরণ হিসাবে টেনে আনেন বিভিন্ন ধর্ষণ প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ধর্ষিতাদের পরিচয় না জানালে সঠিক তদন্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।
রাজ্যের আইনজীবীর এই সওয়ালের প্রেক্ষিতে কেন্দ্র, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং নির্বাচন কমিশনকে নোটিস দেয় সুপ্রিম কোর্টে। মামলার পরবর্তী শুনানি ৭ অক্টোবর। তার আগে হলফনামা দাখিল করে আদালতে নিজেদের বক্তব্য পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আইনজীবীদের ব্যাখ্যা, মানবাধিকার কমিশনের কমিটির নিরপেক্ষতা, রিপোর্টের যৌক্তিকতা নিয়ে রাজ্যের দাবিসমূহে কেন্দ্র, মানবাধিকার কমিশন ও নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য জানতে চেয়েই নোটিস দিয়েছে শীর্ষ আদালত। উল্লেখ্য, রাজ্যে ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’ সংক্রান্ত মামলায় খুন ও ধর্ষণের ক্ষেত্রে সিবিআই ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ। এই রায়ের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য।