দীঘা- মন্দারমণিতে পর্যটকের ঢল, খুশি ব্যবসায়ীরা
পুজোর ছুটিতে সোমবার থেকেই দীঘায় পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়ছে। মহাষষ্ঠীর দুপুর থেকেই সৈকত সুন্দরী দীঘায় পর্যটকদের ঢল নামতে শুরু করে। আজ, মহাসপ্তমী থেকে ভিড় আরও কয়েকগুণ বাড়বে বলে হোটেল মালিকরা জানাচ্ছেন। মহাসপ্তমী থেকেই টানা তিনদিন দীঘা ও মন্দারমণির অনেক হোটেলে একশো শতাংশ রুম বুকিং হয়ে গিয়েছে। ষষ্ঠীর দুপুরে যে ভিড়ের আভাস দিচ্ছে তাতে মহাসপ্তমী ও মহাষ্টমীতে দীঘা হাউসফুল হবে বলে নিশ্চিত হোটেল মালিকরা।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কায় দোলাচলে অনেকেই পুজোর ছুটিতে ঘরবন্দি অবস্থায় কাটাতে চেয়েছিলেন। দীঘা, শঙ্করপুর, তাজপুর ও মন্দারমণির হোটেল মালিকরাও গতবছরের মতো এবার খুব একটা লক্ষ্মীলাভের সম্ভাবনার কথা ভাবেননি। কিন্তু, তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা সেভাবে নেই বলে কেন্দ্রীয় সরকার জানানোর পর চিত্রটা বদলাতে শুরু করে। পুজোর ছুটিতে বুকিংয়ের চাহিদা বাড়তে থাকে। অক্টোবর মাসের শুরু থেকেই লাফিয়ে লাফিয়ে বুকিং বেড়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই সেটা ৮০শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে। বেশকিছু হোটেলে একশো শতাংশ রুম বুক। কারও কারও আবার অর্ধেক বুক হয়েছে।
সোমবার ওল্ড দীঘার বিশ্ববাংলা ঘাট, নিউ দীঘার ক্ষণিকা ঘাট, হলিডে হোম ঘাট এবং মেরিনা ঘাটে পর্যটক ভিড়ে থিক থিক করছিল। সি-বিচ বরাবর বেলুন, আইসক্রিম প্রভৃতি নিয়ে হকারদেরও ভিড় লক্ষ্য করা যায়। প্রতিটি ঘাটেই সমুদ্রস্নান করার জন্য ঝাঁকে ঝাঁকে পর্যটক নামেন। পুজোর ছুটির ভিড়ে যাতে সংক্রমণ লাগামহীনভাবে বেড়ে না যায় সেজন্য হোটেল মালিকদের নিয়ে আগাম মিটিং করে সতর্ক করে দিয়েছে প্রশাসন। পুজোর ছুটির সময়ে করোনাবিধি কতটা মানা হচ্ছে তা যাচাই করতে টাস্ক ফোর্স নজরদারি চালাবে বলে রামনগর-১ ব্লকের বিডিও বিষ্ণুপদ রায় জানিয়েছেন। টানা প্রায় দু’বছর ধরে করোনা আতঙ্কে বেশিরভাগ মানুষজন বাড়ি এবং কর্মস্থলের মধ্যেই নিজেদের আবদ্ধ রেখেছেন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বিশেষভাবে এদিক-ওদিক করেননি। মনের খোরাক মেটানোর সুযোগ সেভাবে আসেনি। করোনার পর পর দু’টি ঢেউ বহু মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। মহামারী পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে মানুষজন বিনোদনের জায়গায় কাটছাঁট করতে বাধ্য হয়েছেন। এখন পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। অনেকেই ভ্যাকসিনের ডবল ডোজ পেয়ে গিয়েছেন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় নভেম্বর মাসের মধ্যেই একশো শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর। পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হতেই পুজোর ছুটিতে তাই দীঘায় বেড়াতে যাওয়া পর্যটক সংখ্যা অনেকটাই বাড়ছে। পর্যটক বাড়তেই ওল্ড দীঘা এবং নিউ দীঘার বিভিন্ন ঘাটে পুলিস এবং সিভিল ডিফেন্স ভলান্টিয়ারের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পর্যটকদের ভিড়ে দীঘা যেন আবারও পুরনো ছন্দ ফিরে পেয়েছে।