রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

নিষিদ্ধ বাজি – হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে ব্যবসায়ীরা

October 31, 2021 | 2 min read

রাজ্যে এবার সব ধরনের বাজিই নিষিদ্ধ করেছে হাইকোর্ট। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট এই রায় দিয়েছে। হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল রাজ্যের বাজি ব্যবসায়ী ও প্রস্তুতকারকদের একাধিক সংগঠন। সোমবারই সেই মামলার শুনানি হতে পারে বলে দাবি করেছেন আবেদনকারীরা। কিছুদিন আগে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এক নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছিল, এবার দীপাবলি, ছটপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো থেকে শুরু করে বড়দিন, ইংরেজি নতুন বছরের উদযাপনেও একমাত্র ‘গ্রিন’ বা পরিবেশবান্ধব আতসবাজি পোড়ানো যাবে। তার জন্য নির্দিষ্ট সময়ও বেঁধে দেয় পর্ষদ। কিছু প্রশ্ন তুললেও সেই নির্দেশিকা মেনে চলার কথাই জানিয়েছিলেন বাজি ব্যবসায়ী ও প্রস্তুতকারকরা। কিন্তু পুরো প্রেক্ষাপট বদলে যায় শুক্রবার হাইকোর্টের রায়ের পর। ব্যবসায়ী ও প্রস্তুতকারকদের দাবি, এই রায়ের পর বাজি শিল্পের সঙ্গে জড়িত রাজ্যের কয়েক লক্ষ মানুষ পথে বসতে চলেছেন। এতদিন ধরে যে বাজি তৈরি করা হয়েছে, তার মধ্যে ‘গ্রিন’ বাজিও রয়েছে। সবই এখন পড়ে পড়ে নষ্ট হবে। সেক্ষেত্রে দেনার দায়ে অসহায় অবস্থা হবে ব্যবসায়ী, নির্মাতাদের। তাই এর সুরাহা চেয়ে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে দাবি তাঁদের। 


তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে হাইকোর্টের এই রায়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গিয়েছে। অনেকেই করোনা পরিস্থিতিতে এই রায়কে স্বাগত জানালেও কেউ কেউ এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষের সর্বনাশের আশঙ্কা করছেন। দূষণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অন্যান্য দিকে গুরুত্ব না দিয়ে কেবল দীপাবলির বাজির উপরেই কেন রোষ, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। আবার বিভিন্ন পরিবেশপ্রেমী সংগঠন হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়ে তা যথাযথভাবে কার্যকর করার দাবি জানিয়েছে পুলিস প্রশাসনের কাছে। আদালতের নির্দেশ ঠিকঠাক মানা হচ্ছে কি না, তারাও তাতে নজরদারি চালাবে বলে জানিয়েছে। 


বারুইপুরের চম্পাহাটির অন্যতম এক বাজি প্রস্তুতকারক সংস্থার কর্তা অর্জুন মণ্ডল বলেন, আমরা ১১ মাস ধরে বাজি বানাই এই এক-দু’দিন বিক্রির জন্য। সমস্ত কাঁচামাল কিনতে হয়েছে সরকারকে জিএসটি দিয়ে। বৈধভাবে ব্যবসা করছি বলে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণও মিলেছে। এখন সব বাজিকেই নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করায় আমরা এবং আমাদের শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত লক্ষাধিক মানুষ পথে বসবেন। জানি না, কীভাবে এই সঙ্কট আমরা কাটিয়ে উঠতে পারব। যে ‘স্টক’ আমাদের এখনই রয়েছে, তার কী হবে, সে ব্যাপারে রাজ্য সরকার কিছু উদ্যোগ নিক। তাছাড়া আমরা বাঁচব না। আইনজীবী তথা পশ্চিমবঙ্গ বাজি শিল্প উন্নয়ন সমিতির সাধারণ সম্পাদক শুভঙ্কর মান্না বলেন, হাইকোর্টের রায়কে সম্মান জানিয়ে আমরা তা পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছি সুপ্রিম কোর্টে। সোমবার শুনানি রয়েছে। সেদিকেই তাকিয়ে আছি আমরা। আমরা কিন্তু ‘গ্রিন’ বাজির ব্যবসা করতেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। দীপাবলি মিটে গেলে এ নিয়ে আমরা রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের দ্বারস্থ হব। এত প্রাচীন একটি শিল্প তো এভাবে উঠে যেতে পারে না। আমাদের দাবি, সমস্ত নিয়ম মেনে এ রাজ্যে ‘গ্রিন’ বাজি উৎপাদনের উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তুলতে সহায়তা দিক সরকার। তবে এবার আমাদের ‘স্টক’ নষ্ট হয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় দেখছি না। তার জন্যও সরকার কিছু ভাবলে বলে আশা রাখি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#supreme court, #fire crackers, #crackers, #kalipujo 2021

আরো দেখুন