এক মাসে ৫০০ কোটি জিএসটি আদায় বঙ্গে
অবশেষে অর্থনীতি, বাণিজ্য এবং আর্থিক লেনদেনের মন্দা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্পষ্ট আভাস মিলতে শুরু করেছে। প্রত্যাশা ছাপিয়ে যা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিকে। বিশেষত চলতি উৎসব মরশুমে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, অক্টোবর মাসে জিএসটি আদায়ের পরিমাণ এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। বাংলায় সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় অক্টোবর মাসে জিএসটি আদায় বেড়েছে ৫০০ কোটি টাকার বেশি। আর দেশজুড়ে জিএসটি আদায় হয়েছে ১ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। ২০১৭ সালে জিএসটি ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর থেকে এত বেশি জিএসটি সংগ্রহ হয়েছে মাত্র একবারই। গত এপ্রিল মাসে। ওই মাসে জিএসটি আদায় হয়েছিল রেকর্ড পরিমাণ। ১ লক্ষ ৪১ হাজার কোটি টাকা। তার আগে অথবা পরে আর কখনও ১ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকার সীমা অতিক্রম করতে পারেনি জিএসটি আদায়।
সবে শেষ হওয়া অক্টোবর মাসে আবার দেখা গেল আশার আলো। সেইসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের জন্যও সুসংবাদ। দুর্গাপুজোর মাসে বিপুল পরিমাণ জিএসটি আদায় হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে জিএসটি আদায় হয়েছিল ৩৭৭৮ কোটি টাকা। এক মাসের মধ্যেই সেই আদায় বেড়েছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। হয়েছে ৪২৩৯ কোটি টাকা। বিগত বছরের অক্টোবর মাসে বাংলায় জিএসটি আদায় হয়েছিল ৩৭৩৮ কোটি টাকা। অক্টোবর মাসের এই জিএসটি আদায় বৃদ্ধির প্রবণতা থেকে সরকারের অন্দরে প্রত্যাশার সঞ্চার হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, নভেম্বর মাসে রেকর্ড জিএসটি সংগ্রহ হবে। নভেম্বর মাসে দেওয়ালি, ভাইফোঁটা, ছটপুজো। অক্টোবর মাসের গরিপ্রকৃতি থেকেই স্পষ্ট, উৎসবের মরশুমে স্বাভাবিক বাণিজ্য হওয়ার সবরকম ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে।
সবথেকে ভরসার বার্তা হল, করোনার তৃতীয় ঢেউ যেভাবে আছড়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল, সেটি এখনও পর্যন্ত দেখা যায়নি। চারটি রাজ্যে করোনার হার ঊর্ধমুখী। কিন্তু যেভাবে শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল, এখনও সেই মাত্রা স্পর্শ করেনি। তাই নভেম্বর মাসে যদি এভাবেই স্তিমিত সংক্রমণের গতিপ্রকৃতি বজায় থাকে, তাহলে নভেম্বর মাসের আদায়ের পরিমাণ দেড় লক্ষ কোটি টাকা ছাপিয়ে যাবে বলেই আশা করছে অর্থমন্ত্রক। সেক্ষেত্রে তা হবে রেকর্ড।
অর্থমন্ত্রকের আশা, দ্বিতীয় সুসংবাদটি পাওয়া যাবে শীঘ্রই। সেটি হল চলতি আর্থিক বর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের জিডিপি বৃদ্ধির হার। শীঘ্রই প্রকাশিত হবে ওই রিপোর্ট। কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রক অর্থনীতির এই ইতিবাচক আভাস পেয়েই জাতীয় মাস্টার প্ল্যানের রূপরেখা কার্যকর করতে ঝাঁপিয়েছে। পরিকাঠামো উন্নয়নকে সফল করার জন্যই এই প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছিল। সোমবার এই প্রকল্পের রূপায়ণের জন্য গঠন করা হয়েছে সচিবস্তরের উচ্চপর্যায়ের কমিটি। ১৭টি মন্ত্রকের সচিবদের নিয়ে গঠিত হয়েছে ওই কমিটি। ক্যাবিনেট সচিবের নেতৃত্বে কমিটিতে থাকছেন পরিকাঠামো ক্ষেত্রে যুক্ত প্রতিটি মন্ত্রক, যেমন রেল, সড়ক পরিবহণ, কয়লা, বিদ্যুৎ, সার, ইস্পাত, পর্যটন, কৃষি, অর্থ ইত্যাদি।