মণিপুরে জঙ্গি হানায় শহিদের কফিনবন্দি দেহ ফিরল গ্রামে, গান স্যালুট শেষ শ্রদ্ধা জানানো হল
ফোনের ওপার থেকে মেয়েকে কথা দিয়েছিলেন, খুব তাড়াতাড়ি জন্মদিনের উপহার নিয়ে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু কথা রাখা হল না। মণিপুরে জঙ্গি হানায় (Terror Attack in Manipur) শহিদ শ্যামল দাসের কফিনবন্দি দেহ সোমবার ফিরল গ্রামে। সহকর্মীদের কাঁধে চেপেই মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) খড়গ্রাম থানার কীর্তিপুর গ্রামে এলেন শহিদ শ্যামল। বাড়ির ছেলেকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ল পরিবার। গান স্যালুটে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হল শহিদ জওয়ানকে।
এদিন সকাল থেকে কীর্তিপুর গ্রামের খেলার মাঠে শ্যামল দাসের মরদেহ রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেনা কনভয়ে মৃতদেহ পৌঁছতেই গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া নামে। মিছিল করে গ্রামের ছেলের নামে ‘অমর রহে’ ধ্বনি তুলে এগিয়ে নিয়ে যান গ্রামবাসীরা। খেলার মাঠে আগেই উপস্থিত ছিলেন শহিদের স্ত্রী, মেয়ে, বাবা-মা-সহ গোটা পরিবার। ছিলেন প্রশাসনের আধিকারিকরাও। পরিবার তথা গ্রামের সকলে সেখানেই শেষ শ্রদ্ধা জানান দেশের বীর সেনাকে। এরপর মরদেহ বাড়িতে কিছুক্ষণ রাখার পর গান স্যালুট দিয়ে শেষ বিদায় জানানো হয় শ্যামল দাসকে। কফিনে হাত রেখে স্বামীকে শেষবারের মতো যেন স্পর্শ করলেন শোকাহত স্ত্রী রূপা দাস।
গত শনিবার মণিপুরে জঙ্গি হামলায় প্রাণ গিয়েছে সেনাকর্তা-সহ মোট সাতজনের। সেই ঘটনাই কেড়ে নিল একটা তরতাজা প্রাণ। ছেলের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরই ধীরেন দাস বলছিলেন, বাড়ির ছোট ছেলে কিছুদিন আগেই প্রাণ হারিয়েছেন। বড় ছেলে শ্যামল দাস দেশরক্ষায় অসম রাইফেল কর্মরত ছিলেন মণিপুরে। ২০০৯-এর নভেম্বরে তিনি যোগ দেন অসম রাইফেলসে। জঙ্গিদের সঙ্গে বহুবার মোকাবিলা হয়েছে। যখনই বাড়ি ফিরতেন, সে সব গল্প শোনাতেন। কিন্তু এবার জঙ্গিদের হাতে সব শেষ হয়ে গেল।
স্ত্রী ও মেয়ের কাছে ফেরা হল না শ্যামলের। শেষবার মেয়ের জন্মদিনেই ফোনে কথা হয়েছিল। বলেছিলেন, উপহার নিয়ে ফিরবেন। তবে দেশরক্ষার তাগিদে সে কথা আর রাখতে পারলেন না। সরকারের কাছে তাই পরিবারের অনুরোধ, যেন দোষীরা কঠোর শাস্তি পায়।